শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ১৫ মার্চ, ২০১৮, ০৪:১০ সকাল
আপডেট : ১৫ মার্চ, ২০১৮, ০৪:১০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রতিটি বিবেকবান মানুষই আজ চিন্তিত

ওয়াসিম ফারুক : বিটিবি তে প্রচারিত সৈয়দ বোরহান কবীর এর উপস্থাপনায় "পরিপ্রেক্ষিত" নামের অনুসন্ধানী অনুষ্ঠানের কথা আমাদের অনেকের ই মানে আছে ১৯৯৬ /৯৭ এর দিকে "পরিপ্রেক্ষিত" নামের অনুসন্ধানী অনুষ্ঠানটির জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী । আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য জয়নাল হাজারী কিংবা খুলনার কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদারের কথা দেশবাসী জানতে পেরেছিল বিটিভি তে প্রচারিত এই "পরিপ্রেক্ষিত" অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই । যার ফলশ্রুতিতেই সরকার আইনের আওতায় আনতে পেরেছিল কিংবা জয়নাল হাজারিরা রাজনীতির মুলধারা ছিটকে পরতে বাধ্য হয়েছিল ।

বর্তমানেও আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটি টিভি চ্যানেলেই বিভিন্ন অনুসন্ধানী রিপোর্ট ভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করে আসছে সেই সাথে অন্যান সংবাদমাধ্যম ও নানান অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ করে আসছে যার জনপ্রিয়তা মোটে ও কম নয় । এ সব অনুষ্ঠান দেখে একদিকে আমারা সাধারণ যেমন সতর্ক হতে পারছি তেমনি সরকার তথা প্রশাসন ও অপরাধীদের দমনে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে বলে আমার ধারনা ।

তথ্য প্রযুক্তি আইন -২০০৬ ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন সংশোধনী- ২০১৩ এর ৫৭ ধারা যা আমাদের স্বাধীন মত প্রকাশের অন্তরায় । তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের জন্য সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ দাবী জানিয়ে আসছিল । আর এই দাবীর প্রেক্ষিতে সরকার তথ্য প্রযুক্তি আইনের কালো ধারা ৫৭ বাতিল করলেও ৫৭ ধারার বিষয়গুলিকে ছরিয়ে ছিটিয়ে চারটি ধারায় মিলিয়েদিয়েছে । তবে সবচেয়ে ভয়ংকর ও আতংকের বিষয় হলো সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া " ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ " ।

এই আইনের ৩২ ধারা দেশ ও জাতির জন্য এক ভয়ংকর অভিশাপ হিসেবে অপেক্ষায় আছে । এই আইনের ৩২ ধারা নিয়ে দেশের প্রায় প্রতিটি বিবেকবান মানুষই আজ চিন্তিত । প্রস্তাবিত " ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ " এর ৩২ ধারায় বলা হয়েছে " যদি কোনো ব্যক্তি বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে কোনো সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ কোনো সংস্থার কোনো ধরনের অতিগোপনীয় বা গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করেন বা করিতে সহায়তা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে কম্পিউটার গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ।

"জাতি হিসেবে আজ আমাদের কপালের দুর্নীতির তামাকা অনেক পুরোনো জাতির জনকের সেই ঐতিহাসিক জিজ্ঞাসা "সাত কোটি বাঙালির সাড়ে সাত কোটি কম্বল, আমার কম্বল কই " সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সাত কোটি মানুষের জন্য সাড়ে সাত কোটি কম্বলের ভেতরে নিজের কম্বলখানাই খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়েছিলেন । আজ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় কোন অপরাধ বা দুর্নীতির জন্য বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষ কি জড়িত ছিলেন ? না কি রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পৃক্ত রাজনৈতিক কর্তাব্যক্তি ও সরকারী কর্মকর্তা ও তাদের বেসরকারী দোসররা জরিত ?

কোন দুর্নীতিগ্রস্হ্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোন দিন ই কোন সংবাদ মধ্যমকে সহযোগিতা করবেনা তা দুর্নীতি প্রচারের জন্য । তাই কোন ভাবেই প্রকাশ্য তাদের কাছ কি দুর্নীতির সঠিক তথ্য পাওয়া সম্ভব ? ভুয়া মুক্তিযুদ্ধা মুক্তিযুদ্ধের সনদ জালিয়াতি করে সরকারী কর্তাব্যক্তিদের পদোন্নতি বিদেশি বন্ধুদের সম্মাননা পদকে সোনা জালিয়াতি, সরকারি কর্মকর্তার গুনে গুনে ঘুষখাওরার চিত্র সহ অনেক রাজনৈতিক কর্তাব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী কিংবা চোরাকারবারিদের তথ্য জানতে পেরেছি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে যার পুরোটাই ছিল গোপনে ধারন করা । শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ই না দুনিয়ার কোথাও দুর্নীতিবাজরা তাদের নুন্যতম তথ্য সংবাদ মাধ্যমকে সঠিক ভাবে প্রদান করেছে এমন প্রমাণ নাই ।

আর পেশাগত ভাবে একজন সাংবাদিকের দায়িত্ব সমাজের সন্ত্রাস দুর্নীতি সহ নানান অবক্ষয় তুলে ধরা । সত্য তুলে ধরার কারণে কারো সম্মানের হানী হলে সেই দায় শুধু মাত্র সন্ত্রাস দুর্নীতি সহ আপকর্মের সাথে জরিতদের । কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠির স্বার্থরক্ষার জন্য কোন কালো আইন কখনো ই কোন সভ্য সমাজ তথা রাষ্ট্রের সভ্য মানুষ মেনে নিতে পারে না । তাই আমরা ও চাইবো না কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠির স্বার্থ রক্ষার প্রয়োজনে ৫৭ ধারা বা ৩২ ধারা যুক্ত কোন কালো আইন প্রণয়ন করে আমাদের সুস্থ্য স্বাধীন মত প্রকাশের পথ রোধ করা হউক ।

লেখক: লেখক ও কলামিষ্ট/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়