তিনি বলেন, উন্নয়ন সবার জন্য, কাউকে বাদ দিয়ে নয়। উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় দেশের সকল জনগোষ্ঠীকে তার সামাজিক, নৃতাত্ত্বিক, অন্য যেকোনো পরিচয়ের ঊর্ধ্বে থেকে, সকল মানুষের সমান অধিকার বিবেচনায় নিয়ে উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করতে হবে। উন্নয়ন টেকসই রাখতে হলে এর সুফল সবার কাছে পৌঁছে দিতে হবে। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার ব্যাখ্যায় পরিষ্কারভাবে বলা আছে, কাউকে পিছিয়ে রাখা যাবে না উন্নয়ন প্রক্রিয়া থেকে। আমরা যদি এখন থেকে এটা নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে যে অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে আমাদের তা কতটুকু ধরে রাখা যাবে এবং বাস্তবে দেশ ও মানুষ তার সুফল কতটুকু পাবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকেই যায়।
তিনি আরও বলেন, অর্জিত অগ্রগতি কতটুকু টেকসই হবে বা ধরে রাখা যাবে সবকিছু নির্ভর করবে কতটুকু সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাদিহিতা নিশ্চিত করা হয়। তবে অনিয়ম-দুর্নীতি, সুশাসনের ঘাটতি সত্ত্বেও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। তার মানে এই নয় অনিয়ম-দুর্নীতি ও সুশাসনের ঘাটতি অব্যাহত রেখে উন্নয়ন টেকসই করা যাবে। উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করতে হলে অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধ, স্বচ্ছতা-জবাদিহিতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া কোনো কিছুই হয় না। উন্নয়নের বহুমুখী সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা দরকার। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণও রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া সম্ভব নয়। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্যও রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি। আমাদের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হয়, একইসঙ্গে এই অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার জন্যও তাদের ওপর অনেক বেশি দায়িত্ব থাকে।
তিনি বলেন, উন্নয়ন-অগ্রগতি নিশ্চিতের পূর্বশর্ত হচ্ছে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। এসব বাদ দিয়ে উন্নয়ন টেকসই ও ত্বরান্বিত করার কথা ভাবা হলে তা অবাস্তব কিছু হবে। আমরা আগে উন্নয়ন করব, পরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করব, আগে উন্নয়ন করব পরে মানুষের অধিকার নিশ্চিত করবÑ এমন চিন্তা থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। কারণ উন্নয়ন সহযাত্রী হচ্ছে সুশাসন, দুর্নীতিপ্রতিরোধ, সাধারণ মানুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। একইসঙ্গে মানুষের বাকস্বাধীনতা বা মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে অবশ্যই গুরুত্ব দিব। এটা বাদ দিয়ে সুশাসন, সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত সম্ভব নয়। অনিয়ম-দুর্নীতিও প্রতিরোধ করা যাবে না বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক।
আপনার মতামত লিখুন :