শিরোনাম
◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলার নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারি ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি ◈ টাইমের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা (ভিডিও) ◈ দেশের মানুষকে ডাল-ভাত খাওয়াতে ব্যর্থ হয়েছিল বিএনপি : প্রধানমন্ত্রী ◈ দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের ফসফরাস বোমা হামলা

প্রকাশিত : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৫:৩১ সকাল
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৫:৩১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাল খালেদার রায়: উত্তেজনা চরমে, বড় ধরনের সহিংসতার শঙ্কা!

সজিব খান: আগামীকাল ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। রায়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা হবে নাকি খালাস পাবেন তা নিয়ে সারা দেশ জুড়ে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর তৃণমূল নেতাকর্মী থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে ব্যপক আলোচনা ও সমালোচনা।

খালেদা জিয়ার সাজা হলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কি পরিমাণ অবনতি হতে পারে তা নিয়ে স্পষ্টভাবে কিছু বলা না গেলেও রায়কে সামনে রেখে বিএনপির সকল প্রস্তুতির বিস্তর পর্যালোচনা করলে এটা অন্তত ঠাহর করা যায় যে খালেদার সাজা হলে বিএনপি ও তার জোটের কর্মীরা লুঙ্গী কাছা দিয়ে মাঠে নামবে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধারণা, দুর্নীতি মামলায় দলের চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক রায় হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে বাইরে রাখতেই সরকার এ পথে হাঁটছে বলে তারা মনে করে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। রায় নেতিবাচক হলেই প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করবে বিএনপি। আর এই প্রতিবাদ কর্মসূচির জন্য ইতোমধ্যে তাঁরা  সারা দেশের নেতাকর্মীদের ঢাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে। দলটি চাইছে খালেদার রায়ের দিন নিজেদের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের একত্র করে তাদের ক্ষমতা ও প্রভাব দেখাতে। দলটির সিনিয়র নেতাকর্মীরা বেশ কয়েকবার বলেছেন যে খালেদার সাজা হলে সরকার পতনের আন্দোলনে নামবে। যদিও খালেদা জিয়া তার দলের নেতাকর্মীদের কোনো ধরনের সহিংসতায় জড়িয়ে পড়তে মানা করছেন। তারপরেও রায় ঘোষণার পর দেশ ও দেশের মানুষ ২০১৩ বা ২০১৫ সালের মতো সহিংসতা শুরু হয় কিনা তা এখন দেখার বিষয়। এদিকে আজ রায়ের পূর্বে শেষ সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন খালেদা জিয়া। সেখানে তিনি রায়কে ঘিরে নতুন কোন নির্দেশনা দেবেন কিনা বলা যাচ্ছে না।

অপরদিকে বিএনপি যেনো কোনো ধরনের সহিংসতায়ে জড়িয়ে পড়তে না পারে। দেশ আন্দোলনের নামে জ্বালাও পোড়াও করতে না পারে সে জন্য সদা তৎপর রয়েছে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আরও তাদের তৎপরতা চলছে বেশকয়েকদিন ধরেই। ৩০ জানুয়ারি হাইকোর্ট এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা, প্রিজন ভ্যানে ভাঙচুর করে আসামী ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটার পর থেকেই মূলত নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। চলছে গণগ্রেফতার। বিএনপির অভিযোগ ওই দিনের পর থেকে সারা দেশে এ পর্যন্ত ২০ দলীয় জোটের ১২শ’ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে হিসেব দেখানো হয়েছে তা এর অর্ধেকেরও কম। এছাড়া পুলিশ বলছে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা অনেকে চিহ্নত সন্ত্রাশী এবং কেউ কেউ নাশকার ছক কষছিল তাই গ্রেফতার করা হয়। বিএনপির অভিযোগ তাদেরকে কাবু করতেই পুলিশের এই গণ গ্রেফতার চলছে।

এদিকে আগামীকাল খালেদার রায়কে ঘিরে রাজধানীতে সব ধরনের মিটিং, মিছিল, সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ(ডিএমপি)।ইতোমধ্যে বড় ধরনের নাশকতা এড়াতে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে পুরো রাজধানী। বিশেষ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বুধবার থেকেই ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় কর্মরত সব সংস্থার সদস্যদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।বলা হচ্ছে সম্ভাব্য সব ধরনের অরাজকতা ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে থাকবে র‌্যাব-পুলিশ।

অন্যদিকে খালেদা জিয়ার রায়কে ঘিরে আওয়ামী লীগেও চলছে ব্যপক প্রস্তুতি। বলা হচ্ছে এ প্রস্তুতি মূলত বিএনপি কোনো ধরনের সহিংসতায় জড়িয়ে পাড়লে তা ঠেকানোর প্রস্তুতি। দলের পক্ষ থেকে সিনিয়র নেতারা বেশ কয়েকবার বলেছেন বিএনপি অরাজকতা সৃষ্টি করলে তা প্রতিহত কর হবে।দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, তারা ক্ষতাসীন দল তাই তারা চায় না দেশে কোন রকম নৈরাজ্য সৃষ্টি হোক। বিএনপি যদি উস্কানি দেয়, যদি ৩০ জানুয়ারি পুলিশের ওপর হামলার পরিস্থিতি আবারও সৃষ্টি করে তাহলে আওয়ামী লীগ চুপ থাকবে না। পুলিশকে সহযোগিতায় মাঠে নামবে। আগে থেকেই সব জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীকে সবসময় সজাগ ও সতর্ক থাকার নির্দেশনা পাঠিয়ে দিয়েছ দলটি। এছাড়া ঘোষিত কর্মসূচি না থাকলেও জনগণের জানমাল রক্ষায় আগামীকাল ৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা  রাজপথে থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।তিনি জানিয়েছেন ছাত্রলীগ অতীতের মতোই সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াবে। সব অরাজকতার বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।

এ অবস্থায় দীর্ঘদিন পর আবার মুখোমুখি হেতে চলেছে দেশের দুই বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। ৮ ফেব্রুয়ারি মাঠ দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে উভয় দল। তবে সব মিলিয়ে বুঝা যায় খেলাটা হতে চলেছে বিএনপি বনাম আওয়ামী লীগ ও প্রশাসন। তবে গ্রেফতার হতে পারে আওয়ামলীগের নেতাকর্মীরাও। কারণ যে বা যারাই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে তাকেই গ্রেফতার করবে প্রশাসন। সেক্ষেত্রে ত্রিমুখি সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটতে পারে। তবে বিএনপি তাদের আন্দোলনে কতোটা সফল হবে তা দেখার বিষয়। খালেদা জিয়ার রায় নেতিবাচক হলে বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শঙ্কা থেকেই যায়।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়