শিরোনাম
◈ আবদুল্লাহ জাহাজে খাবার থাকলেও সংকট বিশুদ্ধ পানির ◈ কিছুটা কমেছে পেঁয়াজ ও সবজির দাম, বেড়েছে আলুর ◈ দেশের ৯২ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় কোনো ভাষা জানেন না, সময় এসেছে তৃতীয় ভাষার ◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র

প্রকাশিত : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৬:২০ সকাল
আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৬:২০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজনীতির মাঠে জামায়াত নেই!

ডেস্ক রিপোর্ট : কারাগারে বন্দি থাকা ২০ দলীয় জোটনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির আয়োজিত মানববন্ধন, অবস্থান বা অনশনের মতো কোনও কর্মসূচিতেই অংশ নেয়নি শরিক দল জামায়াতে ইসলামী। জোটের অন্য শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা এসব কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকলেও জামায়াতের কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল—কোনও পর্যায়ের নেতা-কর্মী-সমর্থকই ছিলেন না। যদিও জোটের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতেই জামায়াত সবসময় বিএনপির পাশে থাকবে, এমন কথা দিলেও দলটির কাউকেই দেখা যায়নি সোম, মঙ্গল ও বুধবারের কর্মসূচিতে। যদিও জামায়াত বলছে, জোটের নেতৃত্বদানকারী দল বিএনপি চায় না বলেই দলটির নেতাকর্মীরা এসব কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন না। তাদের দাবি, বিএনপির পক্ষ থেকে আহ্বান জানালেই জামায়াত এসব কর্মসূচিতে অংশ নেবে।

প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। ওই দিন থেকেই তিনি কারাবন্দি। এরই মধ্যে ওইদিন সন্ধ্যায় একটি বিবৃতি দিয়েছেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। এরপর ১১ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার ডিভিশন চেয়ে আরেকটি বিবৃতি দেন তিনি।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গত সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সারাদেশে মানববন্ধন করে বিএনপি। এরপর মঙ্গলবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে দলটি। সবশেষে বুধবার অনশন কর্মসূচি পালন করে। এই তিনদিনের কর্মসূচির কোনোটিতেই জামায়াতের নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি। অন্যান্য সময়, বিশেষ করে হেফাজতের বিক্ষোভগুলোয় জামায়াত-শিবিরের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের অনেক নেতাকে দেখা গেলেও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত বিএনপির ডাকা কোনও কর্মসূচিতেই দলটির কাউকে দেখা যায়নি।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশন কর্মসূচি শেষে কথা হয় জোটের শরিক দল বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আজকে (১৪ ফেব্রুয়ারি) আমার আশেপাশে জামায়াতের কাউকে দেখি নাই। গত তিনটি প্রোগ্রামেও তাদের কাউকে দেখা যায়নি।’

সাধারণত জামায়াতের সাধারণ কর্মীরা বিএনপির কর্মসূচিতে মাঝেমাঝে অংশ নিলেও খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটলো চোখে পড়ার মতো। এ নিয়ে বিএনপি নেতারা কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও জোট নেতারা বলছেন, এটা বিস্ময়ের ব্যাপার যে, জামায়াত একেবারেই নেই।

একটি শরিক দলের চেয়ারম্যানে ভাষ্য, ‘বিএনপিও জামায়াতের কোনও কর্মসূচিতে সমর্থনও জানায়নি। এটা প্রতিশোধও হতে পারে।’

যদিও বুধবার বিকেলে জামায়াতের ঢাকা মহানগরীর প্রভাবশালী একজন কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য জানান, ‘জামায়াতকে দেখা যাচ্ছে না, এটা ঠিক। কিন্তু না যাওয়ার নির্দেশনা ছিল, এমনটিও নয়। আমাদের নেতাকর্মীদের কাছে কেন্দ্রের বার্তা ছিল, বন্ধুরা চাইলে যাবেন, না চাইলে প্রয়োজন নেই। কারও আগ্রহ থাকলে যেতে পারেন।’ এই নেতার দাবি, ‘একেবারেই কেউ যাচ্ছেন না, বিষয়টা তা নয়। হয়তো দেখতে পারছেন না। বিএনপি অনুরোধ করলে বেশি যাবো।’

গত ২৮ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার সামনেই জোটের উদ্দেশে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মাওলানা আবদুল হালিম বলেছিলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে অনেক প্রোপাগান্ডা চলছে। কোনও প্রোপাগান্ডায় কান দেবেন না। আমরা এতদিনে যেহেতু প্রবলেম হয়নি, ইনশাল্লাহ সামনেও হবে না।’ ওইদিন বৈঠকের পর সংবাদকর্মীরা জানতে চাইলে মাওলানা আবদুল হালিম বলেছিলেন, ‘বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে জামায়াত আছে, থাকবে।’

জানতে চাইলে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের আমির মুফতি ওয়াক্কাছ বলেন, ‘আমরা আমাদের ব্যস্ততার মধ্যেও অংশ নিচ্ছি। আমি যেতে পারিনি। তবে দলের নেতাকর্মীরা গেছেন।’

জামায়াতের বিষয়ে জানতে চাইলে মুফতি ওয়াক্কাছ বলেন, ‘জামায়াত কেন আসেনি, আমরা বলতে পারবো না। নিরাপত্তার বিষয় আছে। তারা তো সরকারের টার্গেট। জামায়াতই বলতে পারবে, তারা কেন আসেনি।’

বিএনপির অনুষ্ঠিত তিনটি আয়োজনে জোট নেতাদের মধ্যে অংশ নেন, খেলাফত মজলিসের অধ্যক্ষ মাওলানা ইসহাক, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, অন্য অংশের হামদুল্লাহ আল মেহেদী, এলডিপির শাহাদাৎ হোসেন সেলিম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির খন্দকার লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, ইসলামিক পার্টির এম এ রকীব, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম প্রমুখ।

জামায়াতের একটি সূত্র জানায়, সোমবারের মানববন্ধনে শিবিরের একটি প্রতিনিধি দল সংহতি জানিয়েছে। বুধবার দুপুরে প্রেসক্লাবে জামায়াত নেতা মাওলানা আবদুল হালিম বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দেখা করে চলে আসেন।

রাজধানীর পাশাপাশি জেলা শহরগুলোয়ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিগুলোয় জামায়াতকে অংশ নিতে দেখা যায়নি। সিলেট, কক্সবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, রাজশাহী, নরসিংদী জেলার বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, এসব জায়গায়ও জামায়াতের কেউ আসেননি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘যে কর্মসূচিগুলো চলছে, সেগুলো বিএনপির একক। আমাদের সহানুভূতি আছে তাদের সঙ্গে। সহযোগিতা প্রয়োজন হলে নিশ্চয় আমরা যাবো। লোকালিও আমাদের যোগাযোগ আছে। আর জোটভিত্তিক কর্মসূচি দেওয়ার আলোচনা হয়েছে শুনেছি। জোটের কর্মসূচি হলে নিশ্চয় জামায়াত থাকবে।’বাংলাট্রিবিউন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়