নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় টাকা ধার দেয়ার নাম করে এক গৃহবধুকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের ঘটনাটি ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দিতে জোরপূর্বক ৩০০টাকার স্ট্যাম্পে ভুক্তভোগীদের স্বাক্ষর করে নিয়েছেন মাতব্বররা। ধর্ষক সদর উপজেলার কুমাইগাড়ী মহল্লার নূর হোসেন বাবুর ছেলে মাহবুব এবং ভুক্তভোগী চকরামচন্দ্র মহল্লার শাকিল হোসেনের স্ত্রী।
গত শনিবার (২৭ জানুয়ারী) উপজেলার শীবপুর গ্রামের একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, পূর্ব থেকে ভুক্তভোগীর স্বামী শাকিল বিভিন্ন সময় সুদের উপর মাহবুবের কাছ থেকে টাকা নিতো এবং যথারীতি পরিশোধ করত। দুই হাজার টাকা খুবই প্রয়োজন হওয়ায় শাকিল তার স্ত্রীকে শ্বশুর বাড়ি জেলার মান্দা উপজেলার খুদিয়াডাঙ্গায় পাঠায়। কিন্ত ভুক্তভোগী সেখানে টাকা না পেয়ে মাহবুবের কাছে মোবাইল ফোনে জরুরি টাকার বিষয়টি জানিয়ে ধার চাই। টাকা ধার দিতে চেয়ে মাহবুব তাকে শনিবার বিকেলে শহরের বাইপাসে আসতে বলে। মাহবুবসহ আরো দুইজন তাকে সঙ্গে করে শীবপুর গ্রামে একজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিবে বলে জানায়।
মাহবুব লোকটির কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিবে বলে সময় পার করে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলে। এরপর সন্ধ্যায় শীবপুর এলাকায় একজনের বাড়িতে টাকা আছে বলে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক আটকিয়ে রেখে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখিয়ে রাতভর পাশবিক নির্যাতন চালায়। ভুক্তভোগী পরদিন বাড়িতে ফিরে এসে তার স্বামীকে বিষয়টি জানায়। বিষয়টি জানাজানি হলে মাহবুব আপোষের প্রস্তাব দেয়।
এরপর গত বুধবার (৩১ জানুয়ারী) স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ কয়েক জনের মধ্যস্ততায় ৩০০টাকার স্ট্যাম্পে ১০ হাজার টাকায় ভুক্তভোগীদের স্বাক্ষর নিয়ে সমঝোতা করে দেয়া হয়।
ভুক্তভোগীর স্বামী শাকিল হোসেন বলেন, ঘটনার পর থেকে পরিবারেকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেয় মাহবুব। লোক লজ্জার ভয়ে বিষয়টি নিয়ে আর সামনে না এগিয়ে আমার মা সমঝোতা করেছে। তবে তিনি বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বলেন, শাকিল পূর্ব ১০ হাজার টাকা সুদের উপর নিয়েছিল। সুদে আসলে সেটি ১৬ হাজারে গিয়ে দাঁড়ায়। সেটি স্ট্যাম্পে লিখিত করা ছিল। ধর্ষনের ঘটনায় ১০ হাজার টাকা দিয়েছে। স্ট্যাম্পে লিখিত করার সময় পূর্বের স্ট্যাম্পটি ছিড়ে ফেলা হয়। নতুন স্ট্যাম্পে লিখিত করা হয় যে, পূর্বে যা দেনা পাওনা ছিল সম্পন্ন পরিশোধ। তবে সেখানে ধর্ষণের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। যদিও ধর্ষণের বিষয়টি গুরত্বর। সামাজিক দিক বিবেচনা করে সমঝোতা করে দেয়া হয়েছে।
ধর্ষনের অভিযুক্ত মাহবুব বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ন মিথ্যা। শাকিলের কাছ থেকে টাকা পেতাম। না দিতে তারা পায়তারা করছে।
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি-তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, ধর্ষণের বিষয়টি জানা নেই। তবে ধর্ষণের ঘটনায় কোন সালিশ বা সমঝোতা হতে পারেনা। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :