শিরোনাম
◈ আবদুল্লাহ জাহাজে খাবার থাকলেও সংকট বিশুদ্ধ পানির ◈ কিছুটা কমেছে পেঁয়াজ ও সবজির দাম, বেড়েছে আলুর ◈ দেশের ৯২ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় কোনো ভাষা জানেন না, সময় এসেছে তৃতীয় ভাষার ◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র

প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৭:৩৮ সকাল
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৭:৩৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রয়োজনে আওয়ামী লীগ কঠোর হবে

মাইকেল : জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড হওয়ার পর বিএনপির 'নমনীয়' কর্মসূচি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে আওয়ামী লীগ। সেইসঙ্গে আবারও আন্দোলন-সংগ্রামের নামে দেশজুড়ে জ্বালাও-পোড়াও, খুন-সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা-নাশকতার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন সরকারি দলের শীর্ষ নেতারা।

আওয়ামী লীগ মনে করছে, একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় নিয়ে আগামী জুন থেকে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টায় লিপ্ত হতে পারে বিএনপি। ওই সময়ের মধ্যে গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেইসঙ্গে দুর্নীতির মামলায় কারারুদ্ধ খালেদা জিয়ার আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে দেশজুড়ে অস্থির পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে বিএনপি।

এ কারণেই বিএনপির চলমান নমনীয় আন্দোলনকে অনেকটা সন্দেহের চোখে দেখছেন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর দুই প্রভাবশালী সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক ও লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান। এই দুই নেতার দৃষ্টিতে, বিএনপি এখনই তাদের শক্তি ক্ষয় করতে চাইছে না। তারা এ মুহূর্তে নমনীয় কর্মসূচি পালন করলেও সুযোগ পেলে আবারও আন্দোলনের নামে জনগণের সম্পদ ধ্বংসের চেষ্টা করবে। তারা একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা এবং আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার অপেক্ষায় রয়েছে।

সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, সরকার ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে। সেইসঙ্গে কোনো ধরনের উস্কানির ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের দলীয়ভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন, দুর্নীতির মামলায় বন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শক্ত আন্দোলনে নামার জন্য নৈতিক সাহস পাচ্ছে না বিএনপি। এ জন্যই তাদের নেতাকর্মীরা বর্তমানে নমনীয় আন্দোলন করছেন।

তবে আগস্টের শেষের দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা আবারও উচ্ছৃঙ্খল আন্দোলনে যেতে পারেন বলে মনে করছেন ড. আবদুর রাজ্জাক। ওই সময়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসবে। আর ওই নির্বাচনে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের বেলায় অনিশ্চয়তা তৈরি হলে আবারও আন্দোলন-সংগ্রামের নামে দেশজুড়ে জ্বালাও-পোড়াও, খুন-সহিংসতা এবং বিশৃঙ্খলা-নাশকতায় জড়িয়ে পড়তে পারেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

এদিকে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা বলেছেন, দুর্নীতির মামলায় কারারুদ্ধ খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির বর্তমান আন্দোলনে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তায় নেই আওয়ামী লীগ। দলের উচ্চপর্যায় থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পর বিএনপিকে নিরুত্তাপ কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হচ্ছে। আন্দোলন-সংগ্রামের নামে জনগণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসের চেষ্টা হলে সরকার যে কোনো মূল্যে পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে। এ জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত থাকবে। সেইসঙ্গে দলের নেতাকর্মীরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকবেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান জানিয়েছেন, বিএনপি ইচ্ছা করেই নমনীয় আন্দোলন করছে- এমনটা ভাবার কোনো সুযোগ নেই। তারা যে কোনো সময় যে কোনো অঘটন ঘটাতে পারে। বিশেষ করে একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রামের নামে আবারও দেশজুড়ে জ্বালাও-পোড়াও, খুন-সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা-নাশকতাসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করতে পারে।

দলের নীতিনির্ধারক নেতারা এরই মধ্যে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গেও কয়েকজন নেতার অল্প-বিস্তর আলোচনা হয়েছে।

বর্তমানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা 'বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতির কারণে সাজাভোগ করছেন' এ কথা জানিয়ে সাংগঠনিকভাবে জনমত তৈরি করতে ১৫টি টিমে বিভক্ত হয়ে দেশব্যাপী সাংগঠনিক সফর করছেন। একই সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দিচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেছেন, খালেদা জিয়ার কারাদে র রায়ে বিএনপি নৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। রায়ের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন চালানোর মতো নৈতিক শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। ফলে শক্তি-সাহসহীন দলটি 'অহিংস' পথে থাকতে বাধ্য হয়েছে। বিশেষ করে দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার কারাদ হওয়ায় ে নেতাকর্মীরা মনোবল হারিয়ে ফেলেছেন। এ কারণেই রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার মতো শক্তি নেই বিএনপির। এটা তাদের নৈতিক পরাজয়। তাদের রাজনৈতিক ব্যর্থতা।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রগুলোর মতে, বিএনপি ধরেই নিয়েছে, তারা নির্বাচনে যাবে। এ মুহূর্তে দলটির চেয়ারপারসন কারাবন্দি। তাই নিজেদের অবশিষ্ট শক্তি ক্ষয় করতে চায় না। এ কারণে তারা আন্দোলনের কৌশল পরিবর্তন করেছে। আর বিগত দিনে সরকারবিরোধী কথিত আন্দোলনে নেমে তারা যে ভুল করেছে, তা বুঝতে পেরে দলীয় চেয়ারপারসনের শাস্তি হলেও সহিংস পথে পা বাড়ায়নি বিএনপি। সমকাল

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়