শিরোনাম
◈ মুগদায় ডিএসসিসির ময়লার গাড়ির ধাক্কায় কিশোর নিহত ◈ বাংলাদেশ-চীন সামরিক মহড়া মে মাসে, নজর রাখবে ভারত ◈ দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু: চুয়েটে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, যান চলাচল শুরু ◈ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক ভারত, চীন বা রাশিয়ার মাধ্যমে পরিচালিত নয়: মার্কিন কর্মকর্তা ◈ সিলেটে ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ২ ◈ থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ ◈ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় ◈ শিক্ষক নিয়োগ: ১৪ লাখ টাকায় চুক্তি, ঢাবি শিক্ষার্থীসহ গ্রেপ্তার ৫ ◈ বিদ্যুৎ-গ্যাস কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র ছাড়া ঋণ মিলবে না ◈ নতুন করে আরও ৭২ ঘণ্টার তাপ প্রবাহের সতর্কতা জারি

প্রকাশিত : ১৭ মার্চ, ২০১৮, ০৮:২৮ সকাল
আপডেট : ১৭ মার্চ, ২০১৮, ০৮:২৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চারবার মেয়াদ বাড়িয়েও ৮ বছরে অগ্রগতি ৩৪%

ডেস্ক রিপোর্ট : নারায়ণগঞ্জ সদরের সঙ্গে বন্দর উপজেলার সংযোগ ঘটাতে ২০১০ সালে শীতলক্ষ্যা নদীতে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। ওই বছরের নভেম্বরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদিত হয় তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি। পরের আট বছরে সেতুটির ব্যয় বেড়েছে দুই দফা, মেয়াদ বেড়েছে চারবার। অনুমোদনের সময় ২০১৩ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত মূল সেতুর কাজ এগিয়েছে মাত্র ৩৪ দশমিক ৫১ শতাংশ।

তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মিত হচ্ছে সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টের (এসএফডি) অর্থায়নে। নির্মাণকাজ দীর্ঘায়িত হওয়ার জন্য এসএফডি থেকে সময়মতো অর্থ না পাওয়াকে দায়ী করছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের তথ্যানুযায়ী, তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয় ২০১০ সালের ৯ নভেম্বর। অনুমোদনের সময় প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৩৭৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৬৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বাংলাদেশ সরকার ও ৩১১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা সৌদি ফান্ডের দেয়ার কথা ছিল। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০১০ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

এরপর ২০১৫ সালের জুনে প্রথম দফায় ব্যয় বাড়ানো হয়। ওই দফায় ১৬২ কোটি টাকা বাড়িয়ে ১ দশমিক ২৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৫৩৯ কোটি টাকা। একই সময়ে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় ২০১৭ সালের জুন ও তৃতীয় দফায় একই বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়।

সর্বশেষ চলতি বছরের জানুয়ারিতে সেতুটির ব্যয় ও মেয়াদ আরেক দফা বাড়িয়ে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) সংশোধন করা হয়। এ দফায় সেতুটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২৫৪ কোটি ৭ লাখ টাকা দেবে বাংলাদেশ সরকার। বাকি ৩৪৫ কোটি ২১ লাখ টাকা অর্থায়ন করবে সৌদি ফান্ড। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত।

জানা গেছে, তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু প্রকল্প ২০১০ সালে অনুমোদন পেলেও এর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় ২০১৫ সালে। এর দুই বছর পর ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেতুটি নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হয়। আর মূল সেতুর পাইলিং আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে।

নির্মাণে বিলম্বের জন্য সৌদি ফান্ড থেকে অর্থ বরাদ্দ পেতে দেরি হওয়াকে দায়ী করছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ফান্ড পেতে বিলম্ব হওয়ায় নির্মাণকাজ বার বার পিছিয়েছে। নির্মাণকাজ দীর্ঘায়িত হওয়ার পুরো দায় সৌদি ফান্ডের ওপর চাপিয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রকল্পটি ২০১৩ সালের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সৌদি ফান্ড অর্থায়ন শুরু করেছে চলতি বছর। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার তারা আমাদের সঙ্গে পুরোপুরি যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিল। বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে তাদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে। একই কারণে ভবিষ্যতে সেতুটির নির্মাণকাজ আরো পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।

তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু প্রকল্পে সৌদি আরব এখন পর্যন্ত কত টাকা ছাড় করেছে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি প্রকল্প পরিচালক শামসুল হক। তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, সৌদি আরব অর্থ দেয়া শুরু করেছে। তবে দেয়ার প্রক্রিয়াটা অনেক ধীরগতিতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ অর্থ এসেছে, তার আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য আমরা পাইনি। ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্টদের এ সম্পর্কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশা করছি, দুয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক হিসাব আমরা পাব।

দুই দফা ব্যয় বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রথম দফায় ব্যয় বাড়ানো হয়েছিল মূলত ভূমি অধিগ্রহণের কারণে। প্রথমে যে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল, সেখানে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য মাত্র ৮-১০ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। অধিগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি বরাদ্দের তুলনায় বেশি হওয়ায় প্রথম দফায় ব্যয় বাড়ানো হয়। দ্বিতীয় দফায় ব্যয় বাড়ানোর কারণ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। সেতুটির নির্মাণ ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছিল ২০১০ সালে। এখন ২০১৮ চলছে। এই আট বছরে নির্মাণসামগ্রীর দাম অনেকাংশে বেড়েছে। তাই আমি মনে করি, নির্মাণ ব্যয় আসলে বৃদ্ধি পায়নি, সময়ের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। সময়মতো টাকা পাওয়া গেলে ২০২১ সালের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

কাজের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে প্রকল্পের প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। এরপর থেকে পাইলের কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত মূল সেতুর কাজ ৩৪ দশমিক ৫১ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

চারলেনের তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুটি নির্মাণ করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিনো-হাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড। সেতুটি নির্মাণে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ৪৪৮ কোটি ৮৩ লাখ ৯১ হাজার টাকার চুক্তি করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। সেতুর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ২৯০ মিটার। সেতুটি নির্মাণে ১৪ দশমিক ৬৩ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে। বণিক বার্তা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়