শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৭:৫৪ সকাল
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৭:৫৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যখন ভুল ভাঙল…

ডেস্ক রিপোর্ট : বাড়ির ছাদে হাতে শটগান নিয়ে গুলি করছেন এক নারী। কালো বোরকা আর হাত-পায়ে মোজা পরা তার। পাশেই শ্মশ্রুমণ্ডিত এক যুবক- মাথায় টুপি, গলায় পাগড়ি। বারবার গুলি করার কায়দা শেখাচ্ছিলেন ওই নারীকে। বারবার ভুল করছিলেন বোরকা পরিহিত নারী, বারবার তা শুধরে দিচ্ছিলেন ওই যুবক।

স্থান : রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান।

ঘটনার দিন : সপ্তাহখানেক আগে।

পাশের বাড়ির ছাদ থেকে ওই দৃশ্যগুলোর ভিডিও এবং স্থিরচিত্র গোপনে ধারণ করেন আরেক যুবক। তাদের বেশভূষা ও কর্মকাণ্ড দেখে সন্দেহ হয় তার- তারা সম্ভবত জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত। দ্রুত ওই ভিডিও এবং স্থিরচিত্র পাঠিয়ে দেন তিনি পুলিশের কাছে। পুলিশের সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারাও তা দেখে জঙ্গি কর্মকাণ্ড বলে সন্দেহ করেন প্রাথমিকভাবে। মাঝরাতেই ওই বাসায় অভিযানের প্রস্তুতি নেন তারা। গুলশান থানা পুলিশ, পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট ও সাইবার ক্রাইমের সদস্যরা ঘিরে ফেলেন গুলশানের ওই বাসা। এরই মধ্যে তারা নিশ্চিত হন বাসাটি সাবেক এক সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার। ঘটনাস্থলেই পুলিশের সদস্যরা কথা বলেন তার সঙ্গে। তিনি বারবার তাদের কাছে জানতে চান- কেন, কী কারণে এই মধ্যরাতে তার বাসা ঘিরে এত পুলিশ সদস্য অবস্থান করছেন? একপর্যায়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, তার বাসার ছাদের একটি ঘটনার ভিডিও ও স্থিরচিত্র পেয়েছেন তারা, যা জঙ্গি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে মনে হয়েছে তাদের।

সাবেক সরকারি ওই কর্মকর্তাকে একপর্যায়ে ওই ভিডিও দেখানো হয়। তখন তিনি নিশ্চিত করেন- ভিডিওতে যে দু'জনকে দেখা গেছে তারা হলেন তার ছেলে ও ছেলের বউ। ছেলেকে তখন নিজ জিম্মায় ডেকে আনতে বলে পুলিশ। ওই কর্মকর্তা ছেলেকে ডেকে আনতে বাসার ভেতরে যান। বাইরে পুলিশ সতর্ক প্রহরায়। ছেলে আসার পর জানান, দীর্ঘদিন তাদের বাসার ছাদে কবুতর, কোয়েল ও টার্কি মুরগি পালন করেন তিনি। কিন্তু প্রায়ই কবুতর, কোয়েল ও টার্কি মুরগির ডিম খেয়ে ফেলে কাক। ঘটনার দিন কয়েকটি কাক ডিম খেতে হানা দেয় বাসার ছাদে। এরপর তিনি লাইসেন্স করা শটগান নিয়ে কাক মারতে ছুটে যান ছাদে। কিছুক্ষণ পর যান তার স্ত্রীও। স্বামীর কাছ থেকে শটগান নিয়ে কাক মারতে চান তিনিও। কিন্তু তার ছোঁড়া গুলি কাকের গায়ে না লেগে আঘাত করে বাসার দরজায়। এরপর স্ত্রীকে বারবার গুলি করার কায়দা শেখাচ্ছিলেন তিনি।

জঙ্গি কার্যক্রম সন্দেহ করে এই ঘটনা যে পুলিশকে জানানো হবে, তা তাদের ধারণারও বাইরে ছিল বলে জানান ওই যুবক। ভিডিও এবং স্থিরচিত্রের নেপথ্য কাহিনী শুনে মধ্যরাতে গুলশান থেকে ফেরত আসে পুলিশের একাধিক দল।

পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, জঙ্গিদের নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কী মাত্রায় সচেতনতাবোধ তৈরি হয়েছে, তার একটি ভালো উদাহরণ গুলশানের ঘটনাটি। পুলিশও একজন নাগরিকের দেওয়া গোপন তথ্য গুরুত্বসহকারে নিয়ে তাতে সাড়া দেয় অল্প সময়ের মধ্যে। এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছে তা যাচাই-বাছাই ও তার সত্যাসত্য নির্ণয় করে। এর আগেও বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষের দেওয়া তথ্যে অনেক জঙ্গির ক্লু পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু সাধারণ মানুষের দেওয়া তথ্য সবসময় সঠিক না হলেও সন্দেহভাজন কিছু দেখলে পুলিশকে জানানোর বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে পুলিশ। কারণ গুলশানের ঘটনায় তথ্যদাতা পুলিশকে নাজেহাল করতে তথ্য দেননি। কবুতর পালনের আড়ালে মিরপুরে আবদুল্লাহ ওরফে কবুতর আবদুল্লাহ নামে একজন জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। গুলশানের ঘটনার ক্ষেত্রে তথ্যদাতার মনে হয়েছে ছাদে অস্ত্র হাতে থাকা দু'জন জঙ্গি।

পুলিশের অন্য এক কর্মকর্তা জানান, এর আগেও উত্তরার একটি আবাসিক হোটেলে কক্ষ ভাড়া করতে আসা এক ব্যক্তির ব্যাগে ছুরি ও চাপাতি থাকার বিষয়টি জানতে পারেন হোটেল ম্যানেজার। জঙ্গি সন্দেহে তাৎক্ষণিক তা জানান তিনি পুলিশকে। পুলিশ অভিযানে গিয়ে নিশ্চিত হন ওই চাপাতি ও ছুরির সঙ্গে কোনো যোগসূত্র নেই জঙ্গিবাদের। তথ্যসূত্র :  সমকাল

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়