শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৪:০০ সকাল
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘চেনা অচেনার মাঝখানের মানুষ’

ইউসুফ শরীফ : শেষ পর্যন্ত গত সপ্তাহে দুটি বই প্রকাশিত হয়েছে। ছোটগল্প গ্রন্থ- ‘চেনা অচেনার মাঝখানের মানুষ’ গত বছর প্রকাশিত হতে হতেও হয়নি, এবার হয়েছে। প্রকাশ করেছেন স্বপন দত্ত, জ্যোৎস্না পাবলিশার্স। ‘ইউরোপের রূপকথা’ প্রকাশ করেছেন গফুর হোসেন রিদম প্রকাশনাসংস্থা। রিদম প্রকাশিতব্য ছ’টি উপন্যাস নিয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক উপন্যাস’ শেষ পর্যন্ত বইমেলায় প্রকাশিত হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক আমার উপন্যাস ৭টি। বাদ পড়েছিল ‘শিকড়’ নামে উপন্যাসটি [ প্রথম প্রকাশ : ১৯৮৩ সালে সাপ্তাহিক পূর্বাণী’র বিশেষ সংখ্যায় এবং বই আকারে প্রকাশ : ২০০৫ সালে]। প্রকাশকও চান মুক্তিযুদ্ধের সাতটি উপন্যাসই থাকুক আমার এই সংকলনে। কাজেই বইমেলার পরই প্রকাশিত হোক।

আমি বইমেলার লেখক নই-বইমেলায় আমার বই বিক্রি হয় না। মেলার সময় আমি বইয়ের বিজ্ঞাপন দিই না। আমার প্রকাশিত বই নিয়ে বিশেষ আলোচনাও হয় না। কোন সংবাদপত্র আমার বইয়ের প্রচ্ছদ ছাপে না, বইমেলার খবরে নাম উল্লেখ করে না। সাড়ে চার দশক সময় ‘প্রচার মাধ্যমে’ কাটিয়ে আমি ‘অপ্রচারিত’ গেলাম-যারা আমাকে ভালবাসেন, তারা এ রকম করেই বলেন। তাদের কারও কারও কণ্ঠে আফসোস থাকলেও আমি নির্বিকার থাকি।

কেন থাকি, এ প্রসঙ্গে সমসাময়িক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কথাসাহিত্যিক শহীদ আখন্দের গল্পগ্রন্থ ‘জনতায় নির্জন’-এর কথা মনে পড়ছে, ১৯৭৬ সালে ইত্তেফাক-এর সাহিত্য সাময়িকীতে এটা এবং তাঁর সাড়া জাগানো গল্পগ্রন্থ ‘অনিবার্য বন্ধব’-এর গল্পগুলো নিয়ে আলোচনা করেছিলাম দুই কিস্তিতে। শহীদ আখন্দের ছোটগল্প নিয়ে ওই বিশদ আলোচনা কেমন করে লিখলাম, সে প্রসঙ্গ এখন লিখছি আমার ‘আজাদ-পর্ব’-এ, আশা করছি অচিরেই তার কিছু অংশ এখানে দিতে পারব।

যে জন্য শহীদ আখন্দের ‘জনতায় নির্জন’-এর কথা মনে পড়ল, তা বলে আজ শেষ করব। জনতায় নির্জন অনুভবের বিষয়। তীব্র অনুভূতির যে কোন মানুষ জনতার মাঝখানে থেকেও নির্জনতা অনুভব করতে পারেন। আবার এমন সময়ও জীবনে আসে, যখন যে কোন মানুষ জনতার মাঝখানে নির্জনতায় নিক্ষিপ্ত হতে পারেন। নির্জনতার অনুভূতির সঙ্গে সৃজনশীলতার সম্পর্ক রয়েছে এবং অনেক সময় তা অপরিমেয় সহায়তাও দেয়। অনেকের মত নির্জনতার অনুভূতিতে আচ্ছন্ন থাকার অভিজ্ঞতা আমারও রয়েছে। নির্জনতা যে কতটা প্রবাহমান-গভীরাশ্রী ও মানবের একান্ত উপভোগ্য হতে পারে, তা সচেতন মানুষের অজানা নয়। আমি হয়ত এরকমটাই মনে করেছি যে, প্রচার মাধ্যমের কেন্দ্রে থেকেও অপ্রচারিত থাকার মধ্যে উপভোগ্য কিছু আছে-আছে চলমান প্রচারণা- ¯্রােতের পাকে তলিয়ে না গিয়ে দূর প্রচারণা-তামশা অবলোকনের সুযোগও।

প্রিয় কথাসাহিত্যিক শহীদ আখন্দ অবশ্য অন্যরকম করে বলেছেন । এখন বোধহয় সেই উদ্ধৃতিটা দিতেই পারি। ২০০২ সালে প্রকাশিত আমার ‘নির্বাচিত গল্প’ গ্রন্থের আলোচনার শুরুতেই তিনি লিখেছেন : ‘এই যে ঈদসংখ্যায় আমি উপন্যাসটা লিখেছি। এটি আমি আমার প্রাণের সমস্ত শক্তি দিয়ে লিখেছি। এত ভাল উপন্যাস আগে আমি কোনদিন লিখিনি। আমার এই উপন্যাসটি আমার খুব ভাল লেগেছে। আমি বিশ্বাস করি, এটা সবার ভাল লাগবে।’ -কথাগুলো আমরা অনেকে বিশ্বাস করি।

কেউ কেউ আবার বলেও ফেলি। হয় নিজের লেখা কোন গল্প, কোন উপন্যাস, কিংবা কবিতা বা নাটক সম্পর্কে। কিন্তু না, ইউসুফ শরীফ এমন অপরিশীলিত বিশ্বাসের মানুষ নন, এমন কথা তাঁর পক্ষে ভাবা সম্ভব নয়। এজন্য যদি বিনা প্রচারে তাঁকে অবজ্ঞাতই যেতে হয়, তাই সই।” না বলে স্বস্তি পাচ্ছি না, এইটুুকু কথা আমিও লিখতে পারি বর্তমান বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কথাসাহিত্যিক শহীদ আখন্দ সম্পর্কে।

পরিচিতি : সিনিয়র সাংবাদিক ও সাহিত্যিক/সম্পাদনা: মোহাম্মদ আবদুল অদুদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়