স্পাের্টস ডেস্ক : বিশ্বকাপ ঘনিয়ে আসছে, বাড়ছে উন্মাদনা। তবে উন্মাদনা-উত্তেজনার পারদ যত উর্ধ্বমুখী, তার চেয়েও বেশি তরতর করে ভিক্টোরিয়া লোপিরেভার জনপ্রিয়তা। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে আসন্ন বিশ্বকাপের ‘দূত’ ভিক্টোরিয়া লোপিরেভার নাম। হ্যাঁ, অফিসিয়ালভাবেই ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের ‘দূত’ নিয়োগ করা হয়েছে এই লাবন্যময়ী নারীকে। আর বিশেষ এই দায়িত্বই তরতর করে জনপ্রিয়তার সুউচ্চ শিখরে নিয়ে যাচ্ছে রাশিয়ার এই মডেল কন্যাকে।
পুরুষদের বিশ্বকাপে একজন নারীকে ‘দূত’ নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি নতুনই। তবে কারণটা স্পষ্টই। লোপিরেভার গ্ল্যামারের ছোঁয়ায় বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদার টুর্নামেন্টটিকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তোলা। ফুটবল বিশ্বকাপের সঙ্গে গ্ল্যামারের সমন্বয় ঘটানো নতুন কিছু নয়। ২০০৬ জার্মানি বিশ্বকাপের সমাপনী অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমেই বিশ্বব্যাপী তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন কলম্বিয়ান সংগীতশিল্পী শাকিরা।
পরে ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের থিম্ব-সংয়ের মধ্যদিয়ে শাকিরা বিশ্ব ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়ে পাকা আসনই নিয়ে ফেলেন। তার গাওয়া ‘ওলে ওলে, ওয়াকা ওয়াকা’ গানটি এখনো ফুটবলপ্রেমীদের মুখে মুখে। লোপিরেভা শাকিরার মতো বিশ্বব্যাপী উন্মাদনার ঝড় তুলতে পারবেন কিনা বলবে সময়।
তবে নিজের রূপ-লাবন্য আর মিষ্টি কথায় এরই মধ্যে ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়ে ঝড়ের সূচনা করেছেন। ২০১৫ সালে বিশ্বকাপের ‘দূত’ নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই চষে বেড়াচ্ছেন ফুটবল দুনিয়ায়।
এরই মধ্যে বিশ্ব ফুটবলের পরাশক্তি দেশগুলো সফর করে ফেলেছেন। ‘ফুটবল মানুষের জীবনকে সুন্দর করে’-এই স্লোগান নিয়ে ইংল্যান্ড থেকে ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা থেকে ব্রাজিল, এমনকি আফ্রিকা-এশিয়ারও অনেক দেশ ঘুরেছেন।
বিভিন্ন দেশঘুরে ফুটবল সংগঠক-কর্তা-দর্শকদের সঙ্গে সভা-সেমিনার করে রাশিয়া বিশ্বকাপ নিয়ে ইতিবাচক উন্মাদনা তৈরি করছেন। সর্বোপুরি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিচ্ছেন ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে স্বাগতিক রাশানদের চিন্তা-চেতনা, আগ্রহ, উন্মাদনা। ফুটিয়ে তুলছেন রাশানদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি।
৩৪ বছর বয়সী এই রুশ ললনা আদতে একজন মডেল। ২০০৩ সালে নির্বাচিত হয়েছিলেন রাশিয়ার সেরা সুন্দরী। জিতেছিলেন ‘মিস রাশিয়া-২০০৩’-এর মুকুট। মডেলিং দক্ষতার পাশাপাশি লেখাপড়াও দারুণ মেধাবী রাশিয়ার রোস্তভ প্রদেশে জন্ম নেওয়া সবুজ চোখের স্বর্ণকেশী এই সুন্দরী। মডেল হিসেবে নিজের জায়গাটা পাকা করার পাশাপাশি তাই লেখাপড়াও চালিয়ে যান লোপিরেভা। সংগীত নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি রোস্তভ স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে ব্যাচেলর ড্রিগি সম্পন্ন করেছেন। যিনি ঘুমাতে যান নতুন স্বপ্ন নিয়ে। ঘুম থেকে উঠেন নতুন পরিকল্পনা নিয়ে।
পড়াশোনা-মডেলিংয়ের পাশাপাশি প্রেমের সাম্পানও চালিয়েছেন। লোপিরেভা করেছিলেন বিয়েও। কিন্তু ২০১৩ সালে বিয়ের পর মাত্র দুই বছরই স্বামীর ঘর করতে পেরেছেন। ২০১৫ সালেই ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। সেই থেকে একাকীই আছেন।
জুনে বিশ্বকাপে লোপিরেভার আসল কাজ হবে দর্শকদের নিয়ে। ফুটবল নিয়ে উন্মাদনা বৃদ্ধির পাশাপাশি মরণঘাতি এইচআইবি বিষয়ে দর্শকদের সচেতন করবেন। বিভিন্ন দেশ থেকে যেসব দর্শক বিশ্বকাপ খেলা দেখতে রাশিয়ায় যাবেন, তাদের উদ্দেশ্যে করবেন সভা-সেমিনার। পাশাপাশি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরবেন বিশ্বকাপের খুঁটিনাটি।
শাকিরা দুনিয়া জয় করেছিলেন রূপ, গ্ল্যামার আর সুরেলা কণ্ঠের মায়া ছড়িয়ে। লোপিরেভার কণ্ঠে হয়তো শাকিরার মতো জাদু নেই। তবে শরীরে রূপ-লাবন্যের কমতি নেই। এই ৩৪ বছর বয়সেও এক ঝলকেই তরুণদের হৃদয়ে তুফান তোলার জন্য যথেষ্ট।
আপনার মতামত লিখুন :