শিরোনাম
◈ নির্বাচনের মাঝেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলার নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারি ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি ◈ টাইমের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা (ভিডিও) ◈ দেশের মানুষকে ডাল-ভাত খাওয়াতে ব্যর্থ হয়েছিল বিএনপি : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৮:২৫ সকাল
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৮:২৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শহরেও ১৮ পূর্ণ হওয়ার আগে ৪২% মেয়ের বিয়ে

ডেস্ক রিপোর্ট : বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকলেও এক জরিপে দেখা গেছে, শহরেও এখনো ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায় ৪২ শতাংশ মেয়ের। আর শিশুশ্রম বন্ধে সরকার বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিলেও এখনো শহরে ৫৫ শতাংশ শিশুশ্রমের সঙ্গে জড়িত।

জরিপে পাওয়া আরেকটি উদ্বেগজনক তথ্য হলো, শহরে এক থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে ৮২ শতাংশ নির্যাতনের শিকার। সিটি করপোরেশনে শিশু নির্যাতনের হার আরো বেশি; ৮৫ শতাংশ। নির্যাতন বলতে গায়ে হাত তোলাকে বোঝানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ইউনিসেফ এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) যৌথ জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিবিএস কার্যালয়ে ‘চাইল্ড ওয়েল বিং সার্ভে ইন আরবান এরিয়া অব বাংলাদেশ’ শিরোনামের এই জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে এই জরিপ চালানো হয়েছে।

বাল্যবিয়ে নিয়ে জরিপে দেখা গেছে, কম বয়সে গর্ভধারণ করার পর শহরের অর্ধেকেরও বেশি নারী ডাক্তারের কাছে যায় না। এই হার ৫৪ শতাংশ। সন্তান জন্মের পূর্ববর্তী সেবা নেওয়ার দিক থেকে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে সিলেট বিভাগ; মাত্র ২৯ শতাংশ। আর সবচেয়ে বেশি সেবা নেয় খুলনা বিভাগের নারীরা।

আবার সন্তান জন্মের পর প্রত্যেক শিশুকে টিকা দিতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা প্রচার চালানো হলেও জরিপে দেখা গেছে, জন্মের পর শিশুর যেসব জরুরি টিকা দেওয়া দরকার, বস্তি এলাকার ২৮ শতাংশ শিশুই সেসব টিকার আওতায় আসে না। তবে বস্তির বাইরে এলাকায় ৮৮ শতাংশ শিশুর টিকা দেওয়া হয়। অবশ্য সেখানেও বাদ পড়ে ১২ শতাংশ শিশু। জরিপে আরো দেখা গেছে, একটি শহরে জন্মের পর শিশুর জন্ম নিবন্ধন করা হয় মাত্র ২৯ শতাংশ। ৭১ শতাংশ শিশুর জন্ম নিবন্ধন কার্ড করা হয় না।

জরিপের ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিবিএস মহাপরিচালক আমির হোসেন, ইউনিসেফের আবাসিক প্রতিনিধি এডওয়ার্ড বেগবেদার, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বিকাশ কিশোর দাস, স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব কাজী আশরাফ উদ্দিনসহ অন্যরা। জরিপের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বিবিএসের যুগ্ম পরিচালক আশরাফুল হক।

জরিপের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা আশরাফুল হক জানান, ইউনিসেফের সহযোগিতায় জরিপটি পরিচালনা করা হয়েছে। এতে তথ্য সংগ্রহের জন্য ২০ হাজার ১৩৪টি খানা নির্বাচন করা হয়। এসব খানার ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ১৯ হাজার ৮৮৭ জন নারীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জরিপে সাত হাজার ৭৩৬ শিশুকে বাছাই করে তাদের মা অথবা কেয়ারটেকারের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জরিপটি করা হয়েছে নমুনা ভিত্তিতে ১৯টি শহর, সিটি করপোরেশনের আওতায় পাঁচটি বস্তি, সিটি করপোরেশনের মধ্যে বস্তির বাইরে সাতটি এলাকা এবং অন্যান্য সাতটি পৌর এলাকায়।

আশরাফুল হক বলেন, জরিপটি করার উদ্দেশ্য ছিল, বাংলাদেশের সব শহরাঞ্চলে নারী ও শিশুদের পুষ্টি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিশুদের সুরক্ষা, পানি, পয়োনিষ্কাশন সুবিধা কতটুকু তা নির্ণয় করা। বস্তি ও বস্তির বাইরে নারী ও শিশুদের সুযোগ-সুবিধা কতটা পার্থক্য, তা দেখার জন্য এই জরিপটি করা হয়েছে। মৌলিক আটটি বিষয়ে ৭৪টি নির্দেশকের ওপর এই জরিপ চালানো হয়।

বিবিএস ও ইউনিসেফ বলছে, শিক্ষা ক্ষেত্রে বস্তি এলাকার শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। প্রাথমিক শিক্ষায় বস্তির শিশুরা অন্যদের তুলনায় বেশ পিছিয়ে। শহরে যাদের বয়স ৬ থেকে ১০ বছর, এমন শিশুদের মধ্যে ৮৬ শতাংশ স্কুলে যাচ্ছে। কিন্তু বস্তি এলাকায় ৬ থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুদের এই হার ৬৯ শতাংশ। আর বস্তির বাইরের এলাকায় এই হার ৮৫ শতাংশ। মাধ্যমিক শিক্ষারও একই চিত্র। শহরে যাদের বয়স ১১ থেকে ১৫ বছর, এমন শিশুদের মধ্যে মাধ্যমিক স্কুলে যাচ্ছে ৬৩ শতাংশ। আর বস্তির বাইরের তুলনায় বস্তিতে এই হার ৪৬ শতাংশ কম। মাধ্যমিকে স্কুলে যাওয়ার হার বরিশাল বিভাগে বেশি; ৭৪ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম ঢাকা বিভাগে মাত্র ৫৯ শতাংশ।

এই জরিপে একটি পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে যে আগামী ২০২৯ সালে শহরাঞ্চলের জনসংখ্যা আট কোটি ১০ লাখে উন্নীত হবে। ২০১৫ সালে এটি ছিল পাঁচ কোটি পাঁচ লাখে। আর ২০০১ সালে ছিল তিন কোটি দুই লাখে। এ বিষয়ে ইউনিসেফের আবাসিক প্রতিনিধি বলেন, ‘প্রতিনিয়তই শহরে মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। এতে করে শহরের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ২০২৯ সালে যদি শহরের জনসংখ্যা আট কোটিতে উন্নীত হয়, তাহলে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে; শহরটি যাতে নিরাপদ থাকে।’ তিনি বলেন, শহরে বৈষম্য প্রকট হচ্ছে। বস্তি এলাকা ও বস্তি এলাকার বাইরে বৈষম্য দিন দিন বাড়ছে। এ বিষয়ে নীতি কৌশলের ওপর জোর দিতে বলেন তিনি। কালের কণ্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়