শিরোনাম
◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের

প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০২:১৬ রাত
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০২:১৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

টাইলস মিস্ত্রি যখন ভিসা প্রসেসিং কর্মকর্তা!

ইসমাঈল হুসাইন ইমু : মিলন হোসেন। সৌদি আরবে টাইলসের মিস্ত্রী হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে আসার পর আর ফেরা হয়নি। থাকতেন বরিশালে কিন্তু কাজ করতেন ইতালি, বৃটেন, ভারতসহ ৭ টি দেশের এম্বেসির ‘ভিসা প্রসেসিং কর্মকর্তা’ হিসেবে! এ প্রতিবেদনের শিরোনাম পড়ে অবাক হলেও বাস্তবে এমন ঘটনাই ঘটিয়েছেন এই মিলন হোসেন। অবশ্যই তা অভিনব প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে। তবে তার শেষরক্ষা হয়নি। সেই প্রতারণার অভিযোগেই গত ৬ ফেব্রুয়ারি বরিশাল শহরের রুপাতলি হাউজিং এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৩টি মোবাইল ফোন ও ৬টি সিম। এ ঘটনায় রমনা থানায় মামলা করা হয়।

সিটিটিসি’র সাইবার সিকিউরিটি এন্ড ক্রাইম ডিভিশন জানায়, মিলন বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ভিসা প্রসেসিং, ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর নাম করে বিকাশ এর মাধ্যমে বিভিন্ন অংকের টাকা হাতিয়ে নিতেন। এক্ষেত্রে তিনি নিজেকে সংশ্লিষ্ট দেশের হাইকমিশন বা এম্বেসির কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতেন। তবে সচরাচর যেভাবে অনলাইনে বা পত্রিকায় ভিসা প্রসেসিং এর মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার কথা শোনা যায়, মিলনের প্রতারণার পদ্ধতিটি তার চেয়ে ভিন্ন। সাধারণত দেখা যায় সার্চ ইঞ্জিন গুগলে কোনো একটি স্থানের নাম দিয়ে সার্চ করলে সেই স্থান সম্পর্কিত বিভিন্ন ওয়েবসাইট লিংক ও ছবি গুগল তার ইউজারকে প্রদর্শন করে। একই সাথে ঐ স্থানটির অবস্থান সম্পর্কিত একটি দিকনির্দেশনামূলক ম্যাপ(গুগল ম্যাপ) সার্চ রেজাল্টের পাশাপাশি প্রদর্শন করে। মো. মিলন তার কেরামতিটি দেখায় ঠিক এই জায়গাতেই। ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন দেশের হাইকমিশন বা এম্বেসির ঠিকানা সার্চ দিয়ে গুগলের প্রদর্শন করা সেই ম্যাপে কৌশলে নিজের ফোন নম্বরটি বসিয়ে দেয় সে। এম্বেসির আসল ঠিকানা অপরিবর্তিত রাখে যাতে কোনো সন্দেহ কেউ না করে। ফলে কেউ যদি ঐ সকল এম্বেসির তথ্য খুঁজতে যেয়ে গুগলে সার্চ দেয় তবে ঐ ম্যাপটি প্রদর্শন করে।

গুগল সার্চ রেজাল্টে প্রদর্শিত ম্যাপ ফোন নম্বর দেখে কোন কোন সেবাপ্রত্যাশী ম্যাপে প্রদর্শিত ফোন (মো. মিলন এর বসানো) নম্বরে ফোন করে তাদের আকাংখিত সেবার ব্যাপারে কথা বলতে চান। সাধারণত এদের অধিকাংশই ভিসা সম্পর্কিত সেবার ব্যাপারেই যোগাযোগ করেন। প্রয়োজন বুঝে মিলন কখনো ভারতের আবার কখনো বা ‘ইতালির ভিসা প্রসেসিং কর্মকর্তা’ সেজে ফোনে কথা বলতেন। মিলন সাহায্যপ্রার্থীকে এম্বেসির ওয়েবসাইটের ঠিকানায় আবেদন করতে বলেন যাতে কাজের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ে। সেইসাথে ঐ সেবার ‘ফি’ বাবদ নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা তার দেয়া বিকাশ নম্বরে পাঠিয়ে দিতে বলেন। কার কি চাহিদা সে অনুযায়ী মিলন বিশ্বাসযোগ্য টাকার অংক বলতেন। ভুক্তভোগীর অজ্ঞানতাবশত ঐসব বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠিয়ে পরে বুঝতে পারেন ফোন নম্বরটি আসলে হাইকমিশন বা এম্বেসীর আসল নম্বর নয়। তারা প্রতারিত হয়েছেন।

এধরণের প্রতারণার অভিযোগ পেয়ে ঢাকাস্থ একাধিক এম্বেসি দ্বারস্থ হয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের। তদন্তে নামে সিটিটিসি। তার ধারাবাহিকতায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার কয়া হয় মিলনকে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিলন পুলিশকে জানায়, সে দীর্ঘদিন সৌদি আরবে থাকত। সেখানে টাইলসের মিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে বিভিন্নজনের সাথে মেশার সুবাদে আরবী ও হিন্দিতে অনর্গল কথা বলতে পারত। তার এ ভাষাগত দক্ষতাকেই সে কাজে লাগাত বিভিন্ন সেবাপ্রত্যাশীদের কনভিন্স করার কাজে।

প্রতারণার কাজটি সমাধা করতে মিলন ব্যবহার করত প্রি-এ্যাকটিভেটেড সিম যা অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করা। পুলিশ যাতে তাকে সনাক্ত করতে না পারে সেজন্য ঘন ঘন মোবাইল সেট পরিবর্তন করত্ একাজে তাকে সহায়তা করত কিছু অসাধু মোবাইল সিম বিক্রেতা ও ডিস্ট্রিবিউটর। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিচ্ছে সিটিটিসি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়