তিনি আরও বলেন, ঋতুরাজ ফাল্গুন আমাদের জন্য বিশেষ কিছু। বিশেষ এ কারণে যে, মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষার্থে আমরা এই ফাল্গুনেই আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবেও স্বীকৃতি লাভ করেছে আমাদের সবার প্রিয় ভাষা ‘বাংলা’।
নির্মলেন্দু গুণ বলেন, বসন্ত নিয়ে রবীন্দ্রনাথের প্রচুর গান রয়েছে। সেখানে বসন্তগুনম্গ্ধু কবি বসন্তের গুনগান গেয়েছেন। বরীন্দ্রনাথ তার ‘বসন্ত’ নাটকটি কবি কাজী নজরুল ইসলামকে উৎসর্গ করে বলেছিলেন যে, নজরুল হচ্ছেন বসন্তের প্রতীক। তিনি বন্দী ভারতের মানুষের কাছে বসন্তের বার্তা নিয়ে এসেছেন।’
বসন্তের প্রথম দিনটিকে ‘প্রেমদিবস’-এর স্বীকৃতির দেওয়ার দাবি জানিয়ে কবি বলেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন ডে হিসেবে পালন করা হয়, কিন্তু আমি তা পালন করি না। পহেলা ফাল্গুন, বসন্তের প্রথমদিনই হচ্ছে আমাদের ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’। বসন্তের প্রথম দিনই হচ্ছে প্রেমিক-প্রেমিকাদের জন্য প্রেমদিবস। তাদের উচিত বসন্তের প্রথম দিনটিকেই প্রেমদিবস হিসেবে পালন করা। বসন্তের প্রথমদিনটিকে ‘প্রেমদিবস’ হিসেবে স্বীকৃতির জোর দাবিও জানিয়ে রাখলেন চির বসন্তের এই কবি। বসন্ত নিয়ে কবি লিখেছেনÑ
এ না হলে বসন্ত কিসের? দোলা চাই অভ্যন্তরে
মনের ভেতর জুড়ে আরও এক মনের মর্মরে
পাতা ঝরা, স্বচক্ষে স্বকর্ণে দেখা চাঁদ, জ্যোৎস্নাময়
রাতের উল্লাসে কালো বিষ। এ না হলে বসন্ত কিসের?
গাছের জরায়ু ছিঁড়ে বেরিয়েছে অপিচ্ছিল বোধ,
ওর মুখে কুমারীর খুন, প্রসূতির প্রসন্ন প্রসূন।
কন্ঠ ভরে করি পান পরিপূর্ণ সে-পাত্র বিষের,
চাই পূর্ণ শিশিরে নির্ঘুম। এ না হলে বসন্ত কিসের?
(‘আমার বসন্ত’)
আপনার মতামত লিখুন :