শিরোনাম
◈ আবদুল্লাহ জাহাজে খাবার থাকলেও সংকট বিশুদ্ধ পানির ◈ কিছুটা কমেছে পেঁয়াজ ও সবজির দাম, বেড়েছে আলুর ◈ দেশের ৯২ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় কোনো ভাষা জানেন না, সময় এসেছে তৃতীয় ভাষার ◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র

প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৯:১৫ সকাল
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৯:১৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রোহিঙ্গা নিয়ে স্থানীয়রা আতঙ্কিত

ডেস্ক রিপোর্ট : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বিদেশি এনজিওর মদদে বাংলাদেশে থাকার স্বপ্ন দেখছে। মাদক ব্যবসা, হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের পাশাপাশি জঙ্গি কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গাদের অনেকে। প্রত্যাবাসনকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গারা প্রশাসনের সঙ্গে বড় ধরনের সংঘাতে জড়াতে পারে বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে উখিয়া ও টেকনাফের মানুষ। এসব কথা জানা গেছে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এবং সরেজমিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। রোহিঙ্গারা গত পাঁচ মাসে হত্যা ও ইয়াবা ব্যবসাসহ নানা অপরাধ সংগঠিত করেছে। ওসব অপরাধের পাশাপাশি যেকোনো সময় রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের সঙ্গে শক্তির মহড়া দেখাতে গিয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।

উখিয়ায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রতিদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি চলছেই। মিয়ারমার থেকে বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গারা নানা অশান্তি সৃষ্টি করছে। তারা আমাদের জন্য প্রকট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৬ সালের ১৩ মে টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আনসার ব্যারাকে হামলা চালিয়ে ১১টি অস্ত্র ও বিপুলসংখ্যক গুলি লুট করে নিয়ে যায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। ওই সময় তাদের গুলিতে মো. আলী হোসেন আনসার কমান্ডার নিহত হয়। এছাড়াও কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ম্যাজিস্ট্র্রেটের ওপর হামলার ঘটনা ঘটায়। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বনের রাজাখ্যাত ইউনুছ ডাকাতের গুলিতে কুতুপালং গ্রামের নিরীহ আলী চাঁনকে জীবন দিতে হয়েছে। রোহিঙ্গারা এরই মধ্যে জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে পড়েছে। তার উদাহরণস্বরূপ ২০১৭ সালের ৯ জুলাই টেকনাফের মুচনী নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন সলিডারিটি অর্গানাইজেশন অব রোহিঙ্গার (আরএসও) সদস্য দোস মোহাম্মদকে (৩৫) গ্রেফতার করে পুলিশ।

তিনি বলেন, এনজিওর কারণে রোহিঙ্গারা বেপরোয়া হয়ে উঠছে দিন দিন। এলাকার আনাচে-কানাচে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা। গভীর রাতেও রোহিঙ্গারা হাটবাজারে অবাধ চলাফেরা করে। রোহিঙ্গারা যেকোনো সময় স্থানীয়দের ওপর হামলা করতে পারে। এনজিওরা এদের লেলিয়ে দিয়ে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটাতে পারে। নামি-দামি হোটেলে রোহিঙ্গাদের চাকরি দিয়েছে এনজিওরা। তিনি আরো বলেন, সংকট উত্তরণের পথ হচ্ছে সরকার পরিচালিত এনজিও হতে হবে এবং সরকার পরিচালিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প ব্যবস্থা চালু করতে হবে। বিভিন্ন এনজিও রোহিঙ্গাদের খ্রিস্টান বানাচ্ছে। এই ধর্মান্তরকরণ এলাকায় ক্ষোভ তৈরি করছে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে রয়েছে স্থানীয়দের বিরূপ প্রতিক্রিয়া। রোহিঙ্গাদের অপরাধ বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে রোহিঙ্গারা সরকারের কাছেও একদিন বিষফোঁড়া হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবে রোহিঙ্গাদের নিয়ে সরকার এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিলে তারা বাংলাদেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এই জনপ্রতিনিধি আরো বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধ কর্মকান্ডের শেষ নেই তা মানুষের মুখে মুখে। সরকারের পক্ষ থেকে জঙ্গি তৎপরতা বন্ধে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চালাতে হবে চিরুনি অভিযান। যাতে সরকারকে কোনো সময় বিপদের সম্মুখীন হতে না হয় বলেও জানান তিনি।

এদিকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুতই শেষ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শাহাদাত হোসেন জুয়েল। তিনি মনে করেন প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত সংস্থাগুলোর কাছে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তথ্যভা-ার থাকা দরকার। অন্যতায় রোহিঙ্গাদের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা করা মুশকিল হবে।

কক্সবাজার পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ইয়েস কক্সবাজার’ এর প্রধান নির্বাহী এম ইব্রাহিম খলিল মামন বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গারা কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের প্রায় ১০ হাজার একর বনভূমিতে অবস্থান করছে। এরই মধ্যে তারা ধ্বংস করছে গহিন অরণ্য, সৃজিত বনসহ ৫ হাজার একরেরও বেশি পাহাড়। বনভূমিতে ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করা না গেলে পরিবেশ সংকটের সম্মুখীন হতে হবে কক্সবাজারবাসীকে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জঙ্গি তৎপরতার সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের বলেছেন, ‘রোহিঙ্গারা সবার জন্য হুমকিস্বরূপ। সরকারের জন্যও তারা বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একের পর এক আইনশৃঙ্খলা অবনতির ঘটছে। এদের কর্মকান্ড দেখলে মনে হয় তারা দিন দিন হিং¯্র হয়ে উঠছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জঙ্গি সৃষ্টি হবে না এ কথা বলা যাবে না। তাই এদের কঠোর হস্তে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা সবার জন্য বিপদ ভয়ে আনতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।’

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ ও উপসচিব মো. রেজাউল করিম বলেন, ক্যাম্পের কিছু রোহিঙ্গা আগে থেকেই অপরাধপ্রবণ কর্মকান্ডে জড়িত ছিল। গত ২৫ আগস্ট পরবর্তী নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মিশে তারা অপরাধ কর্মকান্ডে জড়াচ্ছে। এছাড়া তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকেও অনেক সময় নানা অপরাধ কর্মকান্ডসহ হতাহতের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক পাঁচটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। সূত্র : প্রতিদিনের সংবাদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়