শিরোনাম
◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে ◈ সেনা গোয়েন্দাসংস্থার বিরুদ্ধে ৬ পাক বিচারপতির ভয় দেখানোর অভিযোগ

প্রকাশিত : ১৪ মার্চ, ২০১৮, ০১:২০ রাত
আপডেট : ১৪ মার্চ, ২০১৮, ০১:২০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিপাশার শেষ স্মৃতি ‘লাল টিপ’

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিপাশার ‌'লাল টিপ' একটা রয়ে গেছে এখনো ওর ডেস্কটপে। হয়তো কোনোদিন কাজের ফাঁকে সেঁটে রেখেছিল পরে পরবে বলে। বেখেয়ালে হয়তো মনেও ছিলো না আর। মানুষ চলে গেলে তার কতো সামান্য স্মৃতিও অসামান্য হয়ে ওঠে।

বিপাশার শেষ স্মৃতি ফেসবুকে এভাবেই তুলে ধরেছেন তার সহকর্মী দ্য হাঙ্গার প্রজেক্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈকত শুভ্র আইচ মনন। ডেস্কটপে সেঁটে রাখা একটি লাল টিপের ছবিও তিনি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।

সোমবার কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় স্বামী-সন্তানসহ নিহত হন বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সহযোগী সমন্বয়ক সানজিদা হক বিপাশা।

রোববার বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে শেষবারের মতো রাজধানীর আসাদ গেটের অফিস থেকে যখন বের হচ্ছিলেন, তখন সহকর্মীরা লিফট পর্যন্ত বিপাশাকে এগিয়ে দেন। কিন্তু কে জানতো এটাই তার শেষ যাওয়া? অফিসে বিপাশার পাশের ডেস্কেই বসতেন সৈকত শুভ্র আইচ মনন। আবেগাপ্লুত মনন বলেন, স্বামী-সন্তানকে নিয়ে আনন্দ ভ্রমণে গিয়েছিলেন বিপাশা। ১৭ মার্চ দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু বিপাশার চিরবিদায়ের খবরে পুরো অফিস শোকে স্তুব্ধ। সোমবার থেকেই অফিসের সবাই বিপাশার স্মৃতি হাতড়ে বেড়াচ্ছেন। আজ (মঙ্গলবার) অফিসে এসে সবাই বার বার বিপাসার ডেস্কের কাছে এসে দীর্ঘশ্বাস নিচ্ছিলেন। হঠাৎ বিপাশার ডেস্কটপে একটি লাল টিপ দেখা গেল। লাল টিপটি আমরা এভাবেই রেখে দিয়েছি, আমাদের কাছে এটাই বিপাশার শেষ স্মৃতি। লাল টিপের দিকে তাকালেই চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে বিপাশা এখনও আমাদের মাঝে আছে।

বিপশার স্মৃতির কথা বলতে বলতে সৈকত শুভ্র আইচ মননের যখন গলা যখন ভারী হয়ে উঠছিল, তখনই বিপাশার আরেক সহকর্মী তুহিন আফসারী অশ্রুসজল নয়নে বলেন, 'যে অফিস সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে প্রাণ চঞ্চল হয়ে ওঠে, আজ সেই অফিস নীরব নিস্তব হয়ে শোকের ছায়ায় ভরে আছে। আমরা সত্যিই পারছি না। আমাদের মধ্যে স্বজন হারানোর হাহাকার আর কান্না চলছে। আমাদের অফিসটায় অদ্ভূত এক নিরবতা। আমরা কেউ কারো চোখের দিকে তাকাতে পারছি না।' তুহিন আফসারীর কথা শেষ হতে না হতেই বিপাশাকে নিয়ে বলতে লাগলেন আরেক সহকর্মী। তিনি বলেন, কপালে টিপ পরা খুব পছন্দ ছিল বিপাশার। সেই ১৯৯৮ সাল থেকে গত ২০ বছরে একদিনও ওকে টিপ ছাড়া দেখিনি।

বিপাশা নেই, কিন্তু তার সহকর্মীরা যেন তার স্মৃতি তুলে ধরেই কিছুটা হালকা হওয়ার চেষ্টা করছেন। এ যেন বুকের ভেতর ছেপে থাকা কষ্ট সরানোর চেষ্টা।

বিপাশার এক সময়ের সহকর্মী মেহরাব উল গনি বলেন, সব সময়ই বিপাশাকে দেখেছি কপালে লাল টিপ পরা আভা ছড়ানো হাসি মুখে। পরিপাটি সাজগোজের লাল টিপ পরা মেয়েটির সাথে বিপাশা নামটার দারুণ রকম সাজুয্য ছিল।

যশোরের মেয়ে বিপাশার স্বামীর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে। স্বামী রফিক জামান রিমু এক সময় সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এখন তিনি প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে কাজ করেন। রিমু-বিপাশা দম্পতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তাদের একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধ ধানমণ্ডি বয়েজ স্কুলে কেজি ওয়ানে পড়ে। স্ত্রী, সন্তান ও বৃদ্ধ মাকে নিয়ে রাজধানীর শুক্রাবাদে নিজেদের বাড়ির তৃতীয় তলায় থাকেন রিমু। চতুর্থ তলায় স্বামীকে নিয়ে থাকেন তার ছোট বোন রিতা। চার ভাইবোনের মধ্যে রিমু তৃতীয়। তাদের বড় ভাই রিয়াজ জামান রাজু কানাডা প্রবাসী। মেজো বোন ঝুমু পেশায় চিকিৎসক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়