শিরোনাম
◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক

প্রকাশিত : ১৬ মার্চ, ২০১৮, ০৭:০৭ সকাল
আপডেট : ১৬ মার্চ, ২০১৮, ০৭:০৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হেফাজতের সঙ্গে সমঝোতা করলে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আ. লীগের পার্থক্য কই : মুনতাসীর মামুন

ডেস্ক রিপোর্ট  : ভোটের জন্য হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সমঝোতা করলে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের কী পার্থক্য থাকে- সে প্রশ্ন তুলেছেন অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।

এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছেন, ভোটের লোভে ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে সমঝোতা করা যে কোনো গণতান্ত্রিক সরকারের জন্য ‘খুব ভুল হবে’।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত ‘প্রতিবাদী লেখক জাফর ইকবাল হত্যাপ্রচেষ্টা: ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধকরণে বাধা কোথায়’ শিরোনামে এক সেমিনারে তারা এসব বলেন।

হেফাজতের দাবি মেনে পাঠ্যসূচিতে পরিবর্তন ও কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতির সমালোচনা করেন সেমিনারের বক্তারা। ভোটের লোভে ক্ষমতাসীনরা হেফাজতে ইসলামীর দাবি মেনে নেওয়ায় তারা ধর্মীয় উগ্রবাদ উসকে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন কেউ কেউ।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, “স্তুতিবাক্যে এদের সন্তুষ্ট করে, এদের সাথে আপস করে যদি ভোট আশা করেন গণতান্ত্রিক দলগুলো, সেটা খুব ভুল হবে। ধর্মকে ব্যবহার করা কোনো গণতান্ত্রিক সরকারেরই উচিৎ নয়।”

সরকারের জঙ্গিবাদবিরোধী নানা কার্যক্রমের পরও জঙ্গিবাদের বিস্তার রোধ করতে না পারায় হতাশা প্রকাশ করেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির এই উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরেও জঙ্গিবাদের শিকড় বিস্তৃত হয়েছে। এখন রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার বন্ধ করা গেলে জঙ্গিবাদের বিকাশ বন্ধ হবে।”

ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনগণের বৃহৎ সামাজিক আন্দোলন প্রত্যাশা করেন তিনি।

সেমিনারে বক্তব্যে ইতিহাসের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, “ভোটের রাজনীতির কারণে যদি হেফাজতের সঙ্গে সমঝোতা করতে হয় তবে বিএনপি, জামায়াতের সাথে আওয়ামী লীগের আর পার্থক্য থাকল কই?”

সেমিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুও হেফাজতে ইসলামীর সঙ্গে রাজনৈতিক দলের যোগাযোগে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

হেফাজতের নীতির বিরোধিতা করে আসা জাসদ সভাপতি ইনু বলেন, “হেফাজতকে যারা রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়, পৃষ্ঠপোষকতা করে তারা অনৈতিক কাজ করছেন, তারা রাজনৈতিক অপরাধ করছেন। জঙ্গি-সন্ত্রাসী রাজাকার ও তেঁতুল হুজুরদের আশ্রয়দাতা, পৃষ্ঠপোষক, সঙ্গী, সমর্থক, রাজনীতিতে সক্রিয় দেখছি। আমরা তাদের আলাদা করতে পারছি না।”

এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, “দার্শনিক ও রাজনৈতিক সংকটের কারণে আমরা স্থির জায়গায় যেতে পারছি না। যত দিন না পারব, বাংলাদেশে রাজনীতি অক্ষুণ্নভাবে অসাম্প্রদায়িক জায়গায় দাঁড়াবে না।”

সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা যাতে ফিরিয়ে আনা হয় সেজন্য উদ্যোগী ভূমিকা পালনের আশ্বাস দেন তিনি।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধে নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, “আজকে সরকার জঙ্গি দমনে নিজেদের সাফল্য দাবি করছে। কিন্তু সরকার তো সেই ’৭২ এর সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার দিকে যাচ্ছে না। হেফাজতের নানা দাবির মুখে তারা সমঝোতা করে যাচ্ছে। বন্ধ হচ্ছে না কুফরি মতবাদের প্রচার। এভাবে তো জাফর ইকবালদের নিরাপত্তা দেওয়া যাবে না।”

জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা কক্সবাজারের ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ‘মওদুদীবাদে’ উদ্বুদ্ধ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আশ্রয় শিবিরগুলোতে এখন প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা থাকার তথ্য তুলে ধরে শাহরিয়ার কবির বলেন, “তাদের মধ্যে এক লাখ নাগরিক যদি এই মতবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে যান, তবে তারা শুধু বাংলাদেশই নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।”

মতাদর্শ বিকিয়ে দিয়ে যে সমঝোতা তা নিরপরাধ মানুষের মৃত্যু বন্ধ করতে না পারলে ‘ব্যর্থতায়’ পর্যবসিত হয় বলে মন্তব্য করেন সাবেক সেনা ও বিমান বাহিনী কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশীদ ও ইশফাক ইলাহী চৌধুরী।

সেমিনারে অন্যদের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বক্তব্য রাখেন।

সেমিনার শুরুর আগে সদ্যপ্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীকে স্মরণ করা হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর বড় ছেলে কারু তিতাস ও মেয়ে ফুলেশ্বরী প্রিয়নন্দিনী।

কারু তিতাস বলেন, “মার কপালের টিপ নিয়ে ফেইসবুকে কত কথা হত, মাকে নাস্তিক বলা হত। মা সব শুনে বলত, ‘ওরা যত বলবে, আমার কপালের টিপ তত বড় হবে’। জাফর ইকবাল স্যারের উপর হামলার ঘটনার কথা শুনে গিয়েছিলেন মা। মা বলেছিলেন, ‘জেনে রেখো, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি কখনও আমাদের চেয়ে শক্তিশালী হবে না।”

সেমিনারে নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

পরে নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির জানান, ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর নামে আগামী বছর থেকে একাত্তরের গণহত্যা ও নির্যাতন নিয়ে প্রতিবেদন ও গবেষণার জন্য সাংবাদিক-লেখকদের পুরস্কার দেওয়া হবে। এই পুরস্কারের অর্থমূল্য হবে ৫০ হাজার টাকা। উৎসঃ বিডিনিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়