শিরোনাম
◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৮:২৯ সকাল
আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৮:২৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এ অনুভূতি অন্য রকম

ডেস্ক রিপোর্ট : ক্যালেন্ডারের পাতার হিসাবে বরাবর চার বছর পর ফেরা, ফিরে প্রথম ইনিংসেই ৪ উইকেট নেওয়া আর পারফরমার হিসেবে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে বসার পর প্রথম চারটি প্রশ্নই 'ফেরা' নিয়ে ধেয়ে যাওয়া- সব মিলিয়ে চারময় এক দিনই কাটল আবদুর রাজ্জাকের। প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে একপর্যায়ে বললেন বটে 'এটা জীবনেরই অংশ', তবে তার আগেই 'মনের অনুভূতি কথায় বোঝাতে পারছি না' বলে জানিয়ে দিলেন 'এ অনুভূতি অন্যরকম'। ৩৫ বছর বয়সী রাজ্জাকের এ অনুভূতি জাতীয় দলে ফেরার, যে ফেরায় মিশে ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অভিষেক মুহূর্তের মতো হূৎকম্পনও!

বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে একমাত্র যে বোলারের পাঁচশ' উইকেট আছে, তার টেস্ট ভাণ্ডারে আছে মাত্র ১২ ম্যাচ আর ২৩ উইকেট- এমন পরিসংখ্যান হয়তো দেশের জন্যই ছিল অস্বস্তিকর। বয়স পঁয়ত্রিশ পার হয়ে গেছে বলে 'ফেরা'র পথও ছিল অঘোষিতভাবে রুদ্ধ। এই তো মাত্র ক'দিন আগে, ত্রিদেশীয় সিরিজের লীগ পর্বের শেষদিন ঘরোয়া ক্রিকেটে পাঁচশ' উইকেট পাওয়ায় রাজ্জাককে শুভেচ্ছা উপহার তুলে দিয়েছিলেন ওয়ানডে স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটাররা। মনে হচ্ছিল যেন, সাবেক এক অগ্রজ ক্রিকেটারকে সম্মাননা দিচ্ছে অনুজরা। সেদিন রাজ্জাকের হাতে ৫০০ লেখা উপহার তুলে দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। পরিহাস বা কাকতাল যা-ই বলা হোক, সেই সাকিবের চোটের কারণেই জাতীয় দলের দরজা খুলল রাজ্জাকের জন্য। কিন্তু ফেরার সেই 'হরিষে'র মধ্যে 'বিষাদ' চলে এলো দিন দুয়েক বাদেই। চট্টগ্রাম টেস্টের একাদশে জায়গা মিলল না রাজ্জাকের। 'ফিরেও না ফেরা'র সেই অনুভূতি নিয়ে চলে এলেন ঢাকায়। খেললেন পঞ্চাশ ওভারি ক্রিকেটের ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের একটি ম্যাচও। আচমকা পটপরিবর্তনের ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতে ফের যোগ দিলেন জাতীয় দলের সঙ্গে। গতকাল বৃহস্পতিবারের সকাল তার জন্য নিয়ে এলো 'বৃহস্পতি'ও। টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামা বাংলাদেশ দলের এগারজনের একজনের হয়ে মিরপুরের শেরেবাংলায় পা রাখলেন রাজ্জাকও। ঠিক চার বছর পর। শেষবার নেমেছিলেন ২০১৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি। মিলের মধ্যে মিল একটিই- সেবারও প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলংকা, এবারও। তবে চট্টগ্রামের সেই টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৬ ওভার হাত ঘোরালেও দ্বিতীয় ইনিংসে আর বোলিংই পাননি। এবার বল হাতে নিলেন দ্বিতীয় ওভারেই।

চার বছর পর জাতীয় দলে ফেরা একজনের জন্য এটুকুই স্মরণীয় অর্জনের জন্য যথেষ্ট। কিন্তু লাল-সবুজের জার্সিতে ২৫১ উইকেটের (ওয়ানডেতে ২০৭, টি২০তে ৪৪) মালিক সাদা পোশাকে আর বিবর্ণ থাকলেন না, লাল বলে হয়ে উঠলেন রঙিন। ফেরালেন দিমুথ করুনারত্নে, কুশল মেন্ডিস, দিনেশ চান্দিমাল আর আশেলা গুনাথিলাকাকে। একবার সুযোগ তৈরি করলেন হ্যাটট্রিকেরও। শ্রীলংকার ইনিংস শেষে বাঁহাতি এ স্পিনারের বোলিং ফিগার দাঁড়াল- ১৬ ওভার ২ মেডেন ৬৩ রানে ৪ উইকেট। টেস্টের ক্যারিয়ারসেরা! এতদিনকার সেরা ছিল ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩২ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট। ওটুকু নিয়েই পৌঁছে গিয়েছিলেন ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে!

এমন যে রাজকীয় ফেরা, কেমন লাগছে রাজ্জাকের? আর ফিরেই যে পারফর্ম করলেন, তা কি চার বছরের উপেক্ষার জবাব? প্রশ্নগুলো উত্তর যোগ করলে যা দাঁড়ায়, তাতে ১৪ বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রবেশ করা রাজ্জাক কথাবার্তায় সংযম ও পরিণত ছাপ পাওয়া গেলেও আবেগের প্রকাশও স্পষ্ট, 'আমি আসলে জবাব হিসেবে দেখছি না। যখন যেখানে খেলার সুযোগ পেয়েছি, চেষ্টা করেছি ভালো করার। ভালো হলে খুশি হই। খারাপ হলে যে খুব মন খারাপ হয় তা না। পারফরম্যান্সকে আসলে জবাব হিসেবে বলা ঠিক হবে না। হ্যাঁ, প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জন্যই জাতীয় দলে আসাটা গুরুত্বপূর্ণ ও বড় ব্যপার। এর অনুভূতি মুখ দিয়ে বলা যায় না। ভেতরে ভেতরে অনুভব করা যায়। ভালো লাগার মতো ব্যাপার এটা।' চার বছর পর যে ফিরলেন, স্কোয়াডে ঢুকেও প্রথমে জায়গা হলো না, আবার পরের টেস্টেই বোলিং করতে নামলেন, দীর্ঘ অপেক্ষার পর ভালো লাগার এই মুহূর্তগুলোতে আসলে কতটা মধুর, হার্টবিট কি খুব স্বাভাবিক ছিল তার? 'হার্ট বিট করেছে। তবে আগের মতো বেশি করেনি। একটা উত্তেজনা তো সব সময়ই কাজ করে। টিম সিলেকশন থেকে শুরু করে খেলা পর্যন্ত'- রাজ্জাকের অকপট উত্তর।

অনুভূতিটা যে তার কতটা গভীর, কতটা তীব্র- তার আভাস হয়তো এখানেই। সূত্র : সমকাল

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়