শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৪:৫২ সকাল
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৪:৫২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রশ্নপত্র ফাঁস রাজনৈতিক সমস্যা শিক্ষাগত সমস্যা নয় : আফসান চৌধুরী

মারুফ হাসান নাসিম : শিক্ষা সচিব স্বাধীন কোনো মানুষ না। সরকারি নীতির পক্ষ থেকেই তিনি এসব বলেছেন। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁস আসলে রাজনৈতিক সমস্যা, শিক্ষাগত সমস্যা নয়। পরীক্ষার পদ্ধতি পরিবর্তন এই সমস্যার সমাধান নয়। আমাদের দেশে শিক্ষাব্যবস্থা যারা নিয়ন্ত্রণ করেন, তারা শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে তেমন সচেতন না। গত দুই এর দশকে নব্বইয়ের পরে আমাদের দক্ষতা অনেক কমে গেছে। আমাদের রাজনৈতিক ও অন্যান্য পরিচয় অনেক বেশি হওয়ার কারণেই এই দক্ষতা কমে গেছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে শিক্ষা সচিবের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিশিষ্ট সাংবাদিক ও গবেষক আফসান চৌধুরী আমাদের অর্থনীতিকে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মানুষ দক্ষ বেশি না কম এটা নিয়ে তাদের ভাবতে হয় না, যদি তাদের নেটওয়ার্ক ঠিক থাকে। লেখাপড়া করার পড়েও নেটওয়ার্ক ও ঘুষ ছাড়া কোনো সরকারি চাকরি হয় না। সরকারের প্রতিটি বিভাগে লোক নেওয়ার সময় ঘুষ নেওয়া হয়। শিক্ষা সচিবের অফিসের লোকজন ঘুষ খাচ্ছে। আমাদের দেশে ঘুষ এখন আয়-রুজগারের জন্য একান্ত প্রয়োজন। সেই কারণে আমাদের দেশে শিক্ষার উন্নয়নের বিষয়টা গুরুতপূর্ণ নয়। দেশে যে সরকারই থাকুক না কেন সে তার নিজস্ব লোককে আয়-রুজগারের ব্যবস্থা করে দিবে।

তিনি আরও বলেন, আমি দেখেছি যে কানাডার পাঁচ বছরে সেখানকার বাঙালি অভিবাসী যারা ছিল তারা সবচেয়ে শিক্ষিত অভিবাসী জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছিল। এর একটাই কারণ, তা হলো তারা জানে শিক্ষা পেলে আমি মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ হতে পারব। বর্তমান সরকার শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির প্রতি নজর দেয়া উচিত। কিন্তু তাদের প্রয়োজন নেই। এই শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে আমার মনে হয় সবাইকে লেখাপড়া শিখিয়ে আমাদের অর্থনীতিকে চালু রাখার যে দক্ষতা দরকার সেটা আমাদের দেশে নেই।

তিনি বলেন, যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা আমাদের চালু রয়েছে, তার অর্থনৈতিক ভিত্তি হলো, যোগাযোগ ও পুঁজিবাদ। সেখানে জনগণের লেখাপড়া শিখে মধ্যবিত্ত হওয়ার দরকার নেই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সরকারি পরীক্ষার কথা ভাবতেই পারে না। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা রয়েছে তারা কিন্তু লেখাপড়ার কথাও ভাবতে হয়, আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগের কথাও ভাবতে হয়। তারপরে আবার ঘুষও দিতে হয় চাকরির জন্য।

মধ্যবিত্ত শ্রেণিটা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বদলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে বেশি ঝুঁকছে। তাদের যেকোনোভাবে একটা চাকরি পেতে হবে। বড় লোকরা সম্পূর্ণরূপে বিদেশে চলে যাচ্ছে অথবা এ দেশে যে বিদেশি স্কুল-কলেজগুলো আছে সেখানে তারা পড়ে। ওখানে তো কোন চুরি-চামারির ভয় নেই। চুরি-চামারি হয় শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠানে। দুর্নীতি দমন কমিশন কি করে আমি বুঝি না। সরকারি ব্যবস্থাটা চুরি-চামারি ও দুর্নীতি নির্ভর। এটা হালাল হয়ে গেছে, যায়েজ হয়ে গেছে এবং প্রাতিষ্ঠানিকরণ হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর অন্যন্য যেসব দেশে খারাপ অবস্থা রয়েছে সেখানেও আমাদের দেশের মতো খারাপ অবস্থা নয়। চার বছরে ৬৩টি বিষয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁস যা পৃথিবীর কোনো দেশেও এ রকম হয় না। গোল্ডেন জিপিএ পেয়ে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে তখন তারা বুঝতে পারে গোল্ডেন জিপিএর কোনো মূল্য নেই। চাকরি করতে হলে কোন লাভ হবে না গোল্ডেন জিপিএ দিয়ে। শুধু সুবিধা হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায়। হাইস্কুলেই তাদের মাথা নষ্ট করে দিচ্ছে।

সে নিজে থেকে চিন্তা করতে পারে না। সে জানেই না কীভাবে চিন্তা করতে হয়। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নির্ভর হয়ে যাওয়ায় তা ভযাবহ হয়ে যাচ্ছে। পুরো শিক্ষক গোষ্ঠী যদি চোর হয়ে যায় তাহলে শিক্ষার্থী সৎ হতে চাইলেও তা হতে পারবে না। এজন্য যেভাবে ইংলিশ মিডিয়ামের দিকে বেশি ঝুঁকছে তাতে সেখানেও কম বেতনে এবার শিক্ষার্থী নেয়া শুরু করবে। শিক্ষার মান আবার সেই একই পর্যায়ে চলে যাবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়