জান্নাতুল ফেরদৌসী: গরমের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে শিশুদের খাওয়া-দাওয়ার প্রতি একটু বেশি যত্নশীল হতে হয়। কারণ গরমে শিশুদের খাবারের প্রতি আগ্রহ কম থাকে। গরমে শিশুদের দেখা দেয় বায়ু দূষিত বিভিন্ন রোগ। গরমে শিশুদের রুচি কমে যায় এতে শিশু প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হয়, মা-বাবাও দুশ্চিন্তায় পড়েন।
গরমে শিশুর খাদ্যতালিকায় হালকা, পুষ্টিকর, টাটকা এবং সহজপ্রাপ্য খাবার রাখতে হবে। সেটা হতে পারে নরম খিচুড়ি বা সবজির স্যুপ। তবে মাছ-মাংসও থাকতে পারে পরিমিতভাবে। শিশুদের বাড়িতে তৈরি খাবার খেতে দিতে হবে। বাইরের খাবার খেলে স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। সতেজ ও টাটকা খাবার শিশুদের বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।
গরমে শিশু যথেষ্ট বিশুদ্ধ পানি পান করছে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অতিরিক্ত ঠাণ্ডা ও গরম পানি শিশুর জন্য ক্ষতিকর।
শিশুকে মৌসুমি ফল বেশি খাওয়াতে হবে। বিভিন্ন ধরনের ফলের রসও দেওয়া যেতে পারে, তবে তা বাসায় তৈরি করা হতে হবে। বাজারে থেকে কেনা ফলের রস বা কোমর পানীয় শিশুদের খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন। এসময় তরমুজ, কলা, পাকা পেপেঁ ও বেলের রস খাওয়াতে পারেন।
শিশুদের তরল দুধ বেশি সময় রেখে খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন। বেশি সময় রাখা বানানো দুধের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। গরমের এই সময়টায় খাবার নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি থাকে। তাই শিশুকে খাবার দেওয়ার আগে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে নিতে ভুলবেন না, খাবার আদৌ ঠিক আছে কি না।
৬ মাসের কম বয়সী শিশুদের শুধু বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। মনে রাখবেন, ছয় মাসের কম বয়সের শিশুকে এ সময় আর কোনো খাবার দেওয়ার দরকার নেই, এমনকি পানিও না। শিশুকে বারবার বুকের দুধ দিতে হবে। এর মাধ্যমে শিশু তার সব প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেয়ে যাবে।
গরমের সময়ে মশা, মাছি, পিঁপড়া প্রভৃতি পোকামাকড়ের প্রকোপ দেখা দেয়। এগুলো আপনার শিশুর অসুস্থতার কারণ হতে পারে। ঘরকে এসব পোকামাকড় থেকে মুক্ত রাখতে কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন শিশু কোনোভাবেই এসব কীটনাশকের নাগাল না পায়। পোকামাকড় থেকে মুক্ত রাখার জন্য ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ফুলের টব বা অন্য কোথাও এমনকি বালতিতেও পানি জমতে দেওয়া যাবে না। কারণ এগুলো ডেঙ্গু রোগবাহী মশার বংশবৃদ্ধিতে সহায়ক। ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে। শিশুর বিছানা পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
গরমের এই দিনগুলোতে শিশুর সুস্থতার দিকে সব সময় নজর দিতে হবে। শিশুর যেকোনো শারীরিক সমস্যায় দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সূত্র: প্রথম আলো
আপনার মতামত লিখুন :