শিরোনাম
◈ ৯৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা বিলে জো বাইডেনের সাক্ষর  ◈ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর ◈ বাংলাদেশ ব্রাজিল থেকে ইথানল নিতে পারে, যা তেলের চেয়ে অনেক সস্তা: রাষ্ট্রদূত ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের  ◈ লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, চাপ পড়ছে গ্রামে ◈ বাংলাদেশে কাতারের বিনিয়োগ সম্প্রসারণের বিপুল সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা  ◈ হিট স্ট্রোকে রাজধানীতে রিকশা চালকের মৃত্যু

প্রকাশিত : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৭:৫৭ সকাল
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৭:৫৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সেবার নামে অর্থ লুটছে ১৭ এনজিও

ডেস্ক রিপোর্ট : কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সেবা দেওয়ার নাম করে অবৈধ বাণিজ্য চালাচ্ছে পানি ও স্যানিটেশনের কাজে সম্পৃক্ত একাধিক এনজিও। সরকারি বরাদ্দের দ্বিগুণ অর্থব্যয়ে নলকূপ স্থাপনের কথা বলে অভিযুক্ত সংস্থাগুলো ব্যাপক অনিয়ম করছে। ৮২০ ফুট গভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য আনা অনুদানের টাকায় মাত্র ৩০ থেকে ৬০ ফুট নলকূপ স্থাপন করে প্রতারণা চালাচ্ছে তারা। তাই চাহিদা অনুযায়ী পানি পাচ্ছে না মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। এতে পান, পয়ঃনিস্কাশন ও নিত্যব্যবহার্য পানির সংকটে রীতিমতো হাহাকার ছড়িয়ে পড়ছে ক্যাম্পগুলোতে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থাপিত ৭ হাজার অগভীর নলকূপের মধ্যে ৮৫ শতাংশ এরই মধ্যে অকেজো হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ৬০০ গভীর নলকূপ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে ৯৯টি নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। ৮২০ ফুট গভীরতার নলকূপ স্থাপনে সরকার ১ লাখ ১০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দিচ্ছে। একই গভীরতার নলকূপ স্থাপনে এনজিওগুলো ২ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ দেখাচ্ছে। তাদের উদ্যোগে ৩৭২টি গভীর নলকূপ স্থাপনের কথা থাকলেও হয়েছে মাত্র ১৫৩টি। নলকূপ স্থাপনের ব্যাপারে তারা সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করছে না। মানছে না নিয়ম-নীতিও।

উখিয়া উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী ইকবাল হাসান এ প্রসঙ্গে বলেন, কাগজে-কলমে এনজিও খননকৃত নলকূপের গভীরতা ৮২০ ফুট দেখানো হলেও অধিকাংশই মাত্র ৩০ থেকে ৬০ ফুট গভীরতার। রোহিঙ্গা শিবিরে ওয়াটসনের কাজে নিয়োজিত ৪২টির মধ্যে ১৭টি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারা ভুয়া কাগজ দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে। বিষয়টি অবগত করে কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

উখিয়ার কুতুপালং, জামতলী, বালুখালী, তাজনিমার খোলা, মধুরছড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সরেজমিন পরিদর্শনে পানি সংকটের নিদারুণ চিত্র দেখা গেছে। পানির জন্য ছড়িয়ে পড়েছে হাহাকার। মধুরছড়া ক্যাম্পের হামিদ হোসেন মাঝি অভিযোগ করেন, এনজিওগুলো তাদের সুবিধার্থে বরাদ্দকৃত অর্থ সাশ্রয় করে তা পকেটস্থ করতে পাহাড়ের ঢালুতে, সমতল ও নিচু এলাকায় একের পর এক নলকূপ স্থাপন করে যাচ্ছে। যার ফলে বেশির ভাগ নলকূপ এরই মধ্যে অকেজো হয়ে পড়েছে। বালুখালী ক্যাম্পের মাঝি কবির আহমদ জানান, সিডিউল অনুযায়ী খনন করা হচ্ছে না কোনো নলকূপ। একটু পানি উঠলেই ঠিকাদার দায়িত্ব শেষ করে চলে যাচ্ছেন। এর দু-একদিনের মধ্যেই কূপ থেকে আর পানি মিলছে না। এ ছাড়া ১৩ প্যারামিটার পানির পরীক্ষা-নিরীক্ষার স্থলে এনজিওগুলোর ক্ষেত্রে যে চারটি প্যারামিটার পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দেশনা রয়েছে, তাও মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

নলকূপের পানিতে ক্লোরাইড, আর্সেনিক, ফিকেল কোলিইফর্মের মাত্রাও পরীক্ষা করছেন না অনেকে। নলকূপ স্থাপনের ক্ষেত্রে নির্ধারিত দূরত্বের নিয়মও অনুসরণ করা হচ্ছে না। এতে পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

এদিকে সীমান্তের তুমব্রু শূন্য রেখায় কাঁটাতারের বেড়া সংলগ্ন এলাকায় আশ্রয় নেওয়া প্রায় ৬ হাজার রোহিঙ্গা এখনও মৃত্যু আতঙ্কে পার করছেন একেকটি মুহূর্ত। শূন্য রেখায় খালের ওপারে অবস্থান নেওয়ার সুবাদে এপার-ওপার যাতায়াত করতে পারছে না তারা। এদিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, সীমান্তরক্ষী বিজিপি ও উগ্রপন্থি রাখাইনদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জীবন। দিনের বেলায় তাদের লক্ষ্য করে মিয়ানমার সীমান্তের ওপাশ থেকে মদের বোতল, ইটপাটকেল এবং রাতে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ মিলেছে।

গুনদুম ইউপি চেয়ারম্যান এ কে জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, ২৫ আগস্টের পর আসা রোহিঙ্গারা শূন্য রেখায় আটকা পড়েছে। কয়েকবার চেষ্টা করেও বিজিবির বাধার মুখে তারা বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করতে পারেনি।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নেতা দিল মোহাম্মদ জানান, আটকেপড়া শরণার্থীরা এগোতে পারছে না, পেছাতেও পারছে না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাল পাড়ি দিয়ে এপাশে এসে ত্রাণ সংগ্রহ করতে হচ্ছে তাদের। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল জানান, ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে তুমব্রু কোনারপাড়া শূন্য রেখায় অবস্থান নেওয়া সাড়ে ৬ হাজার রোহিঙ্গাকে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হবে। সমকাল

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়