শিরোনাম
◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু

প্রকাশিত : ১৬ মার্চ, ২০১৮, ১০:২৮ দুপুর
আপডেট : ১৬ মার্চ, ২০১৮, ১০:২৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পানিশূন্য পদ্মা এখন মরা খাল

ডেস্ক রিপোর্ট : পদ্মা নদীর পানির প্রবাহ ধরে রাখতে চুক্তি অনুযায়ী পানি পাচ্ছে না বাংলাদেশ। পানি চুক্তির ২২তম বছরের ৭টি চক্র (সাইকেল) শেষ হলেও চুক্তি অনুযায়ী একবারও পানি পায়নি ভাটির এ দেশ। যৌথ নদী কমিশন'র ওয়েব সাইটে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত্ম ৭টি চক্রে পানি প্রাপ্তির যে চিত্র ফুটে উঠেছে, তার থেকেও বাস্ত্মব চিত্র ভয়াবহ। পানি নেই পদ্মায়। পানি শূন্য পদ্মা নদী এখন মরা খাল। পানির অভাবে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কাছে জেগে উঠেছে বিশাল বিশাল বালুচর। ব্রিজের অর্ধেকের বেশি গার্ডার এখন দাঁড়িয়ে আছে বালুচরের উপর। শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গা নদীর পানি ভাগাভাগির লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে ভারত সরকারের সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি পানি চুক্তি করে বাংলাদেশ।

চুক্তি অনুযায়ী ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ মে পর্যন্ত্ম সময়কে শুষ্ক মৌসুম হিসেবে অভিহিত করে প্রতিটি মাসকে তিনটি চক্রে ভাগ করা হয়েছে। কোন চক্রে বাংলাদেশ কি পরিমাণ পানি পাবে তাও চুক্তিতে উলেস্নখ রয়েছে। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী কখনই ন্যায্য হিস্যা পায়নি বাংলাদেশ।

যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) সূত্র জানায়, পানি বন্টন চুক্তির সংলগ্নি ২ এর ইন্ডিকেটিভ অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত্ম ৭টি চক্রে বাংলাদেশের পানি পাওয়ার কথা ছিল ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৬৩১ কিউসেক। এ সময়ে পানি পাওয়া গেছে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৫ কিউসেক। বাংলাদেশ কম পেয়েছে ৪২ হাজার ১৯৬ কিউসেক। এরমধ্যে জানুয়ারি মাসের প্রথম ১০ দিনের প্রথম চক্রে বাংলাদেশের পাওয়ার কথা ছিল ৬৭ হাজার ৫১৬ কিউসেক। এ সময় পাওয়া গেছে ৫৬ হাজার ৫৪ কিউসেক। এ হিসাবে ভারত বাংলাদেশকে প্রথম চক্রেই কম দিয়েছে ১১ হজার ৪৬২ কিউসেক।

চুক্তির ধারা অনুযায়ী ফারাক্কা পয়েন্টে ভারতকে ৪০ বছরের গড় পানিপ্রবাহ অর্থাৎ ১ লাখ ৭ হাজার ৫১৬ কিউসেক পানি প্রবাহ নিশ্চিত করার কথা। কিন্তু তা না করে পানির প্রবাহ দেখিয়েছে ৮৮ হাজার ৭৮৩ কিউসেক। ভারতের হিস্যা অনুযায়ী ৪০ হাজার কিউসেক পানি ভারত ঠিকই বুঝে নিয়েছে। ১১ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় চক্রে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল ৫৭ হাজার ৬৭৩ কিউসেক। এ সময় পাওয়া গছে ৪৭ হাজার ৫৩৩ কিউসেক। ২১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি তৃতীয় চক্রে ৫০ হাজার ১৫৪ কিউসেক পানি দেয়ার কথা থাকলেও দিয়েছে ৪৩ হাজার ৬১০ কিউসেক। ফেব্রম্নয়ারি মাসের ১ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত্ম চতুর্থ চক্রে ৪৬ হাজার ৩২৩ কিউসেকের স্থলে ভারত দিয়েছে ৪১ হাজার ৮৫৫ কিউসেক। পঞ্চম চক্রে ১১-২০ ফেব্রম্নয়ারি ৪২ হাজার ৮৫৯ কিউসেক পাওয়ার কথা থাকলেও ভারত কম দিয়েছে ৪ হাজার ৬১৩ কিউসেক।

এ সময় পাওয়া গেছে ৩৮ হাজার ২৪৬ কিউসেক পানি। ২১-২৮ ফেব্রম্নয়ারির ৬ষ্ঠ চক্রে ৩৯ হাজার ১০৬ কিউসেকের স্থলে পেয়েছে ৩৫ হাজার ৮৫১ কিউসেক। মার্চ মাসের ১ থেকে ১০ তারিখের সপ্তম চক্রে ৩৫ হাজার কিউসেকের স্থলে পাওয়া গেছে ৩৩ হাজার ২৮৬ কিউসেক। জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত্ম ১৫টি চক্রের ৭টি চক্রেই ৪২ হাজার ১৯৬ কিউসেক পানি কম দেয়া হয়েছে। স্থানীয়রা মনে করেন, শুষ্ক মৌসুমের শুরম্নতেই পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে পদ্মা নদী। পানি নেই হার্ডিজ্ঞ ব্রিজের নিচে। ব্রিজের নিচে এখন ফসলের মাঠ। ব্রিজের ১৫টি গার্ডারের মধ্যে মাত্র ৭টি গার্ডার কার্যত পানির ভেতর দাঁড়িয়ে আছে। বাকি ৮টি এখন বালুচরে। দিন যতই যাচ্ছে পদ্মা নদীতে ততই জেগে উঠেছে বালুচর। অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে করম্নণ পদ্মা নদীর চিত্র।

ভেড়ামারা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ্‌ ব্রিজের যুগল সৌন্দর্য দেখতে আসা জোবায়ের হোসেন জানান, পাঠ্যবইয়ে পড়েছেন প্রমত্তা পদ্মা নদীর কথা। যার উত্তাল গর্জন শোনা যেত দূর থেকেই। কিন্তু এখন পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে বাস্ত্মব অবস্থার কোনো মিল নেই। পানির অভাবে পদ্মা এখন মরা খাল। জলরাশির পরিবর্তে চারিদিকে শুধু ধু-ধু বালুচর। পদ্মার বুক এখন ফসলী জমির মাঠ। পানি হ্রাসের এমন অবস্থা চলতে থাকলে আগামী প্রজন্ম হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের কোনো কারণ খুঁজে পাবে না। যায়যায়দিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়