শিরোনাম
◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত ◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

প্রকাশিত : ১৭ মার্চ, ২০১৮, ১২:৫১ দুপুর
আপডেট : ১৭ মার্চ, ২০১৮, ১২:৫১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শর্ত সাপেক্ষে বিএনপিকে ছাড় দেবে আওয়ামী লীগ

শাকিল : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আগের মতো কঠোর অবস্থানে থাকলেও নির্বাচনটি অংশগ্রহণমূলক করার স্বার্থে কিছু শর্ত সাপেক্ষে বিএনপিকে ছাড় দিতে রাজি আওয়ামী লীগ। এর জন্য ২০০৯ সাল থেকে টানা দু’মেয়াদে ক্ষমতাসীন দলটি চায়, বিএনপিকে বিগত সময়র মতো আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য পরিহার করতে হবে এবং স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধানের মধ্যে সমঝোতার সুযোগ থাকলে তাতে ছাড় দেয়ার মানসিকতা রয়েছে আওয়ামী লীগের। দলটির নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের মতে, আওয়ামী লীগ ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায় না। তারাও চায় আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিক। তবে এ ক্ষেত্রে সমঝোতা বা সমাধান খুঁজতে হবে সংবিধানের মধ্য থেকেই। সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সংবিধান মেনে যথাসময়ে ও যথানিয়মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন নিয়ে অন্য কোনো ধরনের চিন্তা করে লাভ নেই। আমরা সব দলের অংশগ্রহণে একটি ভালো নির্বাচন করতে চাই। আমরা ফাঁকা মাঠে গোল করতে চাই না। আমরা ভালো খেলে আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করে হ্যাটট্রিক করতে চাই।

আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে চায় দলটি। দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলের অন্য অনেক নেতাও বিভিন্ন সময় তাদের এমন মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। তবে তা কোনোভাবেই সংবিধানের বাইরে গিয়ে নয়। শেখ হাসিনাকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান বর্তমান সংবিধান মেনে নিলে অন্য বিষয়গুলো নিয়ে সমাঝোতার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী মহল। তবে একই সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ ত্যাগ করা এবং বিগত সময়ের মতো আন্দোলনের নামে ‘নৈরাজ্যের’ কর্মসূচিতে বিএনপি না ফিরুক সেটাও চায় আওয়ামী লীগ।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একাধিক সদস্য বলেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনি ও স্বাধীনতাবিরোধীদের পৃষ্ঠপোষকতার যে পথ রচনা করেছিলেন, বিএনপি এখনো সেই পথ ধরেই হাঁটছে। তারা এখনো স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে মদদ দেয়। তর পরও এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বিএনপি একটা বড় রাজনৈতিক দল, তাদের জনসমর্থনও কম নয়। তাছাড়া বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের জন্য বিএনপির চাইতে ‘যুৎসই’ বিরোধীপক্ষ আপাতত নেই। তাই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হলেও আমরা সবসময় চাই বিএনপি রাজনীতির মাঠে থাকুক, সুষ্ঠু ও সঠিক পথে হাঁটুক।

সম্প্রতি অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারী সাম্প্রদায়িক শক্তির পৃষ্ঠপোষক বিএনপি, এমন অভিযোগ করলেও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলটিকে সতর্ক করে এই পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ না করলে জনগণ ভোটে তার জবাব দেবে।

এদিকে আগামী নির্বাচনকে দেশ ও দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আখ্যা দিয়ে আগেভাগেই প্রস্তুতি শুরু করে আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনে জয়ের এক সপ্তাহ পর শপথ নেয় বর্তমান মন্ত্রিসভা। সংবিধান অনুযায়ী সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। এই হিসেবে ২০১৮ সালের ১২ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ১১ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে।

নির্বাচনে বিজয়ের মধ্য দিয়ে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসাতে কোমর বেঁধে নেমেছেন দলের কেন্দ্রীয় থেকে তৃণমূল, সব পর্যায়ের নেতারা। ইতিমধ্যে সিলেট, বরিশাল, রাজধানী ও খুলনায় জনসভা করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব জনসভাগুলোতে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারো নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানান তিনি। এ ছাড়া আগামী ২১ মার্চ চট্টগ্রাম, ২৯ মার্চ ঠাকুরগাঁও, ১ এপ্রিল চাঁদপুর এবং ৫ এপ্রিল ময়মনসিংহে জনসভা করবেন শেখ হাসিনা।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা শুধু জনপ্রিয়ই নয়, তিনি বিশ্বে সততার দিক দিয়ে তৃতীয়। আমরা এখন আগামী নির্বাচন নিয়ে ভাবছি। সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়েই নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকেই ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনবে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী দল। আমরা আগে থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। আমরা চাই বিএনপিও নির্বাচনে আসুক। কিন্তু নির্বাচন সংবিধান মেনে যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধানের বাইরে যাবে না। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় আমাদের দেশেও সেভাবেই নির্বাচন হবে। এটা নিয়ে তো জল ঘোলা করার সুযোগ নেই। মানবকণ্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়