নুরুল আমিন হাসান: পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার আধা ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস করা হয়। আর এই চক্রের সঙ্গে ওই কেন্দ্রের সংশ্লিষ্টরা জড়িত বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন।
ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে রোববার দুপুরে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।
এর আগে ১০ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ও শেরপুর এলাকায় দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। তারা হলেন, সালাউদ্দিন, সুজন, জাহিদ হোসেন, সুফল রায় ওরফে শাওন, আল আমিন, সাইদুল ইসলাম, আবির ইসলাম নোমান, আমান উল্লাহ, বরকত উল্লাহ, শাহাদাত হোসেন স্বপন, ফাহিম ইসলাম ও তাহসিব রহমান।
আব্দুল বাতেন বলেন, 'একটি প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে যাওয়ার পর থেকে বক্স খোলা পর্যন্ত এই পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যেই প্রশ্ন ফাঁস করা হয়। প্রশ্নটি পরীক্ষা শুরুর ঠিক আগে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট আগে প্রকাশ করা হয়। এর সঙ্গে ওই কেন্দ্রের পিয়ন থেকে শুরু করে কেন্দ্র সংশ্লিষ্টরা জড়িত।'
তিনি জানান, প্রশ্নফাঁসকারী চক্রের মধ্যে গ্রেফতারকৃত সদস্যরা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক, ইমো, ভাইবার, হোয়াটসআপ গ্রুপ খুলে এসব প্রশ্নপত্র ফাঁস করতেন। এই চক্রটির সদস্যরাই চলমান এসএসসি পরীক্ষার বিভিন্ন প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ৩ হাজারে অধিক মোবাইল নাম্বার ব্লক করা হয়েছে।
যুগ্ম কমিশনার বলেন, গ্রেফতারকৃতরা এসএসসি পরীক্ষার আগে ঘোষণা করেছিল তারা যে করেই হোক প্রশ্নপত্র ফাঁস করবেন এবং তাদের কেউ আটক করতে পারবে না। কিন্তু তাদের আমরা আটক করতে সক্ষ্যম হয়েছি। এদের মধ্যে তিন ভাইও রয়েছে। তাদের একজন হলেন আহসান উল্লাহ। তিনি রাজধানীর মগবাজারের সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের ছাত্র। এছাড়াও তার অপর দুই ভাইয়ের মধ্যে একজন স্থাপত্যবিদ্যায় একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। তাদের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলায় এবং তারা রাজধানীর ইন্দিরা রোডের একটি বাসায় থাকতেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলেই বোঝা যাবে এর পেছনে শিক্ষা বোর্ড নাকি মন্ত্রণালয়ের কেউ জড়িত।
বাতেন বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি তৃনমুল পর্যায়ে গিয়ে মুল হোতাকে ধরার জন্য। তবে হাজারও হাত ঘুরে এই চক্রের হাতে প্রশ্নপত্র আসে।’
এ সময় উক্ত সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর ডিবির ডিসি শেখ নাজমুল আলম, এডিসি শাহজাহান, এডিসি গোলাম সাকলাইন সিথিল ও ডিএমপি মিডিয়ার ডিসি মাসুদুর রহমান।
আপনার মতামত লিখুন :