শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৭:৪৯ সকাল
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৭:৪৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এক ঘণ্টায় নিঃস্ব তারা

ডেস্ক রিপোর্ট :'কিচ্ছু নাই, সব পুড়ে শেষ, একটা ভাত খাওয়ার পেস্নটও বের করতে পারিনি। ১০ বছর ধরে একটু একটু করে গোছানো সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কী খামু, কই থাকমু সবই এখন অনিশ্চিত।' বিলাপ করে কথাগুলো বলছিলেন আরজু বেগম। ছেলেমেয়েকে মানুষ করার স্বপ্ন নিয়ে রাজধানীর মিরপুরের ভাষানটেক বস্ত্মিতে ১০ বছর ধরে বসবাস করছিলেন তিনি।

একটি বিভীষিকা রাত, এক ঘণ্টার আগুন, তার সব স্বপ্ন পুড়ে ছাই করে দিয়েছে। এখন তিনি নিঃস্ব। খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। আরজু বেগমের মতো এমন নিঃস্ব হয়েছেন অসংখ্য মানুষ।

মঙ্গলবার দুপুরে সেই বস্ত্মিতে গিয়ে দেখা গেছে, পরিবার নিয়ে জীবন নির্বাহের শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে কেঁদে বিলাপ করছেন সব হারানো মানুষরা। কেউ কেউ বস্ত্মি সংলগ্ন দোকানগুলোর পুড়ে যাওয়া কাঠ বের করছেন। যাদের ঘর পুড়েছে তারা খোলা আকাশের নিচে বসে আছেন। কেউবা তাদের ঘরে অবশিষ্ট কিছু আছে কি-না তা খুঁজে দেখছেন। পুড়ে যাওয়া সবকিছু পরিষ্কার করার চেষ্টা করছেন।

রাজধানীর মিরপুরের ভাষানটেক বস্ত্মিতে রোববার রাত সোয়া ১২টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ অগ্নিকা-ে বস্ত্মি সংলগ্ন ১৫টির বেশি কাঠের দোকান, বস্ত্মিতে সাতটি থাকার ঘর ও একটি এতিমখানা পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে গেছে।
আগুন লাগার সময় লুঙ্গি-গামছা পরে জান নিয়ে বের হয়ছি আর কিছুই বের করতে পারিনি জানিয়ে বস্ত্মির আরেক বাসিন্দা মোহম্মাদ সবুজ বলেন, 'বাচ্চারা ঘরে ঘুমাচ্ছিল, শুধু তাদের কোলে নিয়ে লুঙ্গি-গামছা নিয়ে বের হয়ছি, ঘরের কোনো মালামাল বের করতে পারিনি। সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সম্বল বলতে আমার আর কিছুই নেই।'
বস্ত্মি সংলগ্ন কাঠের দোকানি দ্বীন ইসলামের হাত-পা আর মুখের কিছু অংশ পুড়ে গেছে।

তিনি বলেন, 'দোকানের পেছনেই বস্ত্মিতে ঘর আমার। আগুনে পুড়ে যাওয়ার সময় আমার দোকানে ব্যবসার দুই লাখ টাকা ছিল কিন্তু এক টাকাও বের করতে পারিনি। টাকার সঙ্গে আমার স্বপ্নগুলোও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘরে বউ-বাচ্চা ঘুমাচ্ছিল। আগুনের সময় ছুটে গিয়ে তাদের বের করেছি। তাই দোকানের মালামাল, টাকা, ঘরের জিনিসপত্র কিছুই বের করতে পারিনি।'

শুধু দ্বীন ইসলামই নন এমন ব্যবসায়ী বস্ত্মির বাসিন্দা আবুল কালাম, আব্দুর রাজ্জাক, মনোয়ারা বেগম, সোহাগ, শুক্কুর আলীরা বিলাপ করে তাদের সবকিছু হারানোর গল্প শোনাচ্ছিলেন। তারা বলছেন, তাদের আর কিছুই নেই। এখন তারা কী করবে, কী খাবে, কোথায় থাকবে? কিছুই তারা জানেন না। সব হারিয়ে আজ নিঃস্ব তারা।
শুধু তাদের ঘর, দোকানই নয় পুড়ে ছাই হয়ে গেছে সেখানের টিন-কাঠের তৈরি একটি এতিমখানাও। বস্ত্মিবাসীদের ধারণা, বৈদু্যতিক ত্রম্নটি থেকে আগুন লাগতে পারে।

ক্ষতিগ্রস্ত্ম বস্ত্মিবাসী ও দোকানিদের খোঁজখবর নিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্যানেল মেয়র ওসমান গণি। আগুনে পোড়া বস্ত্মি মঙ্গলবার পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, 'আপনারা ধৈর্য ধরেন। আপনাদের সব পুড়ে গেছে জেনেই খোঁজখবর নিতে এসেছি। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মাধ্যেমে ক্ষতিগ্রস্ত্মদের তালিকা করা হয়েছে। ডিএনসিসির মাধ্যেমে যেভাবে হোক আপনাদের কিছুটা ক্ষতিপূরণ দেয়ার চেষ্টা করা হবে। যাযাদি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়