শিরোনাম
◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত ◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি

প্রকাশিত : ১৩ মার্চ, ২০১৮, ০২:২৩ রাত
আপডেট : ১৩ মার্চ, ২০১৮, ০২:২৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইচ্ছামৃত্যুকে স্বাগত জানালেন মরণাপন্ন রোগীর স্বজনরাও

রবিন আকরাম: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ইউথেনেসিয়া বা ইচ্ছামৃত্যুকে বৈধ বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। চিকিৎসকরা এবং মরণাপন্ন রোগীর আত্মীয়স্বজনরাও কিন্তু এই পদ্ধতিকে স্বাগত জানাচ্ছেন।

আত্মহত্যা নয়, কিন্তু জীবনের যখন আর কোনো আশাই নেই, তখন স্বেচ্ছামৃত্যু। রোগযন্ত্রণা থেকেই রেহাই পাওয়া নয়, কিন্তু জীবন্মৃত অবস্থায় থাকতে না চাওয়ার অধিকার। যে কারণে ডাক্তারি পরিভাষায় ইউথেনেসিয়াকে নিষ্কৃতি মৃত্যুও বলেন অনেকে। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক যুগান্তকারী রায়ে এই অধিকারকে আইনি স্বীকৃতি দিলো। জানালো, ভারতীয় সংবিধানে জীবনের অধিকারকে যে নিশ্চিত করা হয়েছে, এই স্বেচ্ছামৃত্যুও তার মধ্যেই পড়ে। কারণ কেবল বেঁচে থাকা নয়, একজন মানুষ কীভাবে বেঁচে আছেন, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে কোমায় চলে যাওয়া, বা লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমের ভরসায় নাম কা ওয়াস্তে বেঁচে থাকার চেয়ে মর্যাদার সঙ্গে মারা যাওয়াটাই যদি কেউ বাঞ্ছনীয় মনে করেন, তবে তিনি আগাম নির্দেশ দিয়ে যেতে পারেন। যদি সেইরকম পরিস্থিতি আসে, তা হলে যাতে তাঁর আত্মীয়স্বজন সেই নির্দেশ কার্যকর করতে পারেন।

চিকিৎসকরা সবাই এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। ডা. চিত্রিতা গুপ্ত মুখার্জি বলেন, ‘‘অবশ্যই দরকার ছিল এই অধিকার। অ্যাক্টিভ ইউথেনেসিয়া, অর্থাৎ যেখানে একজন রোগীকে মারা যেতে সাহায্য করা হয়, তার নানা রকম অপপ্রয়োগ হতে পারে।

সেই কারণেই প্যাসিভ ইউথেনেসিয়া এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার আদালতের ঠিক করে দেওয়া মেডিকেল বোর্ডের হাতে। এটাই ঠিক পদ্ধতি। কারণ একজন মরণাপন্ন রোগীকে শুধু তাঁর রোগযন্ত্রণা থেকে রেহাই দেওয়াই নয়, যেখানে তাঁর সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনে ফেরার কোনো আশা নেই, সেখানে এটাই একমাত্র নিষ্কৃতির পথ।

অ্যানাসথেটিস্ট ডা. নির্মল হালদার বলেন, প্রতিদিনই অপারেশন থিয়েটারে ওষুধের সাহায্যে রোগীদের অচেতন করেন তিনি, অস্ত্রোপচার শেষে আবার চেতনা ফিরিয়ে আনেন। ডা. হালদার পরিষ্কারই জানালেন, তিনি অ্যাক্টিভ ইউথেনেসিয়ার শরিক হতে রাজি হতেন না, কারণ ওষুধের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের যে প্রশিক্ষণ তিনি পেয়েছেন, সেই অচেতন প্রক্রিয়াকে আবার ফিরিয়ে আনাও তাঁর সেই শিক্ষার অঙ্গ। চিকিৎসক হিসেবে তার বাইরে যাওয়া সম্ভব নয়।

তবে প্যাসিভ ইউথেনেসিয়াকে পুরোপুরি সমর্থন করেন ডা. হালদার এবং সেটাও পুরোপুরি ব্যবহারিক দিক থেকে। তাঁর বক্তব্য, যে রোগীর সুস্থ হওয়ার কোনো আশাই নেই, তিনি মাসের পর মাস একটা হাসপাতালের একটা বেডে থেকে যাওয়া মানে আরও অনেক রোগী, যাদের সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তাদের জন্য ওই একটা বেড কম পড়ে যাওয়া। অনেক সময়ই এটা একটা বাস্তবিক সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।

পেশায় অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সুবীর নাগের বাবা মারা গেছেন ক্যানসারে। তাঁর মা-ও ক্যানসারের রোগী এবং মরণাপন্ন। সুবীর বাবার ক্ষেত্রেও যা করেছেন, মায়ের ক্ষেত্রেও তাইই করছেন। অর্থাৎ যতটুকু চিকিৎসা তাঁদের যন্ত্রণা লাঘব করতে জরুরি, সেটাই করার নির্দেশ দিয়েছেন ডাক্তারদের। কিন্তু খুব আগ্রাসি মনোভাব নিয়ে এক অসম যুদ্ধ লড়ে যাওয়ার পক্ষপাতী তিনি নন। বিশেষত যে যুদ্ধের শেষে পরাজয় সম্পূর্ণ নিশ্চিত।

সুবীর বললেন, শুধু বেঁচে থাকাই নয়, কীভাবে বেঁচে আছেন তাঁর বাবা-মা, সেটা তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ‘কোয়ালিটি অফ লাইফ' যদি নিশ্চিত না করা যায়, তা হলে ক্যানসারের রোগযন্ত্রণা এবং কষ্টকর কেমোথেরাপি, ইত্যাদি চিকিৎসা পদ্ধতি চালিয়ে নিয়ে গিয়ে বেঁচে থাকার কষ্টকে দীর্ঘায়িত করার কোনো যুক্তি তিনি দেখেন না। কাজেই সুপ্রিম কোর্টের এই রায় তাঁর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যে একজন মানুষ আগাম এই নির্দেশ দিয়ে যেতে পারেন যে তিনি কীভাবে বেঁচে থাকবেন এবং কীভাবে থাকতে চান না। সূত্র : ডয়চে ভেলে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়