শিরোনাম
◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ১৮ মার্চ, ২০১৮, ০৪:১০ সকাল
আপডেট : ১৮ মার্চ, ২০১৮, ০৪:১০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সবকিছু নষ্টদের অধিকারে চলে গেছে

প্রভাষ আমিন : ড. আতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল অদক্ষতার আর আবুল বারকাতের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ অসততার। নিয়ম অনুযায়ী জনতা ব্যাংক মোট মূলধনের ২৫ শতাংশ ঋণ দিতে পারে। কিন্তু অ্যাননটেক্স গ্রুপকেই দেওয়া হয়েছে মূলধনের দ্বিগুণ ঋণ। তার মানে গাড়ি চোর ইউনুছ বাদলকে আবুল বারকাতের নেতৃত্বধীন জনতা ব্যাংক নির্ধারিত সীমার আটগুণ ঋণ দিয়েছে। এ ব্যাপারে আবুল বারকাত কোনও ব্যাখ্যা দেননি। তবে ব্যাখ্যা দেওয়ারও কিছু নেই। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, একাধিক মন্ত্রী, ব্যাংক কর্মকর্তা ও ব্যাংকের সিবিএ নেতাদের সুপারিশে ইউনুছ বাদলকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক কেলেঙ্কারির যুক্তি হিসেবে এমনও বলা হচ্ছে, অ্যাননটেক্সের ঋণ তো এখনও খেলাপি হয়নি, নিয়মিত পরিশোধ করছে। কিন্তু খেলাপি হয়নি বলেই খেলাপি হবে না, তার গ্যারান্টি কী?

আর গ্যারান্টি থাকলেই কি কোনও গ্রুপকে নির্ধারিত সীমার আটগুণ ঋণ দিতে হবে? আবুল বারকাত কোনও ব্যাখ্যা দেননি বটে। কিন্তু আমার ধারণা, খুব ভালো ব্যাখ্যা নেই বলেই তিনি ব্যাখ্যা দিচ্ছেন না। তিনি চেয়ারম্যান থাকার সময় একজন গাড়ি চোরকে নিয়ম ভেঙে ৫ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছিল, এটা জলের মতো পরিষ্কার। তিনি যত ব্যাখ্যাই দেন,এই সত্য উল্টে যাবে না। যদি মন্ত্রী বা ব্যাংক কর্মকর্তা বা সিবিএ নেতাদের সুপারিশেও এ ঋণ দেওয়া হয়; তাও আবুল বারকাত দায় এড়াতে পারবেন না।

অন্যায় সুপারিশ যদি এড়াতে না-ই পারেন, তাহলে তিনি চেয়ারম্যান পদে থাকলেন কেন? তখনই সংবাদ সম্মেলন করে এই তদবিরবাজদের নাম প্রকাশ করেননি কেন? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক হয়েও যদি তিনি তদবিরবাজদের মুখের ওপর না বলতে পারেন, তাহলে আর ভরসার জায়গা কোথায়? তবে নিছক তদবিরের চাপে পড়েই আবুল বারকাত ৫ হাজার ৫০৪ কোটি ঋণ দিয়ে দিয়েছেন, এটা বিশ্বাস করার যৌক্তিক কারণ নেই। লাখ টাকা বা নিছক কোটি টাকা হলেও একটা কথা ছিল। কিন্তু লাখ কোটিও নয়, এটা হাজার কোটি টাকার গল্প। আবুল বারকাত সরল মনে কাউকে ৫ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা দিয়ে দিয়েছেন, এটা আমি বিশ্বাস করি না। আপনারা কেউ করবেন কিনা সেটা আপনাদের ব্যাপার।

অনিয়ম করে ৫ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা দেওয়ার সঙ্গে আবুল বারকাতের কোনও আর্থিক সংযোগ ছিল না, এটা বিশ্বাস করতে হলে, আমাকে মানতে হবে তিনি চরম অদক্ষ এবং অথর্ব। সেটা মনে হয় না। বরং আবুল বারকাত অনেক চতুর। ব্যাংকিং খাতের এই লুটপাটের পুরো ঘটনায় আমার সবচেয়ে বড় বেদনার জায়গা এটিই। হলমার্ক, ডেসটিনি, বিসমিল্লাহ, অ্যাননটেক্স বা বাচ্চু, বাদল, মখা নিয়ে আমার অত মাথাব্যথা নেই। এটা যেন আমরা মেনেই নিয়েছি। কিন্তু আবুল বারকাতের মতো মানুষের ব্যাপারে যখন আর্থিক অসততার বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ ওঠে, বেদনাটা অনেক বেশি হয়।

কারণ, আবুল বারকাত আমাদের কাছে অনেক সম্মানের আসনে ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান, লেখালেখি করেন, গবেষণা করেন, বই লেখেন, জাতির বিবেকের মতো আচরণ করেন। কিন্তু বিবেকের এই পচন, এই পতনই আমাদের বেদনার্ত করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও যদি এমন অদক্ষ বা অসৎ হন, তাহলে আমরা যাবো কোথায়, ভরসা রাখবো কার ওপর? অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই আরেক শিক্ষক ড. হুমায়ুন আজাদ অনেক আগেই বলেছিলেন, সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে। তার সেই ভবিষ্যদ্বাণীই এখন সত্য প্রমাণিত হচ্ছে। সবকিছু নষ্টদের অধিকারে চলে গেছে।

লেখক : হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়