শিরোনাম
◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৫:৫৩ সকাল
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৫:৫৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিশেষ নজরদারিতে সচিবালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা

ডেস্ক রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার দিনটিকে কেন্দ্র করে সচিবালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো বিশেষ নজরদারিতে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরমধ্যে রয়েছে জাতীয় সংসদ ভবন, সচিবালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্র, ফায়ার সার্ভিস বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দায়ের করা এই মামলার রায়কে ঘিরে কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা বা যেকোনও ধরনের নাশকতা থেকে এই সব স্থাপনাকে মুক্ত রাখতেই সরকারের পক্ষ থেকে এই বিশেষ সতর্ক অবস্থান নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সংশ্লিষ্ট একাধিক উচ্চ-পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ সচিবালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, সচিবালয়ের নিরাপত্তা বিধানে সব সময়ই নজরদারি থাকে। তবে ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে জনমনে কিছুটা আতঙ্ক থাকায় বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে ওইদিন বা তার আগে থেকে সচিবালযসহ সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো বিশেষ নজরদারিতে থাকবে।

জানা গেছে, ইতোমধ্যে সচিবালয়ের চার কোনায় নির্মিত পর্যবেক্ষণ টাওয়ারগুলোকে আধুনিক করা হয়েছে। সব সময় না থাকলেও গত ২/৩ দিন ধরে সেখানে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। একইভাবে সচিবালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে ওইদিন ইস্যু করা পাস কড়াকড়িভাবে চেক করা হবে। সচিবালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তার স্বার্থে চারপাশে পোশাকধারী বাহিনীর সঙ্গে সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। একইভাবে এ সমস্ত স্থাপনায় বসানো সিসি টিভিগুলোর কার্যক্রম কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে। ইতোমধ্যেই অকেজো ক্যামেরাগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কিছু অকেজো ক্যামেরা মেরামত করে সক্রিয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশ না করা পুলিশের একজন পরিদর্শক।  তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সচিবালয় সব সময়ই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে থাকে; যা একটি রুটিন ওয়ার্ক। তবে ৮ তারিখের বিষয়টি মাথায় রেখে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একই কারণে সরকারের প্রশাসনেও থাকবে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থান। রায়কে কেন্দ্র করে কোনও ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি না হয়, তার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ে।’ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আগে থেকেই প্রস্তুত রয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার সদস্য আশরাফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পুলিশের পাশাপাশি আমরাও দায়িত্ব পালন করছি।’

অন্য একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের চারপাশসহ অভ্যন্তরীণভাবে বসানো সিসিটিভিগুলো সচল রয়েছে। এখন সেগুলোর কার্যক্রম কঠোর মনিটরিং হচ্ছে। চারপাশে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

শীতকালীন অধিবেশন চলার কারণে এমনিতেই জাতীয় সংসদ ভবনের চারপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কড়াকড়ি করা হয়েছে। এর ওপর বাড়তি নজরদারি রয়েছে খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে যেন এখানে কোনও ধরনের নাশকতার ঘটনা না ঘটে। তবে জাতীয় সংসদ ভবনের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়টি অতীতের চেয়ে বাড়বে বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস দফতরের একজন কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য, গত ৩০ জানুয়ারি দুর্নীতি মামলার শুনানি শেষে খালেদা জিয়ার ফেরার পথে আটক দুই কর্মীকে প্রিজন ভ্যান থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যান বিএনপিকর্মীরা। এ সময় পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তা রাস্তায় ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে বিষয়টি।

রায়ের পর সহিংসতার প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘রায়ের পর কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানিয়েছেন, রায়ের পর বিএনপিকর্মীরা রাস্তায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে তা ঠেকাতে আওয়ামী লীগ নয়, রাস্তায় নামবে পুলিশ। জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে যা করণীয়, তা পুলিশই করবে।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, ‘জননিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় সব ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে পুলিশ সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে থাকবে।’

জানা গেছে, এরই মধ্যে সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায় থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সব গোয়েন্দা সংস্থাকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সহিংসতার চেষ্টাকারীদের প্রতি কঠোর অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে। পুলিশের বিভিন্ন স্তরে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের বার্তাও দেওয়া হয়েছে।

জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, শুধু রাজধানী নয়, দেশের কোথাও যেন রায়কে কেন্দ্র করে কোনও ধরনের নাশকতা সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে ডিসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে নিরাপত্তা বিধানে কাজ করবে। তিনি জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সরকারি প্রশাসন সচিবালয়সহ ডিসি অফিস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসসহ সরকারি সব অফিসে থাকবে সতর্ক অবস্থান।

জানা গেছে, মামলার রায়কে কেন্দ্র করে যেন কোনও রকমের নাশকতার ঘটনা না ঘটে সে জন্য পুলিশ সুপারদের (এসপি) সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। এছাড়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক করণীয় নিয়েও বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরিবহন, বিদ্যুৎকেন্দ্র, রেলপথে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করেছে পুলিশ সদর দফতর। বাংলাট্রিবিউন থেকে নেয়া।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়