বৃটেনের মূলধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশীদের মধ্যে পুরুষের তুলনায় নারীরা এগিয়ে
সাইদুল ইসলাম লন্ডন: ব্যবসা বানিজ্য,শিক্ষা, বিজ্ঞান রাজনীতি, সংস্কৃতি, খেলাধুলা সহ সব পথেই সমান বিচরন ইউকেতে বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের । বলতে গেলে নানা ত্যাগ তিতীক্ষা অতিক্রম করে বর্তমান সময়ে এখানকার বাংলাদেশিরা ইতিহাসের স্বর্নযুগ অতিক্রম করছেন। মেধায়,মননে আত্নপ্রত্যয়ী কঠোর পরিশ্রমী বাংলাদেশীরা বৃটিশ মূলধারার সাথে মিলে মিশে একাকার। নিজেদের যোগ্যতার সাক্ষর রেখে চলেছেন সবজায়গায় সমানতালে।
বিশেষ করে বৃটিশ মূলধারার রাজনীতিতে এগিয়ে রয়েছেন এখানকার বাংলাদেশী নারীরা। পুরুষদের টপকে মূলধারার রাজনীতিতে শক্ত অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন তাঁরা । শুধু তাই নয় লেবার পার্টি থেকে পার্লামেন্টে আসন করে নিয়েছেন বাংলাদেশি তিন কন্যা টিউলিপ, রুশনারা ও রুপা। যা বাংলাদেশিদের গৌরবোজ্জ্বল অর্জনের অন্যতম পলক। আসন্ন টাওয়ার হ্যামলেটস্ ও নিউহাম কাউন্সিল নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টি থেকে মেয়র পদে মনোনয়ন পেয়েছেন ডা: আনোয়ারা আলী এমবিই ও রহিমা খাঁন। মানযিলা পলা উদ্দিন যিনি প্রথম মুসলিম নারী এবং একইসাথে বাঙ্গালি যিনি বৃটেনের লর্ডস হবার গৌরব অর্জন করেছিলেন। বর্তমান কেমডেন কাউন্সিলের মেয়রের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন আরো এক বাংলাদেশি নারী নাদিয়া শাহ। ২০১৫ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বার্কিং ও ডেগেনহাম আসন থেকে মিনা রহমান কনজারভেটিভ পার্টির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে লড়েছিলেন ।
এসবের তুলনায় বাংলাদেশী পুরুষের অংশগ্রহণ বা উন্নতি তুলনামূলক অনেক কম। মূলধারায় যুক্ত হয়ে রাজনীতি করার মত অনেক যোগ্যতা সম্পন্ন পুরুষ থাকা সত্বেও পিছিয়ে আছেন বৃটিশ রাজনীতিতে। এর কারন কি পুরুষরা বাংলাদেশি রাজনীতি চর্চায় অধিক মনযোগী?
কিন্তু পুরুষদের পেছনে ফেলে নারীরা কিভাবে এগিয়ে গেলেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে আমাদের সময় ডটকমকে টাওয়ার হ্যামলেটস্ কাউন্সিলের কনজারভেটিভ পার্টি থেকে মেয়র প্রার্থী ডা: আনোয়ারা আলী এমবিই জানান " শিক্ষাগত যোগ্যতা,পরিচ্ছন্ন রাজনীতি চর্চা ও ধৈর্য সহকারে কঠোর পরিশ্রমই নারীদের এগিয়ে যাওয়ার মূল কারণ বলে আমি মনে করি"। একই প্রশ্ন ছিল রাইটার্স গিল্ড অব গ্রেট ব্রিটেনের সদস্য ও সাংবাদিক মুনযের আহমদ চৌধুরীর কাছে। তিনি বলেন "প্রথমত দেশে এবং যুক্তরাজ্যে অামাদের নারীরা অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে ক্যারিয়ার সচেতন ও ফোকাসড। এমনকি দেশ থেকে বড় হয়েও যারা ব্রিটেনে এসেছেন, সেসব নারীরাও ব্রিটেনের মেইনষ্ট্রিমে যুক্ত হবার চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছেন। যুক্ত হচ্ছেন মূলধারার রাজনীতিতে। কিন্তু পুরুষদের বেলায় অামরা দেখি তারা ব্রিটেনে এসেও বাংলাদেশী রাজনীতির চর্চায় বেশি মনযোগী"।
এমন বক্তব্যের সাথে অবশ্য একমত নন বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রবীন সাংবাদিক, এস্পায়ার পার্টির চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলর প্রার্থী কে এম আবু তাহের চৌধুরী। তিনি বলেন "যে সকল বাংলাদেশি পুরুষ মূলধারার রাজনীতিতে এগিয়ে এসেছিলেন তাদেঁর সবাইকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং এটাই মূলত পুরুষদের পিছিয়ে পড়ার একমাত্র কারন"। তবে গ্রীনউইচ ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজোয়েট করা সালমা খানম বললেন ভিন্ন কথা, '' তিনি জানালেন, রাজনীতি বা ক্ষমতাকে উপভোগ নয়, বরং জনকল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়াই হচ্চে বৃটিশ রাজনীতির মূল প্রতিপাদ্য। যার সাথে হয়তো অনেক বাংলাদেশি অভিবাসী মানিয়ে উঠতে পারেন না বা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না এবং এটিই হতে পারে পুরুষদের পিছিয়ে পড়ার অন্য একটি কারন"।
আপনার মতামত লিখুন :