ডেস্ক রিপোর্ট : বঙ্গবন্ধু আমাদের নিরন্তর প্রেরণার উত্স। জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে এবছরও বইমেলায় বেশকিছু বই প্রকাশিত হয়েছে। প্রবন্ধ, গবেষণা, শিশুদের ছড়া প্রভৃতি বই রয়েছে। মানুষ ও নেতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়েও প্রকাশিত হচ্ছে গ্রন্থ। লেখা হচ্ছে ইতিহাস আশ্রয়ী উপন্যাস। লেখক-গবেষকরা বঙ্গবন্ধুকে নানা মাত্রায় বিশ্লেষণ করছেন। বইমেলায় প্রায় প্রতিটি স্টলেই রয়েছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গ্রন্থ। জাতির পিতাকে নানাভাবে তুলে ধরছেন লেখকরা। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, তার উক্তি, তার বক্তৃতা নিয়েও প্রকাশিত হয়েছে বই।
এ প্রসঙ্গে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, যতই দিন যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে আমরা নানাভাবে আবিষ্কার করছি। তার জীবনের বহু বিষয়ে নতুন নতুন তথ্য উদঘাটিত হচ্ছে। নেতা, ৭ই মার্চের ভাষণ এসব নিয়ে অনেক বই বের হচ্ছে তবে ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকে অন্বেষণ ও বিশ্লেষণ আরো অনেক অনেক দিন ধরে চলতে থাকবে।
এদিকে গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে বইমেলায় ছিল উপচে পড়া ভিড়। শেষ মুহূর্তে মেলায় বই বিক্রিও বেড়েছে বলে জানালেন প্রকাশকরা। গতকাল নতুন বই প্রকাশ পেয়েছে ২৬৬টি।
মেলায় এসেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ অবলম্বনে গ্রাফিক নভেল ‘মুজিব’ এর ৪র্থ খণ্ড। প্রকাশ করেছে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই), বাংলা একাডেমি প্রকাশ করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘কারাগারের রোজনামচা’, শামসুজ্জামান খানের ইতিহাস গ্রন্থ ‘ বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বহুমাত্রিক বিশ্লেষণ’, প্রথমা এনেছে আনিসুল হকের ইতিহাসভিত্তিক উপন্যাস ‘আলো-আঁধারের যাত্রী’, মাওলা ব্রাদার্স এনেছে আবদুল ওয়াহাবের সম্পাদনায় ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ: ইতিহাস ও তত্ত্ব-২’, অবসর প্রকাশনী এনেছে এ কে এম শাহনাওয়াজের ‘শেখ মুজিব-বঙ্গবন্ধু-জাতির পিতা’, তাম্রলিপি এনেছে জাতির পিতাকে লেখা তরুণ প্রজন্মের চিঠির সংকলন ‘প্রিয় বাবা’, ভাষাপ্রকাশ এনেছে দিলদার হোসেনের গবেষণাগ্রন্থ ‘জাপানে বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথ’, অমর প্রকাশনী এনেছে আবুল বসর আবুর গবেষণাগ্রন্থ ‘মক্তিযুদ্ধের মহানায়ক’, সালমা আফরোজের ‘জাতির পিতা’, আগামী প্রকাশনী এনেছে মুহম্মদ শফির ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’, লেখাপ্রকাশ এনেছে এস আকবর খানের ‘মুজিব থেকে সজীব’, কালিকলম প্রকাশনী এনেছে সাইফুল্লাহ নবীনের ‘বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও মুক্তিযুদ্ধের গল্প’, ছায়াবাণী পাবলিকেশন্স এনেছে ‘রক্তগোলাপ ও বঙ্গবন্ধু’, শোভাপ্রকাশ এনেছে শামসুজ্জামান শামসের ‘বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন’, কবি প্রকাশনী এনেছে নির্মলেন্দু গুণের কাব্যগ্রন্থ ‘মুজিব মঙ্গল’, বিদ্যাপ্রকাশ এনেছে ফখরে আলমের ‘জানা-অজানা বঙ্গবন্ধু’, যুক্ত প্রকাশনী এনেছে অজিত কুমার রায়ের কাব্যগ্রন্থ ‘শেখ মুজিবের কথা বলতে এসেছি’, অন্যধারা মোতালেব হোসেনের ‘চির ভাস্বর বঙ্গবন্ধু ও মানচিত্র’, বর্ণায়ন এনেছে খালেক বিন জয়েনউদ্দিনের ‘বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’, ন্যাশনাল পাবলিকেশন্স এনেছে ড. আনু মাহমুদের ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ’ ও ‘বাঙালি জাতির কলঙ্কিত অধ্যায় রক্তাক্ত ১৫ আগস্ট’, এস এম আনোয়ারের ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’, বাঁধন প্রকাশনী এনেছে রফিকুর রশীদের ‘বঙ্গবন্ধু ও সাতই মার্চের ছবি’, অন্বয় প্রকাশ এনেছে অধ্যাপক অপু উকিল সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’, শিলা প্রকাশনী এনেছে রফিকুল ইসলাম লিটনের ‘মুজিব মানেই বাংলা’, শব্দশৈলী এনেছে মিজানুর রহমানের ‘বঙ্গবন্ধু মহাকালের মহানায়ক’, অনুপম প্রকাশনী এনেছে আনিসুল হকের ‘বঙ্গবন্ধুকে চিঠি ও অন্যান্য’, মম প্রকাশনী এনেছে রেজাউল করিমের ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ অভিন্ন সত্তা’, রোদেলা এনেছে ফরিদুন্নাহার লাইলীর ‘বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা’, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র এনেছে শেখ মোঃ ইলয়াছের ‘চেতনায় শেখ মুজিব’, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এনেছে মুহম্মদ নূরুল হুদার ‘স্বাধীন জাতির স্বাধীন পিতা’, সুচয়নী এনেছে পবিত্র কুমার রায়ের ছড়াগ্রন্থ ‘ বঙ্গবন্ধু তুমি হূদয় জুড়ে’, ঝিনুক প্রকাশনী এনেছে মহসীন চৌধুরীর ‘২৩ বছরে স্বাধীনতা ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু’, পার্ল এনেছে সৈয়দা রাশিদা বারীর ‘বাংলাভাষা বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু’, চর্চা গ্রন্থ প্রকাশ এনেছে মোঃ ফয়সাল বিন আশিকের ‘বঙ্গবন্ধুর রসবোধ’, শিলা প্রকাশনী এনেছে সাদিক হাসান শুভর ‘৭ মার্চ : বাঙ্গালির বাতিঘর’, আলেয়া বুক ডিপো এনেছে নাজমা বেগম নাজুর ‘ছোটদের বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা’, লেখা প্রকাশ এনেছে রফিকুল ইসলাম রতনের ‘অগ্নিঝরা মার্চ ও বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা’,
শেষ হলো দুদিনের আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন। শুক্রবার দুদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনের শেষ দিনে একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় দক্ষিণ এশিয়ার কবিতা শীর্ষক আলোচনাপর্ব। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক কায়সার হক। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন নেপালের লেখক আভি সুবেদি, কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, অধ্যাপক সোনিয়া নিশাত আমিন এবং কবি সাদাফ সায্। বক্তারা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার কবিতা ব্যক্তিগত অনুভব এবং সামষ্টিক অঙ্গীকার উভয় সত্যকে ধারণ করে নতুন শতকে নবতর ভাষা ও আঙ্গিকে প্রকাশমান। তারা বলেন, বহমান দুঃস্বপ্নের মধ্যে কবিরাই স্বপ্ন দেখাতে পারেন। একই সঙ্গে দৈশিক ও বৈশ্বিক অনুভব ও অঙ্গীকারকে ধারণ করে কবিরাই পারেন মানবিক পৃথিবীর স্বপ্নকে বাস্তব করতে।
পরে দক্ষিণ এশিয়ার ভাষা এবং অনুবাদ শীর্ষক সমাপনী আলোচনা পর্বে বক্তব্য উপস্থাপন করেন অধ্যাপক আবদুস সেলিম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রাশিদ আসকারী, ফায়েজা হাসানাত এবং জি এইচ হাবীব। বক্তারা বলেন, অনুবাদের মধ্য দিয়ে যেমন দক্ষিণ এশিয়ার সাহিত্য পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে তেমনি মূলভাষা ব্যতীত ইংরেজি থেকে ঢালাও অনুবাদের ফলে পাঠক সাহিত্যের প্রকৃত রস থেকে বঞ্চিতও হয়। সেজন্য অনুবাদের ক্ষেত্রে ইংরেজির পাশাপাশি দক্ষিণ এশীয় নানাভাষার পারস্পরিক অনুবাদও অত্যন্ত জরুরি।
গতকাল মেলামঞ্চে আলোচনার বিষয় ছিল শওকত আলীর সাহিত্যসাধনা শীর্ষক আলোচনানুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আবু হেনা মোস্তফা এনাম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ফারজানা সিদ্দিকা এবং তারেক রেজা। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, শওকত আলী জনপ্রিয় হওয়ার জন্য কলম ধরেন নি। তিনি বাস্তবতাবিবর্জিত কোনো গল্প, উপন্যাস কখনোই লিখেন নি। শওকত আলী উপন্যাসকে কালের দর্পণ ভাবতেন। তাঁর মতো জীবনঘনিষ্ঠ লেখক সত্যিই বিরল।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল মো. মফিজুল ইসলামের পরিচালনায় ‘কালু শাহ্ শিল্পীগোষ্ঠী’ এবং সালাউদ্দীন বাদলের পরিচালনায় ‘বাংলাদেশ আওয়ামী শিল্পীগোষ্ঠী’-র পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন সমর বড়ুয়া, সালমা চৌধুরী, আহাদ চৌধুরী, আমিরুল ইসলাম এবং রীতা ভাঁদুরী। সূত্র : ইত্তেফাক