ইলিয়াছ রিপন, মিরসরাই প্রতিনিধি: বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হাটটি উদ্বোধন করা হয় ২০১৫ সালে। উদ্বোধনের পর থেকেই সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার এখানে বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে বসছে ৫০টি দোকান। শুধু পণ্য বেচাকেনা নয়, হাটটি এখন ২ দেশের আত্মীয়দের মিলন মেলায়ও পরিণত হয়েছে।
ছাগলনাইয়ার হাটটিতে ২ দেশের ২৫টি করে দোকান রয়েছে। যারা দোকানগুলোর বরাদ্দ পেয়েছেন, তারা উভয় সীমান্তের তিন কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী। এ হাটে প্রবেশ করতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে ২০ টাকা মূল্যের টিকিট কিনতে হয়।
বাংলাদেশিরাও তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে নির্দিষ্ট রেজিস্টারে নাম, বয়স ও স্বাক্ষর দিয়ে প্রবেশের অনুমতি পাবেন। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে জন্মনিবন্ধন কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড দেখিয়ে প্রবেশ করা যাবে।
সরেজমিন হাটে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে ২ দেশের মানুষের সমাগম। কেউ পণ্য দেখছে, কেউ কিনছে, কেউবা ছবি তোলায় ব্যস্ত। অনেকেই এসেছেন ঘুরতে। ২ দেশের মানুষের মধ্যে চলছে হাসি-ঠাট্টাও। তবে বেচাকেনার দিক থেকে যেন ভারতীয় পণ্যের দোকানগুলোই একটু এগিয়ে। বাংলাদেশি পণ্যের দোকানে বেশি বিক্রি হচ্ছে মাছ ও শুঁটকি। হাটের ভেতরে রয়েছে মানি এক্সচেঞ্জ অফিস। হাটের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। বাংলাদেশ গেটে দায়িত্ব পালন করছেন বিজিবি সদস্যরা। আর ভারতীয় গেটে বিএসএফ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, হাটে যেকোনো বাংলাদেশি সর্বোচ্চ ১০০ ডলারের পণ্য কিনতে পারবেন। এখানে বিভিন্ন ধরনের বাংলাদেশি ও ভারতীয় পণ্য পাওয়া যায়। বাংলাদেশি পণ্য কিনতে ভারতীয়দেরকে ভারতীয় মুদ্রা ব্যবহার করতে হবে। একইভাবে বাংলাদেশিরাও তাদের নিজস্ব মুদ্রায় ভারতীয় পণ্য কিনতে পারবেন। প্রতি হাটে গড়ে এখানে ১০-১৫ লাখ টাকার পণ্য বেচাকেনা হচ্ছে।
তবে হাটের পণ্য নিয়ে খানিকটা অভিযোগ করেছেন মিরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন। তিনি বলেন, ‘সীমান্ত হাটে বিকিকিনি ভালো হয়। তবে ভারতীয় অনেক পণ্যই দেখা যায় মেয়াদোত্তীর্ণ।’ সংশ্লিষ্টরা আরো জানান, হাটটি এখন আর শুধু পণ্য বেচাকেনার স্থান নয়। অনেক ভারতীয় বাংলাদেশে থাকা তাদের আত্মীয়দের দেখতে সীমান্তহাটে আসেন। ফলে হাটটি এক অর্থে এখন দুই দেশের মানুষের মিলনস্থানে পরিণত হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :