শিরোনাম
◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ১৪ মার্চ, ২০১৮, ০৮:০৪ সকাল
আপডেট : ১৪ মার্চ, ২০১৮, ০৮:০৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিধ্বস্ত ইউএস বাংলার নিশ্চিত মৃত্যু থেকে বেঁচে ফেরা ৬ যাত্রীর অভিজ্ঞতা

সজিব খান: নেপালের কাঠমাণ্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ৪ ক্রুসহ ৬৭জন যাত্রীর মধ্যে ৫০ জন যাত্রীই নিহত হন। নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরে আসতে পেরেছেন কয়েকজন মাত্র। তবে বেঁচে ফিরে আসতে পারলে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার সময়কার লোমহর্ষক সেই মুহূর্তগুলো কিছুতেই ভুলতে পারছেন না তারা। বার বার দুর্ঘটনার কথা মনে করে শিউরে উঠছেন বেঁচে ফেরা মানুষগুলো। আর এদের মধ্যে কেউ কেউ এখনো চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। এতো বড় একটি দুর্ঘটনাটি থেকে বেঁচে ফিরে অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না যে তারা এখনো বেঁচে আছেন।  বিধ্বস্ত ইউএস বাংলা থেকে বেঁচে ফেরা ছয়জন যাত্রী জানালেন তাদের লোমহর্ষক বর্ণনা।

বিধ্বস্ত ইউএস বাংলা বিমান থেকে বেঁচে ফেরা শাহরীন আহমেদ (২৯)। যিনি বর্তমানে কাঠমাণ্ডু মেডিকেল কলেজ টিচিং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।  ঢাকার একটি স্কুলে শিক্ষকতা  করতেন তিনি। বেড়ানোর উদ্দেশে নেপাল যাচ্ছিলেন তার এক বন্ধুর সাথে। কিন্তু  দুর্ঘনার হাত থেকে তিনি বেঁচে ফিরলেও তার বন্ধু নিহত হন।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘দুপুর আড়াইটার দিকে কাঠমাণ্ডু পৌঁছে পাইলট প্রথমে ল্যান্ড করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পারেননি। পরে আকাশে কিছুক্ষণ ঘোরার পর যখন দ্বিতীয়বার ল্যান্ড করার চেষ্টা করেন, তখন বিমানের একপাশ উঁচু হয়ে যায়। তখনই আমি বললাম, বাঁ দিকটা উঁচু হলো কেন! আর তখনই ক্রাশ হয়ে গেল। এরপরই বাইরে হঠাৎ প্রচণ্ড আগুন দেখতে পেলাম। আর আমাদের কেবিন ধোঁয়ায় ভরে গেল এবং বিকট শব্দে হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটল। আগুন লাগার প্রায় ২০ মিনিট পর সাহায্য আসে। সে পর্যন্ত বিমানের ভেতরেই বসেছিলাম। প্রচণ্ড ভয় লাগছিল আর হেল্প হেল্প বলে চিৎকার করছিলাম।’

শাহরীন আহমেদ কাঁদতে কাঁদতে আরো বলেন, ‘বিমানে থাকা মানুষগুলো পুড়ে যাচ্ছিল। তারা চিৎকার করছিল এবং বিমান থেকে পড়ে যাচ্ছিল। আমি জ্বলন্ত বিমান থেকে তিনজনকে লাফ দিতে দেখেছি। এটা ভীষণ ভয়ানক পরিস্থিতি ছিল। এরপর সৌভাগ্যবশত কেউ আমাকে সেখান থেকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যায়।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া আরেক বাংলাদেশি মেহেদি হাসান। প্রথমবারের মতো বিমান ভ্রমণ করছিলেন তিনি। তার স্ত্রী, এক আত্মীয় এবং ওই আত্মীয়ের মেয়ে সঙ্গে ছিল। মেহেদি বলেন, আমার সিটটি পেছনে ছিল। আমি আগুন দেখে পরিবারকে খুঁজতে শুরু করলাম। আমরা জানালা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু পারলাম না। আমাদেরকে উদ্ধার করতে পারে এমন মানুষকে খুঁজছিলাম। আমি আর আমার স্ত্রীকে উদ্ধার করা হলো। কিন্তু আত্মীয়দের পাওয়া যায়নি।

বসন্ত বহরা নামে আরেক যাত্রী বিমান বিধ্বস্তের সময়কার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘হঠাৎ করেই বিমানটি প্রচণ্ড রকম কাঁপতে শুরু করে এবং মুহূর্তের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটে। আমি জানালার কাছে ছিলাম। সেটি ভাঙতে পারায় আমি প্রাণে রক্ষা পাই। তারপর আর কিছু মনে নেই।’

কেশব পাণ্ডে নামের এক নেপালি যাত্রী বলেন, ‘বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর আমি বের হওয়ার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু আমার হাত ও পা আটকে যাওয়াতে বরে হতে পারছিলাম না। আমার সিট ছিল জরুরি নির্গমন দরজার পাশেই। সম্ভবত সেখান দিয়েই উদ্ধারকর্মীরা আমাকে বের করেছেন। এর বেশি কিছু মনে নেই ।’

আশীষ রণজিৎ নামের এক যাত্রী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমি এয়ার হোস্টেজকে জিজ্ঞাসা করি, কী হচ্ছে, সব কিছু ঠিকঠাক আছে তো? তিনি আমাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বোঝান, সব ঠিক আছে। কিন্তু আমি লক্ষ করলাম, তাঁর চেহারার মধ্যে আতঙ্ক ফুটে উঠেছে।’

সনম শাকিয়া নামে আরেক বিমান যাত্রী এএফপিকে বলেন, ‘বিমানটি একবার ওপরে, একবার নিচে, একবার ডানে, একবার বাঁয়ে পাক খাচ্ছিল। প্রথমে আমি ভাবলাম, বিমান নামার সময় মনে হয় এমনটাই ঘটে থাকে। পরে যখন বিমানটি বিস্ফোরণ হয় তখন আমি জানালা দিয়ে বের হয়ে গিয়েছিলাম’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়