ডা. মো. তাজুল ইসলাম : দেশে প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক বেশি, এটি সত্যি কথা। এই প্রথম কোনো সংস্থা এটি বলে থাকলেও, আমরা মুখে মুখে অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। আমরা এক সময় জানতাম মেডিকেল কলেজ একটি বড় ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেখানে মেধাবীরা পড়াশোনা করে ডাক্তার হয়। বর্তমানে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের নামে নিজেদের লোক, সরকারি দলের লোক বা নিজেদের পছন্দের লোককে টাকা পয়সা দিয়ে লাইসেন্স দিচ্ছে।
দেশে এখন মাশরুমের মতো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ছড়িয়ে গেছে। এগুলোতে টাকা দিলেই শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারে। যেহেতু মেডিকেল কলেজে পড়া মানে একটি সামাজিক সম্মান, তাই যাদের টাকা আছে তাদের সন্তান সরকারি মেডিকেলে না টিকলেও বেসরকারিতে ভর্তি করিয়ে দিচ্ছে। গবেষণায় শুধু বলছেন, ডাক্তারের সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে বেকার ডাক্তার বাড়বে। বেকার ডাক্তার এখনো অনেক আছে, সামনে বাড়বে কী? মূল সমস্যা সেটি নয়। আমরা যে ডাক্তার পাচ্ছি, তারা কতটুকু মানসম্পন্ন। যেই মানের ডাক্তার তৈরি হচ্ছে, তারা কী আসলে ভালো ডাক্তার হচ্ছে? তাদের দিয়ে কী ভালো চিকিৎসা হবে?
আমরা কী দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তাদের দিয়ে টিকিয়ে রাখতে পারব? নৈতিকতার দিক থেকে এটি বড় ধরনের অপরাধ। এখন যেভাবে অতিরিক্ত জিপিএ-৫ দিয়ে ছাত্র-ছাত্রী মেধাশূন্য হচ্ছে, এটির থেকে বেশি ক্ষতি হচ্ছে অযোগ্য ডাক্তার তৈরি করা। ডাক্তারি পাস করে তো কেউ বিএ, এমএ পাস করাদের মতো সাধারণ চাকরি করবে না। তারা চিকিৎসার কাজ করবে। মানুষের জীবন-মরণের ভার তাদের কাছে।
সেই চিকিৎসাটি তারা কিভাবে দিবে? তাদের হাতে আমাদের জীবন মরণ প্রশ্ন উঠে! একটি জাতি কিভাবে নিজের জীবন নিয়ে ব্যবসা করতে পারে এটি আমাদের দেশে দেখা যায়। এটি আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় বা প্রশাসনের হয়তো সামন্যতম চিন্তাও নেই। মানহীন শিক্ষা কোথাও গ্রহণযোগ্য নয়। এর মধ্যে ডাক্তারের মতো পেশায় মেধাহীন টাকার জোরে ঢুকবে তা কখনো কাম্য নয়।
পরিচিতি : লেখক ও চিকিৎসক/মতামত গ্রহণ : গাজী খায়রুল আলম/সম্পাদনা : সানিম আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :