হ্যাপী আক্তার : মিয়ানমান থেকে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মানবেতর জীবনযাপন বিশ্ববাসি দেখেছে। এগিয়ে এসেছে জাতিসংঘসহ বিশ্বের নানা দেশগুলো। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আগামী ১০ মাসের জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান প্রায় প্রস্তুত করেছে জাতিসংঘ। চলতি বছর মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সময়ে যার ব্যয় ধরা হয়েছে, প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি ব্যয় করা হবে, খাদ্য নিরাপত্তায়, গুরুত্ব পাচ্ছে অন্যান্য খাতও। প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ সন্ত্রাসবাদের মতো ইস্যুগুলোকে গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।
জাতিসংঘের হিসাব বলছে, গত বছরের ২৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ৬ লাখ ৮৮ হাজার। আগে আসা রোহিঙ্গাসহ বর্তমানে বাংলাদেশে মিয়ানমারের এই বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ১৩ লাখ। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৬ মাসের একটি পরিকল্পনা নিয়েছিল জাতিসংঘ। যেখানে ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা।
সময়সীমা শেষ হচ্ছে এ মাসেই। তাই আগামী মাস থেকে নতুন জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান প্রায় চূড়ান্ত করেছে সংস্থাটি। ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ মাসে ১২টি খাতে খরচ হবে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের খাদ্য নিরাপত্তায়। এরপরে আছে স্বাস্থ্য, আশ্রয়কেন্দ্র পুনর্নির্মাণ ও অন্যান্য খাত। পানি, পয়ঃনিষ্কাসন ও ব্যবস্থাপনার জন্য বরাদ্দ আছে ৯৭৬ কোটি টাকা। এর বাইরে নিরাপত্তা, শিক্ষা, পুষ্টি খাতেও আলাদা আলাদা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
জাতিসংঘের এই নতুন পরিকল্পনায় আসছে বর্ষা মৌসুমকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু ঝুঁকির কথাও বলছে জাতিসংঘ। যেমন- ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসপ্রবণ হওয়ায় কক্সবাজারে রোহিঙ্গাসহ স্থানীয়দের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন। শরণার্থীদের নিরাপত্তায় সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত নয়।
বর্তমান ক্যাম্পগুলোয় জলোচ্ছ্বাস ও পাহাড় ধসের আশংকা। বৃষ্টিতে ক্যাম্পে চলাচল ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা। শরণার্থীদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত না হওয়ায় সন্ত্রাসের ঝুঁকি। রোহিঙ্গাদের মধ্যে অপরাধের মাত্রা বেড়ে গেলে স্থানীয়দের ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষতি হওয়ারও কথা বলা হয়েছে জাতিসংঘের খসড়া প্রতিবেদনে।
রোহিঙ্গাদের জন্য মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই পুরো পরিকল্পনাটি এখনও খসড়া পর্যায়ে রয়েছে। আগামী মাসের মাঝামাঝি আনুষ্ঠানিকভাবে খসড়া তালিকাটি ঘোষণা করবে জাতিসংঘ। সূত্র : চ্যানেল টোয়েন্টিফোর
আপনার মতামত লিখুন :