শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৪:৫১ সকাল
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৪:৫১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আবু সাঈদ খানের মুক্তিযুদ্ধের বই ‘ফিরে দেখা একাত্তর’

সানিম আহমেদ : অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৮ তে প্রকাশিত হয়েছে লেখক, কলামিস্ট ও সমকালের উপ-সম্পাদক আবু সাঈদ খানের মুক্তিযুদ্ধের ওপরে লেখা বই 'ফিরে দেখা একাত্তর'। বইটি প্রকাশ করেছে শ্রাবণ প্রকাশনী।

বইটির বিষয়ে প্রকাশক রবীন আহসান বলেন, ‘বস্তুত গোটা বইয়ে এই ধারা ও ভাষ্য পাওয়া যায় যে, মুক্তিযুদ্ধকে ফিরে দেখতে গিয়ে লেখক সেখান থেকে আরও পেছন ফিরে তাকিয়েছেন। ইংরেজিতে যাকে বলা হয় 'রেট্রোসপেক্টিভ' বা বর্তমান ঘটনার সঙ্গে তাৎক্ষণিক বোঝাপড়ার পাশাপাশি অতীতের সঙ্গেও মিলিয়ে দেখা; তার 'ফিরে দেখা একাত্তর' সেই ধারার গ্রন্থ।

যেমন 'ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ঢেউ' গ্রামবাংলায় মুসলিম লীগপন্থী মাতবর-জোতদারদের ক্ষমতা খর্ব করে দিয়েছিল, তার 'ফার্স্টহ্যান্ড' বর্ণনা মিলবে এখানে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বইটিতে একাত্তরকে ফিরে দেখা হলেও, জাতীয় ঘটনার রূপরেখার মধ্যেই বিস্তারিত ও বিস্তৃত হয়ে ওঠে বৃহত্তর ফরিদপুরে স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ও ঘটনাপ্রবাহ।

এমনকি লেখক যখন ওপার বাংলায় নদীয়ায় শরণার্থী প্রবেশপথ বা কল্যাণীতে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প কিংবা কলকাতায় থিয়েটার রোডে বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারের দপ্তরের ঘটনাবলী বর্ণনা করেন, সেখানে ঘুরেফিরে ছায়াপাত করে বৃহত্তর ফরিদপুর।’
আবু সাঈদ খান মুক্তিযুদ্ধকালে 'উত্তাল পদ্মা' নামে একটি সংবাদপত্রও প্রকাশ ও সম্পাদনা করেছিলেন।

প্রবাসী সরকারের কাছে এর অনুমতিপত্র আনতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা পাঠককে ইতিহাসের ইত্যবসরে সাহিত্যের সুগন্ধ দেবে।
বস্তুত 'ফিরে দেখা একাত্তর' বইটিতে আবু সাঈদ খান নিজেকেও যেন ফিরে দেখেছেন।

তিনি নিজের জীবনে যেমন মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি, সাংবাদিকতা, সাহিত্য ও গবেষণার বহুমাত্রিকতা রয়েছে; একাত্তর নিয়ে বইটিতেও তার ছাপ স্পষ্ট। সহজ-সরল ও শৈল্পিক বর্ণনায় উঠে এসেছে একাত্তরের পূর্বাপর।

অস্বীকার করা যাবে না যে, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণা ও প্রকাশনা কম হয়নি। কিন্তু 'ফিরে দেখা একাত্তর’ পাঠকের মধ্যে এই দ্যোতনা সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে যে, রক্তাক্ত ওই অধ্যায় সম্পর্কে আরও গবেষণা ও প্রকাশনা প্রয়োজন। আবু সাঈদ খান এই বইয়ের দুই মলাটের মধ্যে যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও সিম্ফনিকে ধরতে চেয়েছেন, তা বিশিষ্টতার দাবি রাখে। মুক্তিযুদ্ধকে মনে করিয়ে দেওয়া ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে 'ফিরে দেখা একাত্তর' একটি স্বতন্ত্র ও সমুজ্জ্বল ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশের ইতিহাসের মহত্তম অধ্যায় মহান মুক্তিযুদ্ধের দিকে আমাদের ফিরে তাকাতেই হয়; কারণ জাতীয় নীতি, উন্নয়ন, সমৃদ্ধির গতিমুখ নির্ধারণ ও নিরীক্ষণ প্রশ্নে একাত্তরই আমাদের অনির্বাণ বাতিঘর। এর বাইরেও সাংবাদিক আবু সাঈদ খানের 'ফিরে দেখা একাত্তর' নিশ্চয়ই বাড়তি তাৎপর্য বহন করে।

আমরা জানি, তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। কেবল ৯ মাসের যোদ্ধা হিসেবে অভিজ্ঞতা নয়, ষাটের দশকের স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনে তার সম্পৃক্তির কারণে মুক্তিযুদ্ধের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষিত সম্পর্কেও তার মূল্যায়ন নিঃসন্দেহে গুরুত্ববহ। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে তিনি সক্রিয় রাজনীতি করেছেন, জনসাধারণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশেছেন; একই সঙ্গে লেখালেখি ও গবেষণা চালিয়ে গেছেন। ফলে স্বাধীনতার প্রায় পাঁচ দশক পর যখন তিনি একাত্তরের দিকে ফিরে তাকান, সেখানেও সেই ছাপ স্পষ্টতর হয়ে ওঠে।
বইটির সূচনা ঘটেছে লেখকসহ এক দল মুক্তিকামী মানুষের সীমান্ত অতিক্রম-পরবর্তী অভিজ্ঞতা দিয়ে। তারা অস্ত্র¬ ও প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশমাতৃকার স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়ার প্রত্যয়দীপ্ত।

কিন্তু লেখক নিজে ফোঁড়া ও ফোস্কার ব্যথায় জেরবার। ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনের এমন নাজুক সময়েও সীমান্তের দুই পাশের প্রকৃতির ঐক্য তার চোখ এড়ায়নি। আবু সাঈদ খান লিখেছেন, 'এপার বাংলা-ওপার বাংলা, মাঝে কোনো ছেদ নেই। নিরবচ্ছিন্ন সবুজের মেলা। প্রকৃতির এ নিয়মকে ভ্রুকুটি হেনে লাল পেন্সিল দিয়ে বিভাজন রেখা টেনেছিলেন র‌্যাডক্লিফ সাহেব।'

'ফিরে দেখা একাত্তর'-এর প্রচ্ছদ করেছেন রবীন আহসান। দাম রাখা হয়েছে ৩০০ টাকা। বইটি মেলায় শ্রাবণ প্রকাশনীর ৩২৩-৩২৫ নম্বর স্টলে পাওয়া যাবে।
আবু সাঈদ খান জন্ম ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বিভাগদীতে ১৯৫১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৭।
পরিচিতি: সিনিয়র সাংবাদিক/ মতামত গ্রহণ : সানিম আহমেদ/ সম্পাদনা: মোহাম্মদ আবদুল অদুদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়