শিরোনাম
◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ নির্বাচনের মাঝেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারি ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০১:৩৯ রাত
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০১:৩৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সুন্দরি প্রতিযোগিতা: অন্তরালে হচ্ছেটা কী?

মোস্তফা কামাল গাজী: বর্তমান বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই সমানভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সুন্দরি প্রতিযোগিতা। দেশের ভেতর যারা বিজয়ী হয় তারাই কেবল অংশগ্রহণ করতে পারে ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ বা বিশ্ব সুন্দরি প্রতিযোগিতায়। ইদানীং আমাদের দেশেও এর মাতাল হাওয়া বইছে এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এতে অংশ নিচ্ছে।

ইতিহাসের প্রথম সুন্দরি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে। প্রাচীন গ্রিসে করিন্থের জনগণের দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের ফসল নতুন শহর ব্যাসিলিসের উদ্বোধন উপলক্ষে করিন্থের শাসক কিপসেলাস এই সুন্দরি প্রতিযোগিতার প্রবর্তন করেন। সে সময় এই প্রতিযোগিতাটি যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়। বিচারকরা পক্ষপাতমূলক বিচার করে কিপসেলাসের স্ত্রীকেই সেরা সুন্দরি নির্বাচিত করেন।

এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুন্দরি প্রতিযোগিতা শুরু হয় ১৮৫৪ সালে। কিন্তু তখনকার সরকারের রক্ষণশীল মনোভাবের কারণে খুব বেশি সুবিধা করতে পারে নি প্রতিযোগিতাটি। কিছুদিন পর এর ধরন একটু পরিবর্তন করে ‘ফটো সুন্দরি প্রতিযোগিতা’ নামে নতুন এক প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এভাবে কিছুদিন চলার পর ১৯২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আধুনিক সুন্দরি প্রতিযোগিতার শুরু হয়। বর্তমানে ‘মিস ইউনিভার্স অর্গানাইজেশন’ এই প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে আসছে। প্রথমদিকে এর ব্যাপ্তি আমেরিকা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন প্রতিটি দেশেই এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে। এর সঙ্গে বাড়ছে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা আর নোংরামি। আকর্ষণীয় ও স্বল্প বস্ত্রে আবৃত নারীর শরীর দেখে দেখে মানুষ হারাচ্ছে মহামূল্যবান ঈমান। নষ্ট করছে আমল। জড়িয়ে পড়ছে পাপের জালে। হচ্ছে পথভ্রষ্ট।
ইসলাম কখনোই এমন নষ্টামিকে প্রশ্রয় দেয়নি; বরং বরাবরই উপেক্ষা করে আসছে। ইসলাম মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছে শুভ্র-সফেদ জীবন গড়তে এবং বেহায়াপনা ও অশ্লীলতা থেকে বেঁচে থাকতে। ইসলাম পূর্ব যুগেও গোটা আরবে বেহায়াপনার সয়লাব বয়েছিলো। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,হে নবী! আপনি আপনার পতœী, কন্যা এবং মুমিন স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দাংশ নিজদের উপর টেনে দেয়। এতে তাদের চেনা সহজ হবে, ফলে তাদের উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। (সুরা আহজাব : ৫৯)
অন্যত্র এসেছে, তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে, মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবেনা। (সুরা আহজাব : ৩৩)

অশালীন পোশাক পরিহার ও উত্তম পোশাক পরিধানের ব্যপারে পবিত্র কুরআনে এসেছে, হে বনী আদম! আমি তোমাদের জন্য পোষাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবতীর্ণ করেছি সাজ-সজ্জার পোশাক এবং পরহেজগারির পোশাক, এটিই সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর কুদরতের অন্যতম নিদর্শন, যাতে তারা চিন্তা ভাবনা করে। (সুরা আরাফ : ২৬)

হজরত আলকামা ইবনে আবু আলকামা তার মা থেকে বর্ণনা করেন, একবার হাফসা বিনতে আব্দুর রহমান তার ফুফু উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) এর নিকটে এলেন। তখন তার পরনে ছিল একটি পাতলা ওড়না। উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা (রা.) তা ছিঁড়ে ফেললেন এবং একটি মোটা ওড়না পরিয়ে দিলেন।' (মুয়াত্তা মালেক ২/৯১৩, হাদিস : ৬)

সুন্দরি প্রতিযোগিতায় কোনো মুসলিম মেয়ে অংশগ্রহণ করতে পারে না। কারণ, এর মাধ্যমে কাফেরদের অনুকরণ করা হয়। এ ব্যাপারে হাদিসে এসেছে, যে যার অনুসরণ করবে, সে ঐ দলেরই অন্তর্ভুক্ত। (আবু দাউদ : ৫৫৯)
সুন্দরি প্রতিযোগিতা বেহায়াপনা আর অশ্লীলতাকে সমাজে ছড়িয়ে দিয়ে সমাজকে ঠেলে দেয় ধ্বংসের মুখে। অর্ধনগ্ন নারীদেহের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে উঠতি বয়সী কিশোরেরা। পড়ালেখা বাদ দিয়ে এসব নিয়েই পড়ে থাকতে চায়। তাই এসবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবী। এজন্য প্রথমত অভিভাবকে এগিয়ে আসতে হবে। ইসলামি রীতিনীতি অনুযায়ী জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। অন্যথায় যেকোনো সময় নেমে আসতে পারে ভয়ঙ্কর শাস্তি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের হেফাজত করুন। আমিন। ইউপি, ভারত

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়