শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০২:০৩ রাত
আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০২:০৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঢাকার বাজারে নকল গিজার, ঠকছে সাধারণ ক্রেতারা

ইসমাঈল হুসাইন ইমু : শীতকে ঘিরে রাজধানীজুড়ে গড়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ নকল গিজার (পানি গরম করার মেশিন) তৈরির কারখানা। নামীদামী ব্রা-ের স্টিকার বসিয়ে অধিক লাভের আশায় এসব নিম্নমানের পণ্য বাজারজাত করছেন এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী। অথচ নকল গিজার ব্যবহারে যে কোনো সময় বড় ধরণের বিস্ফোরণের শঙ্কা রয়েছে।

সূত্রমতে, দীর্ঘদিন যাবৎ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা নানা আইটেম নকল পণ্যের সামগ্রি তৈরি এবং আমদানি করে নামকরা কোম্পানির প্যাকেটে ভরে বাজারজাত করছে। শুধু তাই নয়, মানুষের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য বিএসটিআই’র অনুমতি ছাড়াই ভুয়া সিল ব্যবহার করেন।

সরেজমিনে রাজধানীর ফার্মগেট, কামরাঙ্গীরচর, লালবাগ, ধোলাইখাল, যাত্রাবাড়ী এলাকায় ঘুরে এসব কারখানার সন্ধান পাওয়া গেছে। কামরাঙ্গীরের হযরতনগরের ঝাউলাহাটি এলাকায় বেশ কয়েকটি ওয়াটার হিটার (গিজার) তৈরির কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, তারা নিম্নমানের এসব গিজারের গায়ে রহিম, জেনারেল, হট পয়েন্ট, এ্যারিস্টো, জিএমজি, স্কয়ার, ফেমাসসহ বিভিন্ন নামীদামী ব্র্যান্ডের স্টিকার ব্যবহার করে বাজারজাত করছে। ফলে এ ধরনের গিজার বাসাবাড়িতে ব্যবহারের ফলে ভয়াবহ বিপদজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে।

জানা গেছে, পন্য তৈরি করতে হলে সরকারি নীতিমালা অনুসারে নিজস্ব ফ্যাক্টরি থাকতে হবে, ফায়ার লাইসেন্স থাকতে, পরিবেশ অধিদফতরের সার্টিফিকেট, ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেশন, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন, টিন সার্টিফিকেট, ও হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। কিন্তু ওই কারখানার এর কোনোটিই নেই।

রাজধানীর শান্তিবাগের বাসিন্দা নাজির খান বলেন, বাজার থেকে জেনারেল নামে একটি ওয়াটার হিটার (গিজার) নিয়ে ব্যবহার করার পর বৈদ্যুতিক স্পার্কিং হয়ে মুহূর্তেই গিজারটি নষ্ট হয়ে যায়। ইলেকট্রিক মিস্ত্রি দেখালে তিনি বলেন, এর থেকে আগুন লাগার সম্ভাবনা ছিলো। ঘটতে পারতো বড় কোনে দূর্ঘটনা। একই অভিযোগ রামপুরার গৃহবধূ তানিশা আহমেদের। তিনি বলেন, বাসায় জিএমজি ব্রান্ডের একটি গিজার লাগানোর সপ্তাহখানেকের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। পরে জিএমজির নিজস্ব সার্ভিসিং সেন্টারে নিয়ে গেলে জানা যায়, এটি নকল পণ্য। তিনি প্রতারিত হয়েছেন।

ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলের পিছনের আবুল কালাম নামে এক বিক্রেতা জানান, এক শ্রেণীর লোক এসে নিম্নমানের গিজারসহ বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স পন্য দোকানে দোকানে দিয়ে যায়। এসব বিক্রিতে কম পুঁজি ও লাভ বেশি। আর তাই বিক্রেতারা এসব বিক্রি করতে উৎসাহিত হয়।

জানা গেছে, শীত আসার সাথে সাথেই বাজারে আসে নকল গিজার বা গরম পানির হিটার। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এসব নিম্নমানের গিজারে গার্মেন্টেসের জুট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অথচ এই গিজারে গ্লাসরুল ব্যবহার করার কথা, যা আগুনে পুড়ে না। কোনো ধরনের একাডেমিক নেই, তবুও কতিপয় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি এসব নিম্নমানের গিজার তৈরি করে দোকানে স্বল্পমূল্যে সাপ্লাই দিয়ে থাকে। অধিক লাভ হওয়ায় অনেক অসাধু দোকানিরা ক্রেতাদের মিথ্যা কথা বলে এসব গিজার ক্রয়ে উদ্বুদ্ধ করে।

জানা গেছে, ন্যাশনাল, ফেমাস, জেনারেল, এ্যারিস্ট্রো, জেআরসি, এনবিআই, জিএমজি, ওয়াটার হিটার, টপ পয়েন্ট নিটো, হক অটোমেটিক পাওয়ারসহ ইলেকট্রনিক্স বিভিন্ন পণ্য বাজারে বিক্রি হচ্ছে। সরকার অনুমোদিত কিছু কোম্পানির নাম নকল করেও চলছে বিক্রি। ফলে সাধারণ ক্রেতারা আসল আর নকল বুঝতে না পেরে প্রতারিত হচ্ছেন।

ফায়ার সার্ভিস এ্যান্ড সিভিল ডিভিশনের পরিচালক (অপারেশন) মেজর শাকিল নেওয়াজ বলেন, কোনো কারখানা স্থাপন করতে হলে ফায়ার সার্ভিসের অনুমতি লাগবে। ফায়ার সার্ভিসের অনুমতি না লাগলে আমরা ওই কারখানার মালিককে আর্থিক জরিমানা করতে পারি। তবে পণ্যের মান যাচাই করবে বিএসটিআই। এছাড়া তাদের লাইসেন্স আছে কিনা সেটি দেখার দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দফতরের।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়