শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৩:২৫ রাত
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৩:২৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রূপা ধর্ষণ মামলার রায় এবং আমরা

মঞ্জুরুল আলম পান্না : রূপা ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ১২ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রায়ে আমরা অনেক বেশি আশান্বিত হই। একই সঙ্গে যখন শুনি নাটোরে ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণের মেডিকেল রিপোর্ট আসামির পক্ষে যায় তখন চরম হতাশার গ্লানি আষ্টেপৃষ্ঠে চেপে ধরে। মাত্র ১৪ কর্মদিবসে সম্পন্ন হয়েছে টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে বহুজাতিক কোম্পানির কর্মী রূপা খাতুনকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার বিচার। ৫ আসামির মধ্যে ৪ জনেরই ফাঁসি হওয়ার পাশাপাশি অপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত বাসটির মালিকানা রূপার পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সততা, দক্ষতা আর পেশাদারিত্বের পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকতে পারলে যেকোনো অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করা যায়, মামলাটির বিচারের রায় তা-ই প্রমাণ করে।

কিন্তু এমন উদাহরণ আমাদের সামনে খুব বেশি নেই। নাটোরের বড়াইগ্রামে ধর্ষণের শিকার মেয়েকে প্রমাণ হিসেবে সঙ্গে নিয়েই হতভাগা বাবাকে করতে হয় সংবাদ সম্মেলন। সেই সংবাদ সম্মেলনের ছবি গণমাধ্যমে আমরা দেখেছি। চরম ভয়, লজ্জা আর হতাশায় কুঁকরে আসা ছোট্ট মেয়েটি বাবার বুকে মুখ লুকিয়ে আছে। এমন ভয়ঙ্কর ছবি যেকোনো সুস্থ মানুষের মাথাকে নত করে দেয়। অবৈধ অর্থের বিনিময়ে সেখানকার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার, যিনি নিজেও কি না একজন নারী তার হাত দিয়ে রিপোর্ট তৈরি হয় আসামির পক্ষে!

নারী নির্যাতন দমন আইনে বাধ্যতামূলক মৃত্যুদ-ের বিধান থাকার পরেও দেশের ধর্ষণের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। রূপা ধর্ষণ ও হত্যার বিচারে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির মতো দু-একটি বিচারেও অপরাধের মাত্রা কমে আসবে বলে মনে হয় না। কারণ আমাদের সামনে তনু ধর্ষণ আর হত্যার মতো অসংখ্য ঘটনার উদাহরণ রয়েছে যেগুলোর বিচার এখনো পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি শুধু অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিতকরণ নয়, জনসচেতনতাও এক্ষেত্রে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।

ছোট্ট একটা ঘটনা দিয়ে শেষ করি। মাত্র দুদিন আগে পাবলিক বাস থেকে ঢাকার শ্যামলীতে নামছিলাম। রাত তখন সাড়ে দশটা। আমার আগে ২০/২২ বছরের একটি মেয়ে নামল। হঠাৎ করে শুনলাম মেয়েটি চিৎকার করে বলছে, ‘প্যাসেঞ্জারের কাছে মুঠোফোন নম্বর চাওয়া হয় কোন সাহসে’? বাসের হেল্পার মুঠোফোন হাতে দাঁড়িয়ে মেয়েটির পেছনে। থমকে দাঁড়ালাম। বাসটি তখনো যানজটে দাঁড়িয়ে। আশপাশে যারা ছিলেন সবাই নির্লিপ্ত। আমার মনে পড়ে গেল অনেকগুলো রূপার মুখ।

মেয়েটির কাছে বিষয়টি ভালো করে শুনে বুঝতে পারলাম বাস চালকের নির্দেশে তার সহযোগী যে কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে মেয়েটির মুঠোফোন নম্বর নেওয়ার চেষ্টা করছিল। চালকের সহযোগী ততক্ষণে বাসের দরজায় উঠে পড়েছে। আমি কাছে গিয়ে তার কৈফিয়েৎ চাইলাম। উল্টো দেখলাম আমার উপরেই তেড়ে আসছে। অপরাধের ছায়া ঘেরা ওই মুখে বসিয়ে দিলাম একটা চড়। আমি জানি না, একজন সংবাদকর্মী হিসেবে কাজটি আমার সঠিক হয়েছে কি না, অথবা জানি না ওই স্বল্প সময়ের মধ্যে তখন কী করা উচিত ছিল। আমার তখন শুধু মনে হচ্ছিল, প্রতিবাদের কোনো বিকল্প নেই।

লেখক : সাংবাদিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়