কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে আগুনে পুড়ে ঘুমন্ত মামা-ভাগিনার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। ঘাতক আগুন ভস্মিভূত করে দিয়েছে আসবাবসহ দুটি বসতবাড়ি।
কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও ইউনিয়নের মধ্যম ভোমরিয়াঘোনা এলাকায় মৃত ইছহাকের দুই ছেলে প্রবাসী রশিদ আহমদ ও ছৈয়দ আলমের বাড়িতে বুধবার ভোরে এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।এতে আনুমানিক ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
নিহতরা হলেন- কক্সবাজার সদরের ইসলামপুর বামনকাটা এলাকার মৃত মোকতারের ছেলে মো. আবদুল্লাহ (১৭) ও পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলী এলাকার নাসির উদ্দিনের ছেলে মো. মিরাজ উদ্দিন শাহরিয়ার (৮)। তারা সম্পর্কে মামা-ভাগিনা। আবদুল্লাহ নাপিতখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ও শাহরিয়ার গোমাতলী এলাকার প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থী।
পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে ঈদগাঁও ইউনিয়নের স্থানীয় সদস্য আবদুল হাকিম বলেন, বুধবার ভোর তিনটার দিকে তার বাড়ির উত্তর-পূর্বপাশে প্রবাসী রশিদ আহমদ ও সৈয়দ আলমের বাড়ি থেকে আগুনের কুণ্ডলি ওঠে। হৈ চৈ শুনে এলাকার সবাই এগিয়ে গেলেও কোনোভাবেই আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। ঘণ্টা খানেকের আগুনে বাড়ির আসবাবপত্র, কাপড়-চোপড়সহ সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। মালামালের সঙ্গে অঙ্গার হয়ে গেছে রশিদের বাড়িতে বেড়াতে আসা দুই আত্মীয়।
তিনি আরো জানান, অঙ্গার হওয়া আবদুল্লাহ পুড়ে যাওয়া বাড়ির মালিক প্রবাসী রশিদ আহমদের স্ত্রীর ফুফাত ভাই। আবদুল্লাহ তার বোন সুমি আকতার ও ভাগিনা শাহরিয়ারকে নিয়ে মঙ্গলবার সকালে বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসে। রাতে মামা-ভাগিনা এক কক্ষে ঘুমায়। বাড়িতে আগুন লেগে দ্রুত আগুন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে যে যার মতো বাইরে বেরিয়ে আসে। কিন্তু ঘুমন্ত মামা-ভাগিনা বের হতে না পেরে আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে যায়। আগুনের সূত্রপাত কোথা থেকে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
খবর পেয়ে কক্সবাজার সদরের ইউএনও মো. নোমান হোসেন প্রিন্স ও ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক (তদন্ত) মিনহাজ মাহমুদ এবং ইউপি চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলম, মেম্বার প্রদোষ পাল মুন্না, সাবেক মেম্বার এহেচানুল হক, ইসলামপুর ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার ইদ্রিস রানা, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ফিরোজ আহমদ, ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নওশাদ মাহমুদসহ অন্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ইউএনও নোমান হোসেন প্রিন্স বলেন, ধারণা করা হচ্ছে কয়েলের আগুন থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। পুলিশ অঙ্গার হওয়া মরদেহ উদ্ধার করে তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে গেছে। উপজেলা প্রশাসন নিহত দু'শিশুর পরিবারকে ৫ হাজার টাকা করে সহায়তা দিয়েছে।
ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদ ভুঁইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রশাসনিক অনুমতি পেলে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :