শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১১:১৫ দুপুর
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১১:১৫ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মাতৃভাষায় দ্বীনের দাওয়াত

মুফতি আহমদ আবদুল্লাহ: ভাষা মহান রাব্বুল আলামিনের এক বিরাট নেয়ামত। কুরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘দয়াময় আল্লাহ তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন, তিনিই সৃষ্টি করেছেন মানুষ, আর তিনিই শিখিয়েছেন ভাব প্রকাশ। (সুরা: আর রহমান: ১-৪)। মানুষকে ভাষা শিক্ষাদান আল্লাহর অসীম অনুগ্রহের মধ্যে অন্যতম। মানুষকে যদি ভাষার এ নেয়ামত দেয়া না হত, তাহলে বর্তমান সভ্য সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠত না।

পৃথিবীর প্রতিটি জাতি-গোষ্ঠীর মানুষের একটি নিজস্ব ভাষা আছে। সেটি তার মাতৃভাষা। এই ভাষার মাধ্যমেই মানুষ পরস্পরের কাছে মনের ভাব, আবেগ-অনুভ‚তি প্রকাশ করে থাকে। ভাবের আদান-প্রদানের প্রধানতম বাহন হলো, ভাষা। মাতৃভাষা ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় মনের ভাব পরিপূর্ণ তৃপ্তসহকারে প্রকাশ করা যায় না। তাছাড়া কোন কিছুর গভীরে প্রবেশ বা হৃদয়ঙ্গমও করা যায় না। ভাষার মাধ্যমেই ব্যক্তির বিদ্যা-বুদ্ধি, সর্বোপরি জীবনের পরিপূর্ণতা বিকাশ লাভ করে।

মাতৃভাষা শিক্ষা, চর্চা ও এর উৎকর্ষ সাধনে ইসলাম খুবই গুরুত্বারোপ করেছে। মানব সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহর ইবাদত করা। আল্লাহতায়ালা বলেন, আমি সৃষ্টি করেছি জীন ও মানুষকে এ জন্য যে, তারা কেবল আমার ইবাদত করবে।’ (সুরা জারিয়াত: ৫৬)। এ আয়াতেও বলা হয়নি, কোন ভাষাতে ইবাদত করতে হবে। আল্লাহর সীমাহীন নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় পূর্বক বিনয়চিত্তে তার প্রতি আত্মসমর্পণ করার নামই ইবাদত। আর নিজের ভাষার মাধ্যমে মানুষ প্রাণ খুলে এই আত্মসমর্পণ ও শুকরিয়া আদায়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। এ ছাড়াও সকল কামনা-বাসনা, আবেদন প্রাণ খুলে প্রকাশ করা যায় এই মাতৃভাষাতেই।
ইসলাম প্রচার-প্রসারেও মাতৃভাষার ভ‚মিকা অপরিসীম। মহান রাব্বুল আলামিন বলেছেন, তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহŸান কর হিকমত ও সদুপদেশ দ্বারা। আর তাদের সঙ্গে আলোচনা করো সদ্ভাবে। (সুরা নাহল: ১২৫)। এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয়, মাতৃভাষার মাধ্যম ব্যতীত ধর্মের প্রচার ও প্রসার তেমল ফলপ্রসূ হয় না। আহুত ব্যক্তিকে তার ভাষায় ডাকাই হলো শ্রেষ্ঠ কৌশল অবলম্বন। উপরোক্ত আয়াতে হিকমত দ্বারা কোনো কোনো ব্যাখ্যাকার মাতৃভাষাকে মাধ্যম হিসেবে গ্রহণের ইঙ্গিত দিয়েছেন। মানুষকে আল্লাহর দিকে আহŸান করার সময় এমন ভাষা, বাচনভঙ্গি, পরিশীলিত শব্দ চয়ন ও কুশলী বাক্য বিন্যাস প্রয়োগ করা উচিৎ, যাতে মানুষ সহজে বুঝতে এবং অনুপ্রাণিত হতে পারে। আমাদের প্রিয়নবী (সা.) এভাবেই মানুষকে আকৃষ্ট করতেন।

মাতৃভাষাই মান্ষু যে কোনো ভাব সহজে প্রকাশ করতে পারে। আর উপকারের দিক বিবেচনা করলে তাই সর্বোত্তম মাধ্যম। তাই কোরআনের ব্যাপারে আল্লাহ বলেন, আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। (সুরা দুখান: ৫৮)। কোন জাতির কাছে তথা সে জাতির প্রতিনিধি হিসেবে কোন রাসুলের ওপর আসমানি কিতাব নাজিল হতো, আর কোন আয়াতের অর্থ জানার জন্য অভিধান নিয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু হতো বা অনুবাদ কেন্দ্রের খোঁজ নেয়া শুরু হতো, তাহলে কী ধরনের দূরবস্থার রূপ নিতো, তা সহজেই অনুমেয়।
আমাদের মহান আদর্শ ও মানবজাতির পথ নির্দেশক মহানবী (সা.) ছিলেন স্বীয় মাতৃভাষায় অতুলনীয়। তিনি বলেছেন, আমাকে দান করা হয়েছে সর্বমর্মী বচন। (মুসলিম)। কাব্যানুরাগী আরব সমাজে আবির্ভূত রাসুল (সা.) ছিলেন আরবদের সবচেয়ে সুন্দর এবং বিশুদ্ধভাষী। তিনি মাতৃভাষা শুদ্ধ এবং সুস্পষ্টভাবে উচ্চারণ করতেন। তাই মাতৃভাষা শুদ্ধভাবে বলা আমাদের নবীর সুন্নত। সুতরাং মাতৃভাষা তথা স্বজাতির ভাষা চর্চার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই মাতৃভাষা চর্চায় আমরা আরও বেশী আগুয়ান হবো এবং মাতৃভাষার সমৃদ্ধি ও বিস্তারে সচেষ্ট হবো। লেখক: শিক্ষক, বাইতুন নূর মাদরাসা ঢাকা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়