আনিস রহমান : এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র একের পর এক ফাঁস হয়েই যাচ্ছে। ফাঁসকারীরা ঘোষণা দিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করছে। এরপরও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকছে তারা। কিন্তু এবার মো. জোবাইদুল ইসলাম (২৪) নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে আটক করেছে জেলা প্রশাসন।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগে তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর মোবাইলে আজকের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাওয়া গেছে। পরীক্ষা শুরুর পর দেখা যায় জোবাইদুলের কাছ থেকে পাওয়া প্রশ্নপত্রের সঙ্গে পরীক্ষার প্রশ্নের হুবহু মিল রয়েছে। তিনি ঢাকা থেকে কুয়াকাটাগামী ঈগল পরিবহনের বাসে ছিলেন। এ সময় তাঁর ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল জব্দ করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
জোবাইদুলের বাড়ি বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার সবুজবাগ এলাকায়। তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সৈয়দ ফারুক আহম্মেদ প্রথম বলেন, ‘লিটন বৈরাগী নামের এক এনজিও কর্মী আমাদের কাছে ফোনে জানায় যে তারা এক প্রশ্ন ফাঁসকারীকে তাদের বাসের মধ্যে আটক করেছে। পরে আমরা মস্তফাপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে তাঁকে আটক করি এবং তাঁর কাছে থাকা মুঠোফোন ও ল্যাপটপ তল্লাশি করে আজকের ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র প্রশ্নের সঙ্গে হুবহু মিল খুঁজে পাই। সেই সঙ্গে প্রশ্নের উত্তরপত্রও পাওয়া যায়। প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে আরও যারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করতে তাকে থানায় পাঠানো হয়েছে। পুলিশ এখন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।’
মাদারীপুর সদর মডেল থানার কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকা জোবাইদুলের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই চক্রের অন্যদের ধরতে কাজ করেছে পুলিশ।
জানতে চাইলে আটক জোবাইদুল দাবি করেন, ‘ফেসবুকে Secret ssc 2k18 নামে একটি গ্রুপের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার সাজেশন লেনদেন করি। আমি কোনো ফাঁসকৃত প্রশ্নের সঙ্গে যুক্ত নই। আমার সঙ্গে আর কারও লেনদেনও নেই।’
ব্যাপক কড়াকড়ির মধ্য দিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি), দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা। এবার পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগেই পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। প্রশ্নপত্রের মোড়ক আধা ঘণ্টা আগে খোলার নিয়ম নেই। অভিযোগ উঠেছে, এমন কড়াকড়ির মধ্যেও পরীক্ষা শুরুর আগমুহূর্তে অন্যান্য বছরের মতো প্রশ্নপত্র ফেসবুক, ইমোর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। প্রথম আলো।
আপনার মতামত লিখুন :