শ.ম.গফুর,উখিয়া,কক্সবাজার : উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গা এপারে আসছে।
শুক্রবার ভোর রাতে ২৮৩ জন রোহিঙ্গাসহ গত চার দিনে আট শতাধিক রোহিঙ্গা মিয়ানমারের বুচিডং থেকে নাফ নদী পার হয়ে এপারে চলে এসেছে।বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এসব রোহিঙ্গার সাময়িকভাবে ট্রানজিট ক্যাম্পে আশ্রয় দিয়েছে। নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করার পর আট শতাধিক রোহিঙ্গাকে কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় দেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংসতার মুখে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে এসে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ার কারণে রাখাইনে অবস্থান করা অবশিষ্ট রোহিঙ্গারাও নিরাপত্তা ও খাদ্য সংকটের কারণে এ দেশে চলে আসতে বাধ্য হচ্ছে বলে রোহিঙ্গা নেতাদের অভিমত।
শুক্রবার ভোর রাতে ট্রানজিট ক্যাম্পের বাইরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিমূর্ষ দেখাচ্ছিল। জানতে চাওয়া হলে রোহিঙ্গারা জানান, তারা অর্ধাহারে-অনাহারে ও গৃহবন্দির মতো জীবনযাপনে মিয়ানমার সামরিক জান্তারা বাধ্য করায় তাদের এ করুণ পরিণতি হয়েছে।
বুচিডং থেকে আট সদস্যের পরিবার নিয়ে আসা আসা আলী জুহর (৪৬) জানান, বুচিডংয়ে যেসব রোহিঙ্গা এখনো দেশের মাটি কামড়ে ধরে রয়েছে তারা নানামুখী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। সেখানে দোকানপাট বলতে কিছুই নেই। খাদ্যসামগ্রী ক্রয় করার জন্য উদ্যোগ নিলেও মিয়ানমার সেনারা বাজারে যেতে বাধা দিচ্ছে। পুকুরে জাল ফেলতে দিচ্ছে না। এমনকি খাবার পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে মিয়ানমার সেনার কাছে শ্লীলতাহানির শিকার হচ্ছে রোহিঙ্গা নারীরা।
উখিয়ার মধুরছড়া ও তাজনিমারখোলা ক্যাম্প ঘুরে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা মাঝির সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হওয়ায় রাখাইনে অবস্থিত অবশিষ্ট রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসনের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। পাশাপাশি মিয়ানমার সেনাদের নেতিবাচক ভয়ংকর আচরণ উপলব্ধি করে তারা আতংকে দিনযাপন করছে। সুযোগ বুঝে অনেকেই সপরিবারে এপারে চলে আসছে। আশ্রয় নিচ্ছে বিভিন্ন ক্যাম্পে।
আপনার মতামত লিখুন :