এম এ আহাদ শাহীন: “৫২ তে আমরা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছি। আমরা বাঙ্গালীরাই ভাষার জন্য লড়াই করা পৃথিবীতে একমাত্র গর্বিত জাতি। বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা বিশেষভাবে ইশারা ভাষায় কথা বলে। বাংলাদেশে বসবাসরত এক লক্ষ ষাট হাজার বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ইশারা ভাষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই ভাষার গুরুত্ব অনুধাবন করে খুব শিঘ্রই এখানে একটি ইশারা ভাষা ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হবে বলে অঙ্গীকার করলেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি জনাব রাশেদ খান মেনন।
বুধবার আগারগাঁও সমাজসেবা অধিদফতরে ‘বাংলা ইশারা ভাষা দিবস, ২০১৮’ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাশেদ খান মেনন বাংলা ভাষায় ইশারা ভাষার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অবদান উল্লেখ করে বলেন- ‘ প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মনের কথা প্রথম উপলদ্ধি করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে বই মেলায় প্রথম ইশারা ভাষার স্বীকৃতি প্রদান করেন। সুখের কথা হচ্ছে বর্তমানে ইশারা ভাষা ইউনিসেফ কর্তৃক বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি লাভ করেছে এবং সর্বোত্র উদযাপিত হচ্ছে।’
মেনন বলেন ‘বধির স্কুলের ছেলে মেয়েদের সাথে আমার একটা নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য ইশারা ভাষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলা ইশারা ভাষাকে দেশের সর্বত্র পৌছে দিতে নানাবিধ কাজ করতে হবে। অনেক বিদেশী টেলিভিশনে ইশারা ভাষা নিয়ে কাজ হচ্ছে। আমাদের দেশে কেবল বিটিভি ও দেশ টিভি ইশারা ভাষা নিয়ে অনুষ্ঠান করে যা সাধুবাদ পাবার যোগ্য। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে ইশারা ভাষা বিষয়ক কর্মকান্ড চালু করা প্রয়োজন। বর্তমান সরকার ‘প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইন- ২০১৩’ নামে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আইন প্রণয়ন করেছে। বর্তমানে আমরা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য দেশব্যাপি নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছি। চাকুরী ক্ষেত্রে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।’
বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীরা সমাজকল্যাণমন্ত্রীর কাছে একটি ইশারা ভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার দাবি করলে মন্ত্রী তাদের দাবি মেনে নিয়ে স্বল্প সময়ে একটি ইশারা ভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন।
এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল “ইশারা ভাষা উন্নয়নে, এগিয়ে যাব প্রতিজনে”। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপী উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে সমাজসেবা অধিদফতর, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংগঠনের সমন্বয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে বর্ণাঢ্য র্যালি ও সমাজসেবা অধিদফতর, সমাজসেবা ভবন, আগারগাঁও, ঢাকায় আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জিল্লার রহমান। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ নুরুল কবির। অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজসেবা অধিদফতরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বেসরকারি সংগঠনের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :