রিকু আমির: পাক হানাদারদের আক্রমণে একেবারেই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক সামছুল আজমের প্রকৃত জন্ম তারিখ।
মুক্তিযুদ্ধকালীন এ স্মৃতিচারণ করে সোমবার দুপুরে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, মা বলছে- আমার জন্ম আষাঢ় বা শ্রাবণ মাসের দুপুরে।
যুদ্ধকালীন সময়ে ইস্ট বেঙ্গল ইনস্টিটিউশনে সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সামছুল আজম পরিবারসহ থাকতেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের পেছনে। মোঘল শাসক শায়েস্তা খানের আমলে নির্মিত দালানে থাকতেন তারা।
কীভাবে প্রকৃত জন্ম তারিখ খোয়া যায়- জানতে চাইলে সামছুল আজম বলেন, ২৬ মার্চ দুপুরে মা আমাদের খেতে দেন। হঠাৎ আমাদের চোখে পড়ে তাঁতি বাজারের দিকে বিশাল আগুনের দিকে। বাসার পেছনে ছিল শায়েস্তা খানের আমলে নির্মিত মসজিদ। এর পেছনে বুড়িগঙ্গা নদী। আগুন দেখে পরিবারের সবাই চলে যাই নদীর তীরে। সেখান থেকে নৌকা হয়ে সোজা নানার বাড়িতে যাই। মা একটু দুর্বল মনের অধিকারী ছিলেন। আমাদের বাড়িতে আক্রমণ না হওয়া সত্বেও তিনি আমাদের নিয়ে নানা বাড়ি যান।
তার নানার বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে। সামছুল আলম (৮৫) ও হামিদা বেগম (৭০) দম্পতির দুই ছেলে, দুই মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয় সামছুল আজম। খোয়া যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বাড়ি তালা দিয়ে যাওয়া হয়েছিল। শুধুমাত্র মায়ের দুই কেজি স্বর্ণ নিয়ে যাওয়া হয়। এর কয়েক মাস পর বাড়ি এসে দেখি- সব ল-ভ-, লুটপাট করা হয়েছে। ঘরের ভেতরে একটি লোহার ট্রাঙ্ক ছিল। এর মধ্যে একটি ডায়েরি ছিল, তাতে আমাদের সবার জন্ম তারিখ লিখা ছিল। এটা আর পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, বাসার চারপাশে প্রচুর পাঞ্জাব, হিন্দু লোকজন ছিল। তখন থেকেই আমরা আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছিলাম। তারপরও এলাকায় কোনো ডিস্টার্বের শিকার হতাম না।
আপনার মতামত লিখুন :