শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৫:২২ সকাল
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৫:২২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মৃত সা কা চৌধুরীর ফিরে আসা কিসের লক্ষণ?

অজয় দাশগুপ্ত : আমরা ভেবেছিলাম সা কা চৌধুরী মরে গেছে যখন সব গেছে। না যায়নি। খালেদা জিয়া যেমন যেতে দেননি, তেমনি আমাদের নাগরিক সমাজও। একজন শোকপ্রস্তাাব পাঠ করেছেন। আর বাকিরা আবার মাঠে নেমেছেন তার বিরুদ্ধে। মরার পরও এতটা? খালেদা জিয়ার রাজনীতি শুদ্ধ হচ্ছে না। তার দল বিপাকে, তার বয়স বেড়েছে। তার পুত্র দেশছাড়া। একজন প্রয়াত। এরপরও দলীয় বিষয়ে গণতন্ত্র আর মুক্তিযুদ্ধের দিকে ফেরা হচ্ছে না বিএনপির। সাজার রায় বেরুবার আগে দেখলাম নাগরিক সমিতি রাস্তায় নেমে এসেছেন।

কারণ বিএনপি মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজাকার শিরোমনি সাকার জন্য দোয়া  চেয়ে শোক প্রস্তাব নিয়েছে। এই কাজটা তারা কেন করলেন? তারা কি না বুঝে, না শুনে এটি করেছেন? কখনোই না। এটাই তাদের স্ট্যান্ড পয়েন্ট। এবং তারা বুঝিয়ে দিয়েছে এ পথ তারা ছাড়বেন না। এর মানে খুব পরিষ্কার। যুদ্ধাপরাধী হলেও সা কার জন্য এই দরদ তাদের দলীয় মতামত হলে তারা কিন্তু ফাঁসির পর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতেন। করেননি।  সে সময় আশ্চর্যজনকভাবে নিরব বিএনপি আজ আবার মুখ খুলেছে। এর ভেতর যে সংকেত তাকে অনুধাবন না করলে রাজনীতি বড় ভুল করবে।

সা কা চৌধুরী এমন কোনো রাজনীতিবিদ ছিলেন না যাকে মনে না করলে বিএনপির বড় কোনো ভুল হবে। বরং তাকে সাথে রাখলে কি বিপদ ছিল আর তার জন্য কি কি বিপদ ঘটেছিল সেটা নিশ্চয়ই বিএনপি ভুলে যায়নি। তারপরও তারা এই ঝুঁকি কেন নিল? এখন এটুকু হলেও সামনে মুজাহিদ নিজামীদের স্মরণও আসছে। আসবে আরও নানা ধরনের প্রস্তাব। মূলত শাহবাগ ভিত্তিক যে আন্দোলন তার সুফল যতদিন ছিল ততদিন বিএনপির এই রাজনীতি সুবিধা করতে পারেনি। তারা যৌবনের শক্তি ও প্রাবল্যে ভয় পেয়েছিল। কারণ শাহবাগ ছিল জ্বলে ওঠার এক সোনালী পিদিম। জানি না কোন ভুলে আওয়ামী লীগ তাকে নেভানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিল। তার নিভে যাওয়া আঁচ টের  পেয়ে বিএনপি আবার রাজাকার পুনর্বাসনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। শাহবাগের শক্তি না থাকলে এদেশে কোনো যুদ্ধাপরাধীর বিচার হতো না। আর হলেও শাস্তি দেওয়া হতো কঠিন। সে কাজ হওয়ার পর তাকে নিষ্ক্রিয় করার কারণেই ফের এই অপ ইচ্ছা মুখ খুলছে।

প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে কি সা কারা মরেও মরেনি? কবর খুঁড়ে আবার লাশ টেনে ওঠানোর চেষ্টায় কি জনসমর্থন বাড়বে? আমি কোনো অন্ধ মানুষ নই। কোনো দলকানা মানুষও না। ফলে নির্মোহভাবে দেখলে বলতে হবে সে সম্ভাবনা উড়িয়ে  দেওয়া যাবে না। কারণ আমাদের রাজনীতি বড় বিচিত্র। এদেশে মানুষের মন ভুলতে যেমন সময় নেয় না তেমনি স্মরণেও কৃপণ। এই কথা ভুলে গেলে চলবে না। রাজাকারদের সাথে যোগ হয়েছে নব্য রাজাকার আর স্বাধীনতাবিরোধীদের এক বিরাট  অংশ। আওয়ামী লীগের পথভ্রষ্ট রাজনীতি আর দেশে যে অনাচার তা কিন্তু এই রাজনীতিকে  বেগবান করেছে। করছেও। জানি না কেন এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ আজ সত্যি পথহারা। কারণ বিচার বা শাস্তি হয়ে গেলেই ঘটনা শেষ হয়ে যায় না।

বিশেষত আমাদের দেশের রাজনীতিতে তা হওয়ার নয়। কে না জানে এদেশ ও সমাজে মুক্তিযুদ্ধ এখন অতীত। বড় হয়ে ওঠা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ইতিহাস বিকৃতি আর ভুল ইতিহাসের শিকার। আছে সাম্প্রদায়িকতা। আছে মরু হাওয়ার প্রভাব। আমরা সবাই জানি বদলে যাওয়া বাংলাদেশে অসংখ্য মানুষ  দোটানায়। তারা একদিকে মুক্তিযুদ্ধের সুফল ভোগী আরেকদিকে তাদের মনোজগতে আছে পাকি হাওয়া। বাংলাদেশের বহু মানুষ চায় জগাখিচুড়ী নীতিতে দেশ চলুক। তারা আওয়ামী লীগকে চায় মুক্ত জীবনের জন্য। বিএনপিকে ভালোবাসে পাকপ্রেম আর রাজাকার তোষণের জন্য। জামায়াতকে চায় আদর্শের নামে। এদের মনোভাব বুঝেই বিএনপি এমন ধরনের কথা বলছে।

সরকার শুধু বাহিনীর জোরে এর সামাল দিতে পারবে না। সুশীলেরাও না। তাই সময় থাকতে সাবধান জনগণ। এবার সাকার প্রেতাত্মা ফিরতে পারলে খবর আছে সবার। সাধু সাবধান!

লেখক : কলামিস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়