ফারমিনা তাসলিম : নারায়ণগঞ্জের একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষিকা প্রাইভেট পড়াতে অস্বীকৃতি জানানোয় শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে শিক্ষিকাকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগটি উঠেছে। তবে অভিযুক্তরা নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। শিক্ষিকা লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষিকা শাহীনুর পারভীন শানু নিজের ওপর নির্যাতনের বর্ণনায় তিনি বলেন, সকলের সামনেই আমাকে মেরেছে। গলায় ঘুষি দেয়া ছাড়াও আমাকে জুতা দিয়ে পিটিয়েছে।
ওই শিক্ষিকার স্বজনরা জানান, নারায়ণগঞ্জের হাজীগঞ্জ এলাকায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডারের ভাড়াবাড়িতে সপরিবারে বসবাস করেন স্কুল শিক্ষিকা শাহীনুর। রোববার রাতে তার বাসায় ঢুকে নাতিকে পড়ানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল মজিদ খন্দকার ও তার স্ত্রী। এই সময় অসুস্থতার কারণে প্রাইভেট পড়াতে না চাওয়ায় শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা।
ওই শিক্ষিকার সন্তানরা বলেন, একজন নারী ও একজন পুরুষ এসে আমার আম্মুকে মেরেছে। হাতে চাবির রিং নিয়ে তার গলায় ঘুষি দিয়েছে। আমার নানীকেও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছে।
ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বাড়ির মালিক ও এলাকাবাসী।
বাড়ির মালিক অ্যাডভোকেট নুরুল হুদা বলেন, কোনো ধরনের সমস্যা হলে তিনি আমাকে জানাতে পারতেন। কিছু না বলে আমার বাড়িতে প্রবেশ করাই তার অপরাধ। আমি এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।
প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি বলেন, আমি নিজে গিয়ে দেখলাম, কোনো ধরনের কারণ ছাড়া সে ওই নারীকে মারধর ও লাঞ্ছিত করেছে।
স্থানীয়রা জানান, যে ব্যক্তি কারণ ছাড়াই একজন নারীকে এভাবে জুতাপেটা করেছে, তার শাস্তি চাই।
শিক্ষক নির্যাতনের বিষয়টি অভিযুক্ত আইনজীবী অস্বীকার করে উক্ত আইনজীবী আবদুল মজিদ খন্দকার বলেন, আমি তাকে কোনো আঘাত করিনি। শুধুমাত্র বলেছি, কথা ভালোভাবে বলবি না হলে জুতা দিয়ে পিটাব।
তবে চিকিৎসক জানান, নির্যাতিতার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. তাহমিনা নাজনীন বলেন, শারীরিকভাবে তাকে আঘাত করা হয়েছে। আমরা এই আঘাতের চিহ্নও পেয়েছি। তবে বেশি চিহ্ন ছিল তার গলায়।
প্রায় একযুগ ধরে নারায়ণগঞ্জ শহরের হাজীগঞ্জ এলাকায় একটি কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষকতা করেন শাহীনুর পারভীন শানু।
সূত্র : সময় টিভি
আপনার মতামত লিখুন :