শেখ মিরাজুল ইসলাম : ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার একটি মামলার রায় ঘোষণার দিনকে ঘিরে উত্তেজনার যে নি¤œচাপটি তৈরি করা হলো তা রাজনৈতিক আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এখন ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতে রূপ নিয়েছে! রাজনীতির এই ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে মানে ঝড়ের চোখে অবস্থান নিয়েছে ক্ষমতাসীন সরকারের পুলিশ প্রশাসন।
তাদের আচরণগত গতি-প্রকৃতি নির্ধারণ করবে ঝড়ো হাওয়াটি ক্রমে দুর্বল লঘুচাপে পরিণত হবে, নাকি আরও শক্তিশালী রূপ ধারণ করে সাধারণ জনগণের উপর আছড়ে পড়বে। ইতোমধ্যে এই ঝড়ের কারণে প্রাণের একুশের বই মেলায় বেচা-কেনার বিশাল দুরাবস্থায় প্রকাশকরা অস্থির হয়ে আছেন। অনেকে অভিযোগ করছেন, বাণিজ্য মেলা নির্বিঘেœ পার করা হয় কোনোরকম বাড়তি রাজনৈতিক টেনশন না দিয়ে, তবে বেছে বেছে বই মেলার মাসে কেন এই পরিস্থিতি? তারা মনে হয় ভুলে যান এই দেশে ব্যাংক ডাকাতের মানে অর্থের কারবারিদের মূল্য বেশি, জ্ঞানের ধারক ও বাহকদের চেয়ে! এটা হলো বর্তমান পরিস্থিতিতে মুদ্রার একপিঠ।
অন্যদিকে সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে সুশীল সমাজ এই রায়কে ঘিরে যেভাবে নানামুখী পর্যালোচনা বিশ্লেষণ করে যাচ্ছেন। দেখে মনে হচ্ছে চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো এই রায়ের কপিও সবাই হাতে পেয়ে গেছেন। কিন্তু ঘটনা তো তা নয়, তাই না? তবে রায় যাই হোক, ঘটনার অন্য পিঠে এই রায় নিয়ে মাননীয় আদালতের পর্যবেক্ষণ ও দেশের সামগ্রিক ভবিষ্যৎ বিবেচনায় বিজ্ঞ বিচারক ‘ন্যায়ের পক্ষে’ যে রায়টি দিবেন সাধারণ মানুষ আশা করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ তা নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করবে না।
কিন্তু আসলে কি তাই? এটা গণতন্ত্রের জন্য সমূহ ক্ষতি। উভয়ের তরফ থেকে ১/১১ এর নির্মম অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও বোধ করি এই সুযোগ তারা কেউ ছাড়তে চাইবে না। তবে রায় নিয়ে কারচুপি কিংবা রায়কে অবলম্বন করে পানি ঘোলা করার চেষ্টাÑ দুটোই ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে বিপজ্জনক পদক্ষেপ হবে সেটা আমজনতা রায়ের আগেই কিন্তু বুঝে গেছেন। তাদের মনের ভাষা কি কেউ শুনতে পায়?
লেখক : চিকিৎসক ও লেখক
আপনার মতামত লিখুন :