শিরোনাম
◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞার থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলার নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আ.লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারি ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি ◈ টাইমের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা (ভিডিও) ◈ দেশের মানুষকে ডাল-ভাত খাওয়াতে  ব্যর্থ হয়েছিল বিএনপি : প্রধানমন্ত্রী ◈ দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের ফসফরাস বোমা হামলা ◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের

প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৯:০৭ সকাল
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৯:০৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পেট ভরে ভাত খাওয়া হলো না সন্তানদের

ডেস্ক রিপোর্ট : সকাল থেকে পাশের বাড়ির আতাউর রহমানের পুকুরে মাটি কাটার কাজ করছিলেন রতন খান। শুক্রবার হওয়ায় ভোর ৫টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত মাটি কাটা হয় পুকুরে। তারপর পারিশ্রমিক নিয়ে বাড়িতে ফেরেন। সকালে খিচুড়ি খেলেও দুপুরে খাওয়ার জন্য ঘরে কিছুই নেই। তাই পারিশ্রমিকের টাকা পাওয়ার সাথে সাথে প্রতিবেশীর সাইকেল নিয়ে দুপুরে চাল কিনতে ছোটেন ঈশ্বরগঞ্জ বাজারের দিকে। পথে বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান রতন খান। তার সাথে প্রাণ যায় আরো তিন বাসযাত্রীর। আহত হয় আরো অর্ধশত। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে চরহাসেনপুর ভূইয়া ফিলিংস্টেশনের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ পর সরেজমিন বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, লাশের পাশে স্বজনদের গগনবিদারী আহাজারি। লাশের এক পাশে রতনের বাবা সাত্তার খান ও রতনের আরো দুই ভাই। অন্য পাশে রতনের স্ত্রী নুরুজাহান ও তিন সন্তান গগনবিদারী চিৎকার করে লাশ জাপটিয়ে ধরছেন। সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী রতনের চলে যাওয়া কেউ মানতে পারছেন না। খবর পেয়ে ছুটে এসেছেন তার সহকর্মী মাটি কাটার শ্রমিকেরা। রতনের লাশের পাশে এসেই চিৎকার করে ওঠেন, ‘ভাইরে আজ তো আমরার সপ্তাহ’র দিন। আজ আমরারে টাকা দিবো। তুই না কইছিলে টাকা পেয়ে চালের বস্তা কিনবে।’ মাটি কাটার শ্রমিকদের প্রতিদিনের রোজ বাদে সপ্তাহে প্রতি শুক্রবার এক সপ্তাহের পারিশ্রমিক পরিশোধ করা হয়। তখন উপস্থিত লোকজনের মধ্যে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। চোখে অশ্রু ধরে রাখতে পারেননি উপস্থিত লোকজন।

দুই দিন ধরে ঘরে চাল না থাকায় পাশের বাড়ি থেকে চাল ধার নিয়ে রান্না হচ্ছে। রাতের খাবার শেষে পাতিলে যা থাকে তা দিয়েই চলে সকালের নাশতা। দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক রতন। ছেলে রমজান পৌরসদরের চরনিখলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র, মেয়ে মিনা আক্তার পড়ে ঘাগড়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীতে। দুই বছরের নুর মোহাম্মদ এখনো মায়ের কোলে।

প্রতিদিন সকালে নাশতা খেয়ে রমজান ও মিনা স্কুলে চলে যায়। গতকাল শুক্রবার হওয়ায় কাউকে স্কুলে যেতে হয়নি। গত রাতে বেশি ভাত ছিল না বলে সকালে রান্না করা এক প্লেট খিচুড়ি তিন ভাইবোন ভাগাভাগি করে খেয়েছে। বাবা তাদের বলেছিলেন দুপুরে পেট ভরে খেতে পারবে। বাজারের দিকে চাল কিনতে ছুটেও গিয়েছিলেন। ভাগ্যের নিদারুণ উপহাসে বাবার নিথর দেহ এসেছে বাড়িতে। আসেনি চাল। রান্না হয়নি দুপুরে। শিশুসন্তানরা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। দুপুরে তাই খাবারের কথা হয়তো তাদের মনে নেই। কিন্তু রাত থেকে পরবর্তী রান্নার নিশ্চয়তাও তো নেই রতনের সংসারে। অনিশ্চয়তায় পড়েছে সন্তানদের লেখাপড়া। এ সমাজ পারবে কি রতনের সংসারের পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবলীলা থেকে বাঁচাতে। বিত্তবানদের কেউ কি এগিয়ে আসবেন রতনের সন্তানদের পাশে? নয়াদিগন্ত

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়