জুয়াইরিয়া ফৌজিয়া: শিশু-কিশোর বা পরিণত বয়স্ক যে কেউ মানসিক রোগে ভুগতে পারেন জীবনের যে কোন সময়। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অধিকাংশ দেশে জনগোষ্ঠীর ৭০ শতাংশ মানুষ নানা কারণে মানসিক সমস্যায় ভ‚গছে এবং দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আমাদের দেশে রয়েছে মাত্র একটি মানসিক চিকিৎসা হাসপাতাল।
বেশিরভাগ সময় মানসিক সমস্যা নিয়ে রোগীরা চিকিৎসক বা কাউন্সিলরের দ্বারস্থ হয় গুরুতর পর্যায়ে। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের ২০০৩ সালে ১৮ বছরের কম বয়সী রোগী ও ২০১১ সালে ১৮ বছরের বেশি বয়সী রোগীদের ওপর গবেষণায় দেখা যায়, ২ কোটিরও বেশি মানসিক রোগে আক্রান্ত জনগোষ্ঠী সময়মতো চিকিৎসা পেলে সুস্থ হতে পারতেন। এছাড়া ১১-১৪ শতাংশ রোগের অন্যতম কারণও মানসিক সমস্যা বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট এই তথ্য স্বীকার করে বলেন, আমাদের দেশে মানসিক রোগের হাসপাতাল মাত্র একটি পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারও মাত্র ৭৭ জন।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ডা. ফারুক আলম বলেন, দেশে যতো মানসিক রোগী রয়েছে তাদের শতকরা ৭৮ জনই চিকিৎসা নিচ্ছেন না। যেখানে ডিজিজ বার্ডেন ১১ শতাংশ সেখানে আমরা বাজেট পাচ্ছি দশমিক ৫ শতাংশেরও কম। এছাড়া ইউনিয়ন হেলথ সেন্টারে মানসিক রোগের কোনো ওষুধ নেই।
এদিকে স্বাস্থ্য নীতিমালায় মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব পেলেও দেশের জেলা হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ১ জন মানসিক চিকিৎসক দেয়া সম্ভব হয়নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক বিভাগের পরিচালক ডা. কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বর্তমানে মাত্র দু’টি ইন্সটিটিউট আছে আর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া তো কোনো সুযোগ নাই। আমরা তো জেলা পর্যন্ত যেতে পারিনি। বিশেষজ্ঞ তো নাই, মাত্র ৭৭ জন্য আছেন। তাই আমাদের এখানে লোকবল বাড়ানো দরকার। আর জেলা পর্যায়ে যদি মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত না করা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে হুমকির মুখে পড়তে পারে পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাই।
বিশ্লেষকরা বলেন, সামাজিক অস্থিরতা ,জীবনের ব্যস্ততা এবং পারিবারিক সম্পর্কের দূরত্বও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আরও বৈরি প্রভাব ফেলবে।
সূত্র : সময় টিভি
আপনার মতামত লিখুন :