শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ১৭ মার্চ, ২০১৮, ০৬:০৮ সকাল
আপডেট : ১৭ মার্চ, ২০১৮, ০৬:০৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘রোহিঙ্গা মুসলমানদের গ্রামে বৌদ্ধদের পুনর্বাসন করা হয়েছে’

রবিন আকরাম : হত্যা, নির্যাতন ও নিপীড়নের মাধ্যমে রোহিঙ্গা মুসলিমদের মিয়ানমারের রাখাইন থেকে ধারাবাহিকভাবে বিতাড়িত করার পর সেখানে এরই মধ্যে পুনর্বাসন করা হয়েছে বৌদ্ধ আদিবাসীদের। রোহিঙ্গাদের পুড়িয়ে দেওয়া বাড়িঘরগুলো মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে তাদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ছোট ছোট ঘর।

রাখাইনের কয়েকটি গ্রাম সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করে বার্তা সংস্থাটি গতকাল (শুক্রবার) একটি বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে দেখানো হয়, রাখাইনের উত্তরাঞ্চলের যেসব গ্রামে এক সময় মুসলিম অধ্যুষিত ছিল সেসব গ্রামে বৌদ্ধ রাখাইন আদিবাসীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। গ্রামের প্রবেশ পথে বাঁশের মাথায় টানিয়ে রাখা হয়েছে বৌদ্ধদের পতাকা। ছোট ছোট টিনের এসব দো-চালা ঘরে বৌদ্ধ আদিবাসীদেরপুনর্বাসন করা হয়েছে।

এএফপি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা যাতে আর সেখানে বসতি গড়তে না পারে, সেই লক্ষ্যে রাখাইনের বিভিন্ন গ্রামে নতুন করে বৌদ্ধদের পুনর্বাসনের জন্য এসব আবাসনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে মিয়ানমার সরকার। এই গ্রামগুলো ছিল রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর।

ফরাসি বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, মিয়ানমার সেনারা গ্রামগুলো বুলডোজার চালিয়ে মিশিয়ে দিয়েছে গ্রামগুলো। মুছে ফেলা হয়েছে রোহিঙ্গাদের পুড়ে-যাওয়া বাড়ি-ঘরের ক্ষতচিহ্ন। এসব গ্রাম নতুন করে চাষাবাদের উপযোগী করে তুলছে তারা। দক্ষিণাঞ্চলের তুলনামূলক স্থিতিশীল ও দরিদ্র এলাকা থেকে রাখাইন জনগোষ্ঠীরা এখন সেখানে আসতে শুরু করেছে। রাখাইনে নতুন বসতি গড়া বৌদ্ধরাও চান না রোহিঙ্গারা ফিরে যাক।

রাখাইন রাজ্যের গৃহবধূ সিত সান এইন এএফপিকে বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা মুসলমানদের ভয় পাই। আমরা চাই না তারা আর ফিরে আসুক। এখন তারা এখানে থাকবে না। আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে বসবাসের সুযোগ পেয়েছি আমরা।’

এক সময়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ রোহিঙ্গা মুসলিমদের এলাকায় এখন দেশটির একটি দাতাগোষ্ঠী বৌদ্ধদের স্থায়ী বসতি গড়ার জন্যে নানান পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। রোহিঙ্গাদের অনুপস্থিতিতে সেখানে সরকারি, বেসরকারি ও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজও চলছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, রোহিঙ্গারা রাখাইনে ফিরে যেতে পারলেও ফেলে আসা নিজ ভূখণ্ড কি ফিরে পাবেন? নাকি, কোনো নো-ম্যান্স ল্যান্ডে জায়গা হবে তাদের, সেটাই দেখার বিষয়।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে গত বছরের নভেম্বরে দেশ দু’টির মধ্যে সমঝোতা হয়। এ অনুযায়ী দুই মাসের মধ্যেই প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা এখনও শুরু হয়নি। উল্টো মিয়ানমারে সহিংসতার শিকার হয়ে আশ্রয়ের খোঁজে বাংলাদেশে আসা অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জাতিসংঘসহ দেশি বিদেশি কূটনীতিক ও বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে না নিতেই নানা প্রশ্ন ও অজুহাত তুলছেন তারা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বলছে, এখন জ্বলছে রাখাইন। আর মিয়ানমার সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সীমান্তের পাশাপাশি রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে মাইন পুঁতছে। নির্যাতন করছে সাধারণ মানুষদের।

গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইন রাজ্যে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। যাকে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র জাতিগত নিধনযজ্ঞ বলে অভিহিত করেছে; যা আন্তর্জাতিক আইনে মানবতাবিরোধী অপরাধ। এরপর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৭ লাখের মতো রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া আগে থেকেই পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। সূত্র: পার্সটুডে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়