শিরোনাম
◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ১৩ মার্চ, ২০১৮, ০৬:৩৫ সকাল
আপডেট : ১৩ মার্চ, ২০১৮, ০৬:৩৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

খালেদা জিয়ার জামিনপ্রাপ্তি এবং জবাবদিহি রাজনীতির সংস্কৃতি!

দীপক চৌধুরী  : বাংলাদেশের রাজনীতিতে জবাবদিহি সংস্কৃতির প্রয়োজনÑ একথাটি সময়ের দাবি। এখানে আদালত, জেল-জরিমানা, গ্রেপ্তার এসব বিষয় যে শুধু সাধারণ নাগরিকদের জন্যই নয়, সবার জন্য; এর একটি নজির স্থাপন হলো। সাংবিধানিকভাবে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির দায়ে কারাগারে যেতে হয়েছে। সত্যিকার অর্থেই পিলে কাঁপানো খবর ছিল খালেদা জিয়ার জেল।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই পরিবর্তন ‘ইতিবাচক রাজনীতি’ হিসেবেই বিবেচনায় নেওয়া উচিৎ। দুর্নীতি করবেন, জনগণের টাকা আত্মসাৎ করবেন কিন্তু বিচার হবে না সরকারের প্রধান নির্বাহীর, এটাই ছিল আমাদের রাজনীতির সংস্কৃতি। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জেল খাটার প্রসঙ্গ বা বিষয়টির চরিত্র ভিন্ন ধরনের। বিতর্ক অন্যদিকে যাবেÑ এ কারণে আজ আলোচনায় ওইদিকে যেতে চাই না।

শুধু জোরগলায় উচ্চারণ করতে চাই, যা অতীতে স্বপ্ন ছিলো তা এখন বাস্তব। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছর কারাদ-প্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। খালেদা জিয়া বয়স্ক নারী।

তার শারীরিক নানা জটিলতা আছে। এসব বিবেচনা করে তাকে চার মাসের অন্তর্বতীকালীন জামিন দেওয়া হলোÑএমন কথা বলেছেন হাইকোর্ট। রাজনীতিকে উত্তপ্ত করার নানাপ্রকার চেষ্টার পরও বিএনপি শেষতক দেখেছে মানুষের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু করার থাকে না। অতীতের শত শত ঘটনা আর দলটির কর্মকা- বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতির প্রমাণ দেয়। টকশোয় ও বক্তৃতা ভাষণে বিএনপির নেতাদের কথায় আভাস মেলে যে তারা অনেকেই বিশ্বাস করেন যে খালেদা জিয়ার কারাবাসে মানুষের সহানুভূতি বাড়ছে।

এটাও একটি রাজনৈতিক ধোঁকা। জনগণের জানা আছে রাজনৈতিক ধোঁকাবাজির ‘পাল্লা’ এটি। কারণ, এটি পরিমাপের কাঠি কেবল জনগণেরই হাতেই অবস্থান করে। আন্দোলনে হিংসাত্মক পথ পরিহার করাও নেতাদের সাময়িক কৌশলÑ এটা দলীয় নেতা-কর্মীরাও বুঝতে পেরেছেন। জেল-জরিমানা আর থানার মামলা মোকাবিলা করার ইচ্ছা নেই তাদের। সম্ভবত, বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে তাদের সরকারের দমননীতির মধ্যেও আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগকে সক্রিয় হতে দেখা গেছে। ওয়ার্কিং সাংবাদিক হিসেবে খুব কাছ থেকে অতীত দেখেই অনুমান করি; আজ সরকার যতটা না কঠিন এরচেয়ে বহুগুণ বেশি কঠিন ও কঠোর ছিল বিএনপি সরকার। সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে অতীতের বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত এদেশে জঙ্গিতন্ত্রকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল সরকার। সেই সময় দলের অভ্যন্তরীণ দলাদলির পুরোটাই ছিল ভাগ-বাঁটোয়ারার লড়াই। বাস টার্মিনাল হোক আর লঞ্চ টার্মিনার হোক বা নদী-পুকুর, বাজার -হাট হোক।

অতি শিগগিরই বিএনপির ক্ষেত্রে আরেকটি বিস্ময় হচ্ছে যে, ভাঙার মুখে নাকি পড়ছে দলটি। কোনো চেষ্টাই কাজে আসবে না খালেদা জিয়ার ঘনিষ্টদের। খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে বিএনপির নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণাÑ থেকে বিএনপি সরে আসবে। যেভাবে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি থেকে দলটি সরে এলো। সারাবিশ্ব জানে, বিএনপির রাজনীতিতে ধর্মের একটা ভূমিকা আছে। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত এবং জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রমাণিত। একারণেই দলটি দেশ-বিদেশে সমালোচিত।

শুনে আসছি, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদল, জাতিসংঘ এবং যুক্তরাষ্ট্রও সব দলের অংশগ্রহণের নির্বাচন চায়। তবে ২০১৪ সালের নির্বাচনের অভিজ্ঞতা বলে দিচ্ছে একাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নতুন আরেকটি রেকর্ড সৃষ্টি করলে অবাক হবো না। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এরপর তারানকো ফার্নান্দেজের বাংলাদেশ সফরের ইতিহাস তো ভুলে যাবার নয়।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট ও ঔপন্যাসিক/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়